নবপত্রিকা পুজোর মধ্য দিয়ে ফের সেই প্রকৃতি পূজাতেই ফেরেন মানুষ। কী সেই নবপত্রিকা? নবপত্রিকা আসলে নয়টি গাছ। যাকে রূপ দেওয়া হচ্ছে একটি নারীর। নারী কেন? কারণ নারী আর মৃত্তিকাই সেই উৎপাদিকা শক্তি। সৃষ্টির প্রতীক। আর যে গাছগুলোকে বেছে নেওয়া হয়েছে তার নিয়মিত ব্যবহার ছিল কৃষিভিত্তিক সমাজে। পূজা মন্ত্রেই সেই সপত্র,সমুল নটি গাছের বর্ণনা আছে।
advertisement
রম্ভা কচ্চী হরিদ্রাচ জয়ন্তী বিল্ব দাড়িমৌ
অশোক মানকশ্চৈব ধান্যঞ্চ নবপত্রিকা
নবপত্রিকা আসলে কী?
কলা, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, দাড়িম্ব অর্থাৎ ডালিম
অশোক, মানকচু, ও ধান এই নয়টি গাছের চারা দিয়ে তৈরি হয় নবপত্রিকা
লক্ষ্য করলে দেখা যাবে প্রতিটি ফসলেরই খাদ্যগুণ ও ভেষজগুণ রয়েছে। এবং সবগুলোই নিত্য ব্যবহারের। সবগাছগুলোকে শ্বেত অপরাজিতার লতা দিয়ে বাঁধা হয়। রূপ দেওয়া হয় এক নারীমূর্তির। পঞ্চগব্য, পাঁচ সুগন্ধী ও সাত সমুদ্রের জলে হয় স্নান। পরানো হয় শাড়ি। শুরু হয় উপাসনা। বর্ষা শেষে শরতের শুরুতে এই উৎসব আসলে সেই কৃষি উৎসব। সৃজনের প্রতীক। অনেক পরে অবশ্য এই নয়টি গাছে দেবীত্ব আরোপ করা হয়েছে। নইলে মানুষ ওই গাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখবে না। সে কারণেই
কলা গাছ(-এর অধিষ্ঠাত্রী হন) ব্রহ্মাণী
কচু গাছের অধিষ্ঠাত্রী হন কালিকা
হরিদ্রা হয়ে যায় উমা
জয়ন্তী হয়ে যায় কার্তিকী
বিল্ব বা বেল গাছের প্রতীক হয় শিবা
দাড়িম্ব বা ডালিম গাছের প্রতীক রক্তদন্তিকা
অশোক গাছের জন্য শোকরহিতা
মানকচু গাছের জন্য চামুন্ডা, আর
ধান গাছের জন্য মহালক্ষ্মী
আরও পড়ুন - বেড়া টপকে ভদ্রমহিলা ঢুকে গেলেন সিংহের কাছে, দেখে নিন ভাইরাল ভিডিও
গণেশের পাশে থাকার জন্য অনেকেই কলাবউ বা নবপত্রিকাকে গণেশের বউ বলে ভুল করেন। সমাজতত্ববিদরা বলে দুর্গাপুজো আসলে প্রতীকে কৃষিসমাজের আরাধনা সে কারণেই জনগণেশের পাশেই নবপত্রিকা রাখা হয়। কারণ তারাই মাঠে নামেন, ফসল ফলান, এবং রক্ষা করেন সৃষ্টি।
আরও দেখুন

