মধ্যরাতেই বাড়ল দূষণের মাত্রা
গতকাল রাত ১২টা ৩০ থেকে ১টার মধ্যে কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকার একাধিক দূষণ মনিটরিং স্টেশনে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।
নিচে কিছু এলাকার পরিমাপ দেওয়া হল —
উৎসবের রাত আতসবাজি, সেলফিতে মজে…ট্রেনের হর্ন শুনতে পেল না কেউ! পিষে গেল ৬১ প্রাণ!
- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর — AQI ৭৫
- অভিদীপ্তা — ৮৫
- বেহালা বিবেকানন্দ কলেজ — ১০৪
- মহেশতলা পুরসভা — ১১৩
- বালিগঞ্জ বিড়লা মন্দির — ১০১
- লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ — ৯৪
- সল্টলেক দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ — ১২১
- সেক্টর V — ৮৬
- লেকটাউন — ৯৩
- সরোজিনী নাইডু কলেজ ফর উইমেন — ১৬৪
- নিউ ব্যারাকপুর বি.এল. সাহা রোড — ১৩৯
- ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল — ১৩৪
- বেথুন কলেজ — ৮২
- এনকেডিএ (নিউ টাউন) — ২৩৮
- ব্যারাকপুর চিড়িয়ামোড় — ১২৩
- কামারহাটি পুরসভা — ১১৫
- বেলুড় মঠ — ১২৮
- ভদ্রেশ্বর পুরসভা — ১৪৫
- বারুইপুর পুরসভা — ১০২
- কোন্নগর–উত্তরপাড়া — ৯০
- ঘুসুড়ি — ৮৫
advertisement
এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নিউ টাউনে, যেখানে AQI পৌঁছেছে ২৩৮-এ — অর্থাৎ ‘Very Poor’ পর্যায়ে।
পরিবেশবিদদের মতে, এই মাত্রা দীর্ঘ সময় বজায় থাকলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, গলায় জ্বালা ও চোখে অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেক বেশি।
কলকাতার দূষণের কারণ
পরিবেশ দফতরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, দীপাবলির পর আতসবাজির ধোঁয়া, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, ধুলোবালি ও কম বেগের হাওয়া মিলিয়ে বায়ুমণ্ডলে দূষক কণাগুলি জমে আছে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাতাসের গতি না বাড়লে শহরের AQI আরও উপরে উঠতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, PM2.5 কণা সবচেয়ে বিপজ্জনক — এটি সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাসযন্ত্রের কোষে ক্ষতি ঘটায়।
দিল্লিতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ
অন্যদিকে, দেশের রাজধানীতে ইতিমধ্যেই দূষণ বিপর্যয়কর স্তরে পৌঁছেছে। দিল্লির AQI ছুঁয়েছে ১,১২১—যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ।
শহরের ৩৮টি মনিটরিং স্টেশনের মধ্যে ৩৬টি ‘রেড জোনে’, আর ৪টি ‘সিভিয়ার’ বা অত্যন্ত খারাপ অবস্থায়। দীপাবলির রাত থেকেই দেদার আতসবাজি পোড়ানো, পরাল পোড়ানো ও যানবাহনের ধোঁয়া মিলিয়ে রাজধানী ঢেকে গেছে ধোঁয়াশায়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অবস্থায় দিল্লি-কলকাতা উভয় শহরেই বাইরে যাতায়াত সীমিত রাখা উচিত। শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির রোগীদের N95 মাস্ক ব্যবহার এবং ঘরের জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
উত্তর ভারতের সতর্ক সংকেত
পরিবেশবিদদের ভাষায়, দিল্লি ও কলকাতার পরিস্থিতি এ বছর স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে — আলো উৎসবের পর শহরগুলো ধোঁয়ার বন্দি হয়ে পড়ছে।
যদি এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, আগামী শীতের শুরুতেই দূষণ আরও মারাত্মক আকার নেবে।