কোভিডের চোখ রাঙানির মাঝেই দক্ষিণ কলকাতার ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে ভাল ফল করেছিল রীতি সাহা। ছোট থেকেই মেধাবী রিতির ইচ্ছা ডাক্তার হবে। ছোট মেয়ের স্বপ্নপূরণে সুদূর অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করেছিল বাবা-মা। চলছিল ডাক্তারি ভর্তির প্রস্তুতিও।
সব ঠিকঠাকই চলছিল। ২০২৩ সালের ১৪ জুলাই রাত ১২টার আশেপাশে হঠাৎ ফোন আসে সুদূর বিশাখাপত্তনম থেকে। হস্টেল থেকে জানানো হয় চারতলা ছাদ থেকে পড়ে গেছে রীতি। ওই একটা ফোনেই নেতাজি নগরের ফ্ল্যাটে এনে দিয়েছিল অন্ধকার।
advertisement
পরদিনই সেখানে পৌঁছে যান রিতির বাবা, মা-দিদি। তখনও হাসপাতালের মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ১৭ বছরের কিশোরী। তারপরেই মৃত্যু। আর এই মৃত্যু থেকেই মেয়ের ওপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে শুরু লড়াই। আইনি লড়াই। খুব একটা মসৃণ ছিল না এই পথ। কলকাতা থেকে বিশাখাপত্তনম। বিশাখাপত্তনম থেকে দিল্লি। অন্ধ্র পুলিশের হাতে হেনস্থা, মানসিক চাপ আর একদিকে মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে অদম্য জেদ সাহা দম্পতির । অন্ধ্র হাইকোর্ট থেকে সুবিচার না মেলায় এবার সুপ্রিম কোর্ট। অবশেষে দীর্ঘ সময়ের আইনি লড়াই। গত শুক্রবার এই লড়াইয়ের প্রথম পর্ব শেষ করেছে এই দম্পতি।
দেশের শীর্ষ আদালত ১৭ বছরের রীতির মৃত্যুর তদন্তভার তুলে দিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। একইসঙ্গে এই ধরনের ঘটনা রুখতে তৈরি করেছে গাইড লাইন। যাতে সাময়িক ভাবে আশ্বস্ত হয়েছে সাহা পরিবার। কিন্তু লড়াই এখনও বাকি বলেই দাবি করছেন রীতির বাবা সুখদেব সাহা ও মা নন্দিনী। সিবিআইয়ের উপর ভরসা রাখছেন তাঁরা। দম্পতির মনে তৈরি হওয়া মেয়ের মৃত্যুর কারণও তাঁরা জানতে পারবেন- এটাই আশা।