শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়ে অভিন্ন কর্মসূচি সংক্রান্ত রিপোর্টেই বলা হয়েছে,মাত্র ৪৪ শতাংশ শিশু পড়ুয়ার কাছে এই দুই বড়ি পৌছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে মাত্র ৪৫ শতাংশ শিশু এর সুবিধা পয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শিক্ষকদের ভূমিকায় বিরক্ত নবান্ন। সরকারি উদ্যোগে পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদের রক্তাল্পতার মোকাবিলায় সপ্তাহে দু’দিন আয়রন সিরাপ খাওয়ানোর কথা। স্কুল পড়ুয়াদের সপ্তাহে এক দিন মিড ডে মিল খাওয়ানোর পর সপ্তাহে একদিন করে ফোলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট দেওয়ার কথা। ১৪ টি জেলায় এই ট্যাবলেট বিলির হার সবচেয়ে কম। এই জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা, পুরুলিয়া, মালদহ, পূর্ব বধমান।
advertisement
শিশুদের পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিয়মিত নজরদারির জন্য ৮২৮ টি ভ্রাম্যমাণ হেল্থ টিম গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেই ডাক্তার নেই। প্রতিটি স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে খুদে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য দেখার জন্য ভ্রাম্যমাণ হেল্থ টিমে দু’জন আয়ুষ ডাক্তার ও এক জন করে ফার্মাসিস্ট ও নার্স থাকার কথা। মোবাইল হেল্থ টিমে ৪৩২ টি চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। ৬১২ টিতে ফার্মাসিস্ট নেই। শিশুদের স্বাস্থ্য নজরদারি হবে কী করে?
নবান্ন অবশ্য দ্রুত এই শূন্য পদ পূরণের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। এর পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। লক্ষ্য, স্কুলে পড়ুয়াদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনা গড়ে তোলা। বিশেষত, ছাত্রীরা বয়ঃসন্ধিকালে ঋতুস্রাব নিয়ে যাতে কোনও সমস্যায় না পড়ে, সে ব্যাপারে মানসিক প্রতিবন্ধকতা দূর করা। এ জন্য প্রতিটি আপার সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের একজন শিক্ষককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা। যাঁরা সপ্তাহে একদিন প্রতিটি ক্লাসে পড়ুয়াদের এ বিষয়ে শিক্ষা দেবেন। এ ছাড়াও পড়ুয়ার নিয়মমতো ফোলিক অ্যাসিড টাবলেট পাচ্ছে কিনা, পেলে খাচ্ছে কিনা নজর রাখবেন। সেইসঙ্গে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য নিয়ে সার্বিক খোঁজখবর রাখবেন। যাতে অসুস্থতার লক্ষণ নজরে আসা মাত্রই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। সরকারি রিপোর্টেই বলছে গত তিন বছরে মাত্র ৬৬ শতাংশ শিক্ষক এই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন : বাড়ছে ডেঙ্গি! পড়ুয়াদের সুরক্ষিত রাখতে কলকাতার সব স্কুলকে বিশেষ নির্দেশিকা পুরসভার
প্রশাসনিকভাবে শিশু স্বাস্থ্য সর্ম্পকে নজরদারি করতে ব্লক থেকে জেলা স্তরে কমিটি গঠন করার কথা। কোনও স্কুলের শিশু পড়ুয়া ভ্যাকসিন বা টিকা না পেয়ে থাকলে তা চিহ্নিত করে বৈঠকে জানাবে। তার ব্যবস্থা করবে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে তা বৈঠকে নজরে আনা হবে। পাঁচটি জেলা- হাওড়া, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় এই কমিটিগুলি একদিন বৈঠকই করেনি। প্রতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এই কমিটি বৈঠক হওয়ার কথা।