গত শনিবার মেসির সফরকে ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। নিয়ন্ত্রণহীন ভিড়ের তাণ্ডবে ভেঙে যায় একাধিক চেয়ার, ছিঁড়ে ফেলা হয় গোলপোস্ট। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। ঘটনার পর ভাঙচুরের অভিযোগে পুলিশ দু’দফায় মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছিল।
এ বার সেই ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্যা আরও বাড়ল। যুবভারতীতে ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলার ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ নতুন করে আরও কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে চিহ্নিত করে ধারাবাহিক ভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কই সঙ্গে শুক্রবার লিওনেল মেসির অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তর বাড়িতেও হানা দেয় পুলিশ। ইভেন্ট আয়োজন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্ব সংক্রান্ত একাধিক নথি খতিয়ে দেখতেই এই তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, প্রবেশ ব্যবস্থার ঘাটতি এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা—সব দিকই এখন তদন্তের আওতায়।
advertisement
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইভেন্ট আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত শতদ্র দত্তর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে একাধিক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ওই বিপুল অঙ্কের টাকা কোথা থেকে এসেছে, কী ভাবে ওই অর্থ তোলা হয়েছে এবং কোন কোন খাতে ব্যবহার করা হয়েছে—এই সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থা।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, এই আর্থিক লেনদেনের মধ্যে বিনিয়ম থাকতে পারে। সেই কারণেই পুরো আর্থিক নথি, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট ও সংশ্লিষ্ট লেনদেনের উৎস যাচাই করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ইভেন্ট আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
ইডি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বর্তমানে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলছে। এই পর্যায়ের তদন্তে পর্যাপ্ত তথ্য ও প্রমাণ মিললে পরবর্তী ধাপে ইসিআইআর (ECIR) দায়ের করার পরিকল্পনাও রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তদন্ত আরও বিস্তৃত আকার নিতে পারে এবং আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি আনুষ্ঠানিক মামলায় রূপ নেবে।
মেসি ইভেন্টকে ঘিরে ইতিমধ্যেই তৈরি হওয়া বিতর্কের আবহে ইডির এই পদক্ষেপ নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়াল বলে মনে করছেন প্রশাসনিক মহল।
