কলকাতা: তৃণমূলে কি আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন দলের অন্যতম সিনিয়র সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়? লোকসভার মুখ্যসচেতকের পদ থেকে কল্যাণের ইস্তফাপত্র একবারে গ্রহণ করে সম্ভবত শ্রীরামপুরের সাংসদকে কড়া বার্তাই দিয়ে রাখলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়৷ কল্যাণের মানভঞ্জনের পথে না হেঁটে কল্যাণের পদত্যাগপত্র গ্রহণ তাই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷
advertisement
এরপরই বুধবার মেজাজ বদলে দলের সহযোগী নেতৃত্বের জন্য বার্তা দিলেন কল্যাণ। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণের ইস্তফার পর লোকসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ পদে বসেছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। এদিন সেই প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, ”নতুন যিনি চিফ হুইপ হয়েছেন, তাঁর জন্য জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল। আমার থেকে বেটার পারফরম্যান্স তারা করবেন। আশা করব তারা আমাকে অযোগ্য প্রমাণ করে দেবেন। পরবর্তী যারা আছেন, তারা যদি ভাল করে করেন, তাহলে তো ভালই।”
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর উপর হামলার পরই চমকে দিলেন রেখা পাত্র! কী করছেন জানেন? তোলপাড় সন্দেশখালি
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক এই ঘটনার আগে পার্লামেন্টে অনেক সক্রিয় ছিলেন কল্যাণ। হঠাৎ করেই কিছুটা নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন তিনি। মিস করছেন কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ”জীবনে যা কিছু হয়, ভাল‘র জন্য হয়। ভগবান যা করেন, ভাল‘র জন্য করেন।”
দলের চেয়ারপার্সন হিসেবে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে নিয়েছেন, তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই ঘোষণার পরই এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন শ্রীরামপুরের সাংসদ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে সেই পোস্টে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ৷’ ওই পোস্টে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নিজের দল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসকেও ট্যাগ করেছেন কল্যাণ৷
প্রসঙ্গত, গত সোমবার তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে দলের সাংসদদের ভার্চুয়াল বৈঠকের পর লোকসভায় দলের মুখ্য সচেতকের পদ থেকে ইস্তফা দেন কল্যাণ৷ তিনি দাবি করেন, দলের লোকসভার সাংসদদের মধ্যে সমন্বয় হচ্ছে না বলে বৈঠকে অভিযোগ করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ফলে তাঁর ভূমিকার দিকেই আঙুল তোলা হচ্ছে বলে দাবি করে মুখ্য সচেতকের পদ ছাড়েন কল্যাণ৷ শুধু তাই নয়, মহুয়া মৈত্র তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করলেও দল কোনও ব্যবস্থা না নেওয়াতেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন কল্যাণ৷
যদিও ইস্তফার পর পরই কল্যাণ জানিয়েছিলেন, লোকসভায় দলের নতুন দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে৷ অভিষেক ৭ অগাস্ট দিল্লিতে এসে তাঁর ক্ষোভের কথা শুনবেন বলেও দাবি করেছিলেন কল্যাণ৷ তার পরেও কল্যাণের মানভঞ্জনের পথে না হেঁটে যেভাবে তাঁর পদত্যাগপত্র তৃণমূলনেত্রী গ্রহণ করে নিলেন, তাতে দলের অন্দরে কল্যাণের উপরেই চাপ বাড়ল৷ তাই কি কিছুটা সুর নরম করেছেন কল্যাণ? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরে।