নোটবন্দির বিরুদ্ধে আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছে নালিশও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবারই, নোটবাতিলে দেশের অর্থনীতি থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই সূত্র ধরেই ফের রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদি বিরোধিতায় জোট বাঁধার আহ্বান জানালেন সব রাজনৈতিক দলগুলিকেও। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দেশ, জাতি রাজ্যকে বাঁচান। রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বড় ভূমিকা আছে। ‘দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো ভাঙা হচ্ছে ৷ গায়ের জোরে দেশকে ধ্বংস করছে কেন্দ্র ৷ দেশজুড়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে কেন্দ্র ৷ প্রতিদিন কিছু না কিছু কাঠামো ভাঙা হচ্ছে ৷ বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না করেই সিদ্ধান্ত ৷ রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পক্ষে ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মোদি সরকার ৷ রাষ্ট্রপতিকে বলব দেশটাকে বাঁচান ৷ গরিবদের দুর্দশা নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেছেন ৷ রাষ্ট্রপতিজি যথার্থই বলেছেন ৷ আমরাই রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছিলাম ৷’
advertisement
একধাপ এগিয়ে মমতার দাবি, দেশে জাতীয় সরকার তৈরি হোক। মোদি শিবিরে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে, সরকারের শীর্ষনেতা হিসেবে ভাসিয়ে দিলেন লালকৃষ্ণ আদবানি, রাজনাথ সিং বা অরুণ জেটলির নামও। বলেন, দেশে জাতীয় সরকার আসুক ৷ তাতে আদবানিজি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন ৷ যদি রাজনাথ সিং, অরুণ জেটলি হন, তাতেও আমাদের আপত্তি নেই ৷ আমরা রাষ্ট্রপতি শাসন চাইছি না ৷ চাইছি একটা জাতীয় সরকার ৷ ওদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে ওরাই নেতৃত্ব দিক ৷ আমাদের কোনও অসুবিধা নেই ৷ কিন্তু মোদির গা জোয়ারি আমরা মানব না ৷ তাতে নরেন্দ্র মোদি আমার গলা কাটতে পারে ৷ তাতে আমার কিছু যায় আসে না ৷ আমরা আন্দোলন করব, মানুষের পাশে থাকবই ৷’ একই সঙ্গে মোদিকে মমতার কটাক্ষ, ‘মহামতি কালীদাস বুদ্ধিহরণ বাবু ৷ যে ডালে বসে আছেন সেটাই কাটছেন ৷ সরকারি মেশিনারির অপব্যবহার করছেন ৷’
বাংলাদেশ বা ব্রিটেনে একসময় জাতীয় সরকার তৈরি হয়। এদেশে কি তা সম্ভব?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতীয় সংবিধানে জাতীয় সরকার গঠনের কোনও রাস্তা খোলা নেই। তা সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন দাবি কেন? নোটবন্দির জেরে দেশ চরম অর্থনৈতিক সংকটে। তাই জাতীয় সরকার গঠনের দাবি তুলে মোদির ওপর পালটা চাপ তৈরি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে, রাষ্ট্রপতি শাসন দাবির রাস্তাও খোলা রেখে দিলেন।