মেছুয়া এলাকার অন্যতম পুরনো হোটেল ছিল হোটেল ঋতুরাজ৷ যে বহুতলে এই হোটেলটি ছিল, তার একতলায় ছিল একটি গুদাম৷ দোতলায় হোটেলের রেস্তোরাঁ৷ তিন থেকে ছ তলা পর্যন্ত ছিল হোটেলের আবাসিক এবং কর্মীদের থাকার ঘর৷
আরও পড়ুন: মেছুয়ার হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে মৃত বেড়ে ১৪, জীবন্ত দগ্ধ ১৩ জন! শহরে ফিরল স্টিফেন কোর্ট, আমরির স্মৃতি
advertisement
এ দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ আগুন লাগার পর হোটেলের উপরের তলার ঘরগুলিতে থাকা অনেকেই ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেন৷ সেই সময়ই হোটেলের পাইপ বেয়ে উপর থেকে নামতে গিয়ে চার তলা থেকে নীচে পড়ে যান মনোজ পাসওয়ান নামে এক হোটেলকর্মী৷ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়৷ আরও এক কর্মীর হাত পা ভাঙে৷
হোটেলে থাকা কিছু মানুষ ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারলেও সেই সুযোগটুকুও পাননি অনেকে৷ রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর নীচ থেকে এবং ছাদ দিয়ে হোটেলের ভিতরে ঢোকেন দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা৷ তিন থেকে ছ তলা পর্যন্ত হোটেলের ঘরে ঢুকে ঢুকে শুরু হয় তল্লাশি৷ তখনই উদ্ধার হয় একের পর এক দেহ৷ আগুন এত দ্রুত ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে হোটেলের ভিতরে যাঁরা আটকে পড়েন, তাঁরা ছাদে যাওয়ার বা নীচে নেমে আসার সুযোগটুকুও পাননি৷ কার্যত জীবন্ত দগ্ধ হয়েই মৃত্যু হয় ওই ১৩ জনের৷
বরাতজোরে হোটেলের ভিতর থেকে সাত জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে৷ হোটেলের ছাদে যাঁরা আটকে ছিলেন, তাঁদেরকেও হাইড্রলিক ল্যাডারের সাহায্যে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়৷ হোটেলের ভিতরে আর কোনও দেহ আটকে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাতেও ফের তল্লাশি চালানো হয়৷
২০১০ সালে কলকাতার স্টিফন কোর্ট অগ্নিকাণ্ডে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল৷ ২০১১ সালে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালের আগুন প্রাণ কেড়েছিল প্রায় ৯০ জনের৷ তার পর অগ্নিকাণ্ডের জেরে এত বড় বিপর্যয় এই প্রথম ঘটল কলকাতায়৷ কীভাবে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখছে দমকল এবং পুলিশ৷ মৃতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে৷