বিরোধী দল বিজেপির হাতে রয়েছে ৭০ জন বিধায়ক। রবিবার সন্ধ্যার মধ্যেই দলের সব বিধায়ককে নিউটাউনের হোটেলে পৌঁছে যেতে বলা হয়েছিল। রবিবার রাত এগারোটা নাগাদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেই হোটেলে পৌঁছে সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কিছুক্ষণের মধ্যেই হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে হোটেলে শিবির করে থাকার এমন বন্দোবস্ত এ রাজ্যে বিরল বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
advertisement
আরও পড়ুন : রাষ্ট্রপতি ভোট আজ! দিল্লি নয়, কলকাতায় বিধানসভাতেই ভোট দেবেন তৃণমূলের সাংসদরা
ইতিমধ্যেই নিউটাউনের সেই হোটেল থেকে বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে বিধানসভার উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে বাস। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন বিজেপি বিধায়কদের কার্যত 'হোটেলবন্দী' করে রাখার বন্দোবস্ত? বিজেপির ভোট যাতে এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর সমর্থনেই আসে তাই নিশ্চিত করতেই কি এই পদক্ষেপ? ভোট-অঙ্ক বজায় রাখতেই কি নিউটাউনের হোটেলে বিজেপির বিধায়করা? উঠছে এমন একাধিক প্রশ্নও।
রাজ্যের রাজনীতির ইতিহাসে কার্যত এ এক নজিরবিহীন ঘটনা। অতীতে কোনও ভোটেই বিধায়কদের এক জায়গায় রাখার বন্দোবস্ত হয়নি কোনও শিবিরের তরফেই। দ্রৌপদী মুর্মুর সমর্থনে ভোট 'নিশ্চিত' করতেই কি এই বন্দোবস্ত? শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কেন এম এল এ হোস্টেল ছেড়ে হোটেলে থাকার ব্যবস্থা বিধায়কদের? উঠছে সেই প্রশ্নও।
আরও পড়ুন : নিউটাউনের বেসরকারি হোটেলে বিজেপির বিধায়করা, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা!
প্রসঙ্গত, হর্স ট্রেডিং বা 'ঘোড়া কেনাবেচা' পদ্ধতিতে ভোট বদলের রাজনীতি দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একাধিক রাজ্যে দেখা গিয়েছে। রিসর্ট রাজনীতির প্রসঙ্গ বারবার উঠে এসেছে চর্চায়। তবে পশ্চিমবঙ্গে এধরনের ঘটনা একেবারে নতুন। যদিও বিজেপি শিবির বলছে, 'কোনও সংশয়ের জায়গা থেকে নয়, একসাথে বিধায়করা যাতে ভোট দিতে যেতে পারেন সেই সুবিধার কারণেই হোটেলে রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে'। কিন্তু বিধায়কদের জন্য বিধানসভার অদূরে এমএলএ হোস্টেল থাকা সত্ত্বেও বিধানসভা থেকে দূরে নিউ টাউনের একটি বিলাসবহুল বেসরকারি হোটেলকে কেন বেছে নেওয়া হলো? বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষের সাফাই, 'বিধায়ক এবং তাঁদের নিরাপত্তা রক্ষীদের একসাথে ওখানে থাকার সুবন্দোবস্ত নেই। তাই হোটেলের বন্দোবস্ত'।
অন্যদিকে আজকের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলের পোলিং এজেন্ট বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার বললেন, 'আমাদের বিধায়কদের একটিও ভোট অন্য কোনও শিবিরের দিকে যাবে না। শেষ মুহূর্তে বিধায়কদের প্রশিক্ষণের কারণেই হোটেলের আয়োজন করা হয়েছিল'। সব মিলিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবার বাংলাতেও 'হোটেল সংস্কৃতি'র আগমন নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথায়, 'রাজনীতি এখন কর্পোরেট কালচারে পরিণত হয়েছে'।
ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী