কলকাতা পুরসভার মেয়র চিঠি দিয়ে বাইুপাসের দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কেএমডিএ-র চেয়ারম্যানকে। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ছাড়পত্র পেয়ে এবার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস পুরসভার হাতে। শুধু রক্ষণাবেক্ষণ নয়, নতুনভাবে রাস্তা তৈরি করা থেকে শুরু করা থেকে নিকাশি ব্যবস্থা, সবকিছুরই দেখভাল করবে কলকাতা পুরসভা৷
বর্ষা এলেই বাইপাসে জল জমা। খারাপ রাস্তার কারণে ঘটে দুর্ঘটনা। এ সবই প্রতি বছরের রুটিন ঘটনা কলকাতার ব্যস্ততম ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসে। এবার সেই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে বলে দাবি কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের।
advertisement
আরও পড়ুন: সিঙ্গুরে টাটাদের ফেলে যাওয়া জমিতেই শিল্পের আবেদন, দিল্লিতে বড় দাবি রাজ্যের মন্ত্রীর
আসলে সমস্যাটা ছিল অন্য জায়গায়। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কার্যত ফেল কেএমডিএ। আর তাই কলকাতা পুরসভা কেএমডি- এর কাছ থেকে ইএম বাইপাসের দায়িত্ব নিতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল। কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম চিঠি পাঠিয়েছিলেন কেএমডি-এর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমকে। দুই সংস্থার চাপানউতোরে বিষয়টি ফাইল বন্দি ছিল। অবশেষে হস্তক্ষেপ পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের। শেষ পর্যন্ত পাল্লা ভারী হলো কলকাতার মেয়রের। ই এম বাইপাসের রক্ষণাবেক্ষণ তো বটেই, নতুন করে যে সমস্ত জায়গায় বাইপাস সম্প্রসারণ করতে হবে কিম্বা সংলগ্ন সৌন্দর্যায়ন ও নিকাশি ব্যবস্থারও দায়িত্ব নেবে কলকাতা পৌরসভা।
ই এম বাইপাসের আরও সৌন্দযায়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করেছিল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। রাস্তাটি কী অবস্থায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে মেরামতের আগে ই এম বাইপাসের 'কন্ডিশন অ্যাসেসমেন্ট'- এর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এই প্রক্রিয়ায় কাজ সম্পন্ন করতে অনেকটাই সময় লেগে যাচ্ছিল। ছোট কাজ করার ক্ষেত্রেও টেন্ডার ডেকে করতে গিয়ে পুরো বিষয়টাই দীর্ঘমেয়াদী হয়ে যাচ্ছিল। এই সমস্যা সমাধানেই এবার ই এম বাইপাসের দায়িত্ব নিল কলকাতা পুরসভা।
মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "ই এম বাইপাসে মেট্রোর কাজের জন্য বিভিন্ন জায়গা ভেঙে যাচ্ছিল। কেএমডিএ-কে ছোট কাজও টেন্ডার করে করতে হয়। তাই সময় অপচয় হচ্ছিল। সেখানে পুরসভা নিজেদের মতো করে কাজ করতে পারবে। তাই ই এম বাইপাস রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। চৌরঙ্গী যেমন কলকাতা পুরসভার তেমন এবার ই এম বাইপাসও কলকাতা পুরসভার।"অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে ইএম বাইপাস এবার কলকাতা পুরসভার দায়িত্বে চলে এল।
আরও পড়ুন: মমতার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম শুভেন্দুর! 'কেমন আছিস', জানতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রীও
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ‘কন্ডিশন অ্যাসেসমেন্ট’ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ই এম বাইপাসকে তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম ভাগ, উল্টোডাঙা থেকে মেট্রোপলিটন মোড় পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার। দ্বিতীয়, পাঁচ কিলোমিটার, মেট্রোপলিটন মোড় থেকে রুবি মোড়। এবং শেষ পাঁচ কিলোমিটারের অংশে রুবি মোড় থেকে ঢালাই ব্রিজ পর্যন্ত। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, প্রথম পাঁচ কিলোমিটার রাস্তায় তেমন কোনও পরিবর্তনের দরকার নেই। ওই অংশের উপরের স্তরে আর একটি বিটুমিনাসের স্তর দিলে আগামী ১০ বছর রাস্তা ভাল ভাবে চলে যাবে। এই অংশটি ভিআইপি করিডরের মধ্যে পড়ছে বলে কাজ করতেও সুবিধা হবে।
অন্যদিকে, মেট্রোপলিটন মোড় ছাড়িয়ে 'মা' উড়ালপুল থেকে উল্টোডাঙার দিকে নামার পরের অংশে কিছু সমস্যা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কেএমডিএ-র আধিকারিকরা। সেখানে জল জমে। পাশাপাশি, উড়ালপুল থেকে নামার পরেই রাস্তাটি ঢেউ খেলানো। সেই অংশ সমান করতে হবে। রাস্তার অবস্থা মোটের উপরে একই রকম।
মেট্রোপলিটন মোড় থেকে ঢালাই ব্রিজের মধ্যে বেশ কয়েকটি মেট্রো স্টেশন তৈরি হয়েছে। যার ফলে রাস্তার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই ওই অংশে বড় মাপের মেরামতির কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এবার এই সকল কাজই করবে কলকাতা পুরসভা। সেক্ষেত্রে চটজলদি কাজ শেষ হবে বলেই আশাবাদী মেয়র।