বিশ্বকর্মা যোজনার সুফল যাতে বাংলার শিল্পী ও কারিগররাও পান সেই লক্ষ্যেই দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল রাজ্য বিজেপি। সোমবার বিভিন্ন সাংগঠনিক নেতৃত্ব ছাড়াও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও এ দিনের বৈঠক তথা প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন। বিজেপি সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে নির্দিষ্ট উপভোক্তাদের কলকাতা ও জেলায় জেলায় তালিকা তৈরি করা-সহ সবাই যাতে বিশ্বকর্মা যোজনার আওতায় বেশি করে আসতে পারে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
advertisement
জানা গিয়েছে, পিএম বিশ্বকর্মা প্রকল্পের সম্পূর্ণ ব্যয় ভার বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার, এ জন্য ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে সূচনা হওয়া এই প্রকল্পের আওতায় বিশ্বকর্মারা কমন সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে বিনামূল্যে বায়োমেট্রিক ভিত্তিক পিএম বিশ্বকর্মা পোর্টালে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন বাংলার শিল্পী কারিগররাও। পিএম বিশ্বকর্মা শংসাপত্র এবং পরিচিতিপত্রের মাধ্যমে বিশ্বকর্মাদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক ও পরবর্তী স্তরের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। সরঞ্জাম কেনার জন্য তাঁরা ১৫ হাজার টাকা করে পাবেন। কোনও রকম সমান্তরাল জামিন ছাড়াই ৫ শতাংশ ভর্তুকি সুদের হারে প্রথম কিস্তিতে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুবিধা তাঁদের দেওয়া হবে।
ডিজিটাল লেনদেনের জন্য উৎসাহ এবং বিপণন সংক্রান্ত সহায়তাও তাঁরা পাবেন বলে জানা গিয়েছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল প্রথাগত শিল্পের ক্ষেত্রে গুরু-শিষ্য পরম্পরা এবং পরিবারভিত্তিক দক্ষতার অনুশীলনকে আরও শক্তিশালী করে তোলা। শিল্পী ও কারিগরদের তৈরি পণ্যের গুণমানের উন্নয়ন, পণ্য ও পরিষেবার ব্যাপ্তি বাড়ানো এবং দেশীয় ও বিশ্বজনীন মূল্য শৃঙ্খলের সঙ্গে সেগুলির সংযুক্তিকরণ এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য। প্রকল্পটি দেশজুড়ে গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে শিল্পী এবং কারিগরদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। ১৮টি প্রথাগত শিল্পকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এগুলি হল, কাঠের কাজের শিল্পী, নৌকা প্রস্তুতকারক,অস্ত্র প্রস্তুতকারক,কামার, হাতুড়ি ও ছোটোখাটো সরঞ্জাম নির্মাতা, তালা নির্মাতা, স্বর্ণকার, মৃৎশিল্পী ভাস্কর, প্রস্তরশিল্পী, জুতোর কারিগর, রাজমিস্ত্রী, ঝুড়ি,মাদুর,ঝাঁটা নির্মাতা পুতুল ও খেলনা নির্মাতা (প্রথাগত), কেশশিল্পী, মালাকার, রজক, দর্জি এবং মাছ ধরার জাল নির্মাতা।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিল্পী ও কারিগরদের মন পেতেই কেন্দ্রীয় সরকার নয়া যোজনার আত্মপ্রকাশ করেছে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। এ বার গোটা দেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের উপভোক্তাদের কাছেও যাতে প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বকর্মা যোজনা পৌঁছে যায় সে ব্যাপারে উঠে পড়ে লাগল বঙ্গ বিজেপি। চব্বিশের ভোটে বাংলার শিল্পী ও কারিগরদের মন পেতেই প্রকল্প রূপায়ণে নানান পরিকল্পনা নিয়েছে পদ্ম শিবির বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।