এ দিন বিজেপির সল্টলেকের দফতরে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় শমীক ভট্টাচার্যের৷ দিলীপ ঘোষের দল বদলের জল্পনার মধ্যে যে সাক্ষাৎকে কেন্দ্র করে দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যেও তুমুল কৌতূহল তৈরি হয়েছিল৷ সুকান্ত মজুমদার-শুভেন্দু অধিকারীদের দাপটে দিলীপ ক্রমেই দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন বলে দলের অন্দরেই কান পাতলে শোনা যাচ্ছিল৷ এমন কি, নতুন রাজ্য সভাপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও দিলীপকে দলের রাজ্য নেতৃত্ব আমন্ত্রণ জানায়নি বলেই অভিযোগ৷
advertisement
দলের ভিতরের দলাদলি যে বঙ্গ বিজেপি-র প্রধান সমস্যা, পুরনো কর্মীরাও যে কোণঠাসা, এ দিন দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাতের এই অভিযোগগুলিতে কার্যত সিলমোহর দিয়েছেন নতুন রাজ্য সভাপতি৷ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই সরকার পড়ে যাচ্ছে, তৃণমূল হারছে৷ মানুষ বাঁচতে চায়, মানুষ পরিত্রাণ চায়৷ নতুন পুরনো বলে দলে কিছু নেই, যাঁরা দুর্দিনে পার্টির জন্য কাজ করেছেন, পতাকা ধরে রেখেছেন, পার্টিকে প্রাসঙ্গিক রেখেছেন, তাঁরা সবাই বিজেপি৷ আমাদের এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই৷ আমরা একটা প্রতীকেরই অনুগামী৷ আমরা সবাই বিজেপি-র কর্মী৷ ক্ষণিকের জন্য ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে, তার মানে এই নয় তিনি দূরে চলে গিয়েছেন৷ ১৫ দিনের মধ্যে সবাই সঙ্ঘবদ্ধ বিজেপিকে দেখতে পারবেন৷ বিজেপি ঐক্যবদ্ধ ছিল, আছে, থাকবে৷’
দলের পুরনো কর্মীদের মাঠে নামাতে শমীক আরও বলেন, ‘কাউকে অন্য দলের এজেন্ট বলে দাগিয়ে দেবেন না৷ যাঁরা তৃণমূলের মধ্যে থেকেও অমৃত রস পান করেননি, ঘাম রক্ত দিয়ে তৃণমূলের জন্য দেওয়াল লিখেছেন, যাঁরা তৃণমূলের টিকিট কিনতে পারেননি, তাঁদেরও সঙ্গে নিন৷ আগে পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচান৷ এটা হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শেষ নির্বাচন, জাতীয়তাবাদী, প্রগতিশীল মুসলিমদের জন্য শেষ নির্বাচন৷ তৃণমূল ফিরে এলে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ডিজাইন জম্মু কাশ্মীর বিধানসভার মতো হয়ে যাবে৷’
নতুন রাজ্য সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর দিলীপের গলাতেও পুরনো মেজাজ শোনা গিয়েছে৷ ২০২১ সালের আগে তাঁর নেতৃত্বে যে বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গে দেখা গিয়েছিল, দলের সেই মেজাজ ফেরানোর ডাক দিয়েছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি৷ শমীকের নেতৃত্বে বিজেপির সর্বস্তরের কর্মী, সমর্থকরা মিলে ২০২৬ সালে নবান্ন দখল করবে বলেও হুঙ্কার দিয়েছেন দিলীপ৷ একই সঙ্গে তাঁর দল বদলের জল্পনাতেও কার্যত ইতি টেনেছেন প্রাক্তন সাংসদ৷