নির্মীয়মাণ মেট্রো টানেল ধসিয়ে দিয়েছে তাঁদের ভবিষ্যৎ। মুহূর্তেই ধুলোয় মিছিয়ে দিয়েছে জীবনটাকে। খাস কলকাতার বুকেই আজ যেন উদ্বাস্তু বউবাজারের স্যাকরাপাড়া, দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দারা। রবিবার বিনা নোটিসেই, এক-কাপড়ে ঘর ছাড়তে হয়েছিল অনেককে। হাইকোর্টের নির্দেশে, বুধবার তাঁরা দশ মিনিট সময় পেয়েছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বের করে আনতে। সেইমতো এদিন সকাল থেকে গোয়েঙ্কা কলেজে, পুলিশ ক্যাম্পে ভিড় জমে যায় টোকেন নেওয়ার জন্য। ভিড় ঠেকে টোকেন হাতে ফের অপেক্ষা দুর্গা পিতুরি মোড়ে। প্রতি পরিবারের মাত্র একজন করে সদস্য, বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পেয়েছেন। তাঁদের নিরাপত্তা ও ভিডিওগ্রাফির জন্য সঙ্গে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী।
advertisement
জীবনের আশা-ভরসা সব বাড়িতে। যতটুকু পারি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আনার চেষ্টা করব ৷ কিন্তু হাতে যে মাত্র দশটা মিনিট। এত অল্প সময়ে কীভাবে নেবেন সব প্রয়োজনীয় জিনিস? সোনা-টাকা-নথি, কোনটা ছেড়েই বা কোনটা নেবেন? ভাবতে ভাবতেই ব্যাগ, বাক্স, থলে নিয়ে ঘরে ঢুকলেন বাসিন্দারা। কিন্তু তারপরেও যে বিপত্তি। দেওয়ালে চিড় ধরা সাধের বাড়িটা আজ বড্ড অচেনা। বিদ্যুৎও নেই। অগত্যা হাতের কাছে যা পেলেন, তা নিয়েই ছুটলেন সকলে।
তিলে তিলে তৈরি ভিটে আজ চোখের সামনেই ধসে পড়ছে। নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না অনেক মূল্যবান জিনিসের। পাতাল রেলের পাকচক্রে আজ সত্যিই যে উদ্বাস্তু ওঁরা। দশ মিনিটে কী সারা জীবনের জমা পুঁজি সংগ্রহ করা যায় ৷