এদিন বেহালায় স্বাধীনতা দিবসের প্রাক উদযাপনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১৭ অগাস্ট সব ব্লকে। সব মিউনিসিপ্যালিটিতে বেলা দু’টো থেকে বিকেল ৪টে অবধি বাম-রামের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল। ১৮ তারিখ সব ব্লকে ধরনা হবে সকাল ১০’টা থেকে বিকেল ছ’টা অবধি। ১৯ তারিখ রাখি বন্ধন উৎসব পালন করব। ২০ তারিখ থেকে ফের রাস্তায় নামা হবে। দোষীর শাস্তি চাইবে। দোষীর ফাঁসির জন্য প্রতিবাদ কর্মসূচি চলবে।’’
advertisement
মমতা জানান, আগামী ১৬ অগাস্ট মৌলালির মোড়ে দুপুর ৩ টে নাগাদ জমায়েত৷ ওই দিন মিছিল করবেন তিনি৷ মিছিল যাবে মৌলালি মোড় থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত৷ আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে মিছিল করবেন মমতা৷ ওইদিন বিকেল ৪ টে নাগাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিছিলে যোগ দেবেন৷
এদিন আর জি কর কাণ্ডের দোষীর ফাঁসির সাজার পক্ষে সওয়াল করার পাশাপাশি বিজেপি ও বামেদের বিরুদ্ধে ‘মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি’ করার অভিযোগও তোলেন মমতা৷
তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতি করার জন্য যা খুশি করুন। কিন্তু মৃত্যুকে নিয়ে রাজনীতি করবেন না। এই সামাজিক ব্যধি যাতে না হয়। ইউপি, এমপি, মণিপুর কী হয়েছে? হাথরসে আমরা টিম পাঠিয়েছিলাম। বিজেপির সরকার ছিল তারা কী করেছিল? কংগ্রেসকেও বলব তারা কী করেছিল? আর বামেদের বলব অনিতা দেওয়ান মনে আছে?’’
মমতার কটাক্ষ, ‘‘ট্যুইটার আর সোশ্যাল মিডিয়ায় এরা এখন পোস্ট করছে। কে মেরেছিল সিপিএম বিজন সেতুতে। নন্দীগ্রামে গুলি চালিয়ে মেরেছিল। সিঙ্গুরে কী হয়েছিল, কৃষক কন্যার সাথে? কোচবিহারে বর্ণালি খুনে কী হয়েছিল? আমি আন্দোলন করা মানুষ। আমি জানি কোনটা আসল আন্দোলন? কোনটা নকল আন্দোলন?’’
আরও পড়ুন: নবান্নে জরুরি বৈঠকে ডিজি রাজীব কুমার! ‘মেয়েদের রাত দখল’ ঘিরে অতি সতর্ক রাজ্য পুলিশ
এরপরেই মমতা বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা প্রচার একাংশ করছে। আমাকে যত খুশি অসম্মান করুন৷ বাংলা মাকে অসম্মান করবেন না। ভাইদের দায়িত্ব নিতে হবে বোনদের রক্ষা করার। আমি নারীশক্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা সামাজিক সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছি। সিপিএমের রাগ হয়েছে। এখানে লঙ্কাকাণ্ড করা ওত সহজ নয়। চরিত্রহনন করছে কারা? ছাত্রছাত্রীরা নয়। রাজনৈতিক দলেরা করছে। জঘন্য রাজনৈতিক দলের কাছে মাথা নত করব না।’’
তৃণমূলনেত্রীর অনুযোগ, ‘‘আপনারা আদালতে চলে গেলেন। আপনাদের একজনই তো আছে। সিপিএমের রাজ্যসভার এমপি, তিনি তো নিরপেক্ষ নন। এখানে নিরপেক্ষ মতামত জরুরি। আর কাকে কাকে গ্রেফতার করতে হবে, তা গদ্দার বাবু বলে দিচ্ছেন। আপনারা কি চান না আসল খুনিরা গ্রেফতার হোক। সোশ্যাল মিডিয়ায় যার তার নামে বলে দিচ্ছেন। আমরাও নজর রাখছি। বাংলার বদনাম করতে এই রাজনীতি করছেন। যাতে বাংলা শান্তিতে না থাকে।’’
তিনি বলেন, ‘‘রাম-বাম-শ্যামের খেলা চলছে এখানে। পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা এদের একটা জোট আছে। বিজেপি এদের ফান্ডিং করে আমি জোর গলায় বলে যাচ্ছি। যৌথ মঞ্চ মানে সবাই আছে। সবার রঙ এক। আমরাও নজর রাখছি। একতরফা কুৎসা করছো।’’
সবশেষে মমতার বার্তা, ‘‘আমি ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে আছি। কাদের ট্রান্সফার করা হয়েছিল, প্রিন্সিপাল, বিভাগীয় প্রধান, পুলিশ, এমএসভিপিকে বদলি করেছিলাম। আর এখন কেস তো সিবিআইয়ের হাতে। দোষীদের আড়াল করা যাবে না। ফাঁসি যেন হয়।’’