ঘটনাস্থলের পাশেই মেট্রোর কাজ। মেট্রো টানেল জুড়ে চলছে কংক্রিটের কাজ। একদিকে যেমন দুর্গা পিতুরি লেনের বহু বাসিন্দা ঘরছাড়া, তেমনি অন্যদিকে আতঙ্কে প্রহর গুনছেন দুর্গা পিতুরি লেনের অন্যদিকের অংশের মানুষজন! কী করবেন? সামনে কী বিপদ অপেক্ষা করছে? দিশেহারা অসহায় বাসিন্দারা! কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না সঞ্জয় দন্দি এবং তাঁর পরিবার। বাড়িতে রয়েছে শিশু, ২ জন বয়স্ক মানুষ। তাঁরা অসু্স্থ, সদ্য একজনের অস্ত্রোপচার হয়েছে! তাঁদেরও ঘর ছাড়তে হলে কী হবে? কীভাবে সমস্ত কিছু সামাল দেওয়া যাবে? করুণ মুখে এখন এই একটাই প্রশ্ন!
advertisement
২০১৯-এর পর মেট্রো কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছিল, আর সমস্যা হবে না! নিয়মিত নজরদারি, পর্যবেক্ষণে রাখা হবে গোটা অঞ্চল! কিন্তু বুধবার থেকে ফের ফাটল-আতঙ্ক! একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরা পড়ার পরেই মেট্রোর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশ বাহিনী ও কলকাতা পুরসভার কর্মীরা মাইকে প্রচার করে ফাটল ধরা বাড়ির বাসিন্দাদের বাইরে বেরিয়ে আসতে অনুরোধ করেন। পরে এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু শুধুই এই অঞ্চলের বাসিন্দা নন, এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁদের দিনের সিংহভাগ সময়টাই এখানে কাটে। এই অঞ্চলের সঙ্গেই জড়িয়ে তাঁদের রুজিরুটি! কারও বা ব্যবসা, কারও বা দোকান রয়েছে! আজ তাঁরাও বাধ্য দোকান বন্ধ করতে! দোকানের ঝাঁপ ফেলা, সামনে ডাঁই করে রাখা জিনিসপত্র! হিদারাম ব্যানার্জি লেন-এ সোনার দোকান ছিল গণেশ চন্দ্র শীলের! আপাতত দোকান ঘরে তালা ঝুলছে! তাঁর ভাষায়, '' আমার দোকানে সোনার গয়না তৈরি হত। ফাটলের জন্য দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে! এখন কোথায় যাব জানি না! কোনও ঠিকানা নেই! গতরাত থেকে এই পরিস্থিতি। ২০১৯ সালে একই দুর্ভোগ হয়েছিল! আবার সেই দিন ফিরে এল!''
আরও পড়ুন:বৌবাজারে আচমকা পাঁচ পাঁচটি বাড়িতে ফাটল! মেট্রোরেলের কাজের জের? নাকি অন্য 'ভিলেন'?
গতকাল রাতের পর হোটেলেই আশ্রয় হয়েছে দুর্গা পিতুরি লেনের ১৬/১ নম্বর বাড়ির সদস্যদের! এদিন সকালে দেখা গেল হৃদয়বিদারক ছবি... গতকাল এক কাপড়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন সবাই, আজ ছেলে এসেছে মায়ের জন্য বাড়ি থেকে দুটো শাড়ি নিয়ে যেতে! তাঁর কথায়, '' গতরাতে বাড়ির যে অবস্থা দেখেছিলাম, এখন আরও বিপজ্জনক! ২০১৯-এর পর আশা ছিল, আবার নিজের বাড়িতে ফিরে যাব! কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি দেখছি, মনে হয় না আর সপরিবারে ফিরতে পারব।''