রাজীবের পাশাপাশি সব্যসাচীও এভাবে সরব হওয়ায় স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে গেল, শুধু কি দলের রণনীতির সমালোচনা, নাকি তারই আড়ালে পুরনো দলকে বার্তা দিলেন মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই নেতা?
বিধাননগর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সুজিত বসুর কাছে পরাজিত হন সব্যসাচী দত্ত৷ এর পর এ দিনই নির্বাচনে দলের রণকৌশল নিয়ে মুখ খুলেছেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র৷ সব্যসাচী বলেন, 'আমার ভাল লাগতে পারে বা না লাগতে পারে৷ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন প্রতিষ্ঠিত মুখ৷ দশ বছর ধরে তিনি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্য সরকার পরিচালনা করেছেন৷ সেই দশ বছরের উল্টো দিকে একটা তো কোনও মুখ দরকার ছিল৷ সেরকম কোনও মুখ আমরা তুলে ধরতে পারিনি৷ '
advertisement
এখানেই শেষ নয়, সব্যসাচীর মতে কেন তাদের ক্ষমতায় আনতে হবে তা মানুষকে বোঝাতেই ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি৷ বরং বিজেপি নেতৃত্ব ধরেই নিয়েছিলেন যে তৃণমূলের উপরে রাগ করেই মানুষ তাদের ক্ষমতায় নিয়ে আসবে৷ সব্যসাচীর কথায়, 'শুধু নেতিবাচক ভোটে নির্বাচন জেতা যায় না৷ ইতিবাচক উদ্দেশ্য নিয়ে এগোতে হয়৷ আপনাকে খারাপ বলে গেলেই তো লোকে আমাকে গ্রহণ করবে না, আমার ভাল দিকটাও তো মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে৷'
এ দিন অনেকটা একই অভিযোগ করে ট্যুইট করেছেন আর এক বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ তবে নির্বাচনী রণকৌশল নয়, বরং ভোটের পরে বিজেপি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যে কৌশল নিয়েছে, তারই সমালোচনা শোনা গিয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রীর গলায়৷ বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসা সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর ক্রমাগত সমালোচনা এবং কথায় কথায় ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের ভয় দেখানো যে রাজ্যবাসী ভাল ভাবে নেবে না, নাম না করেই বিজেপি নেতাদের সেই বার্তা দিয়েছেন রাজীব৷ কয়েক দিন আগে ফেসবুক পোস্টে একই বার্তা দিয়েছিলেন মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায়৷ ফলে রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন, দলের বিরোধিতায় বিজেপি-র এই বেসুরো নেতাদের সুর যেভাবে মিলে যাচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে ফের দলবদলের চেনা ছবি রাজ্য রাজনীতিতে ফিরলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না৷ যেভাবে প্রতিদিন বেসুরো নেতাদের সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষত তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতাদের অনেকেই যেখানে অন্য সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন, তাতে বিজেপি নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাজ বাড়ছে৷
