উৎসব মিটতেই শুক্রবার, একাদশীতে কলকাতায় হাজির হলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ভূপেন্দ্র যাদব এবং বিপ্লব দেব। তাঁদের সঙ্গে বিধাননগরে বিজেপির দফতরে বৈঠক করলেন এ রাজ্যের সর্বোচ্চ নেতা শমীক ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার। ছিলেন এ রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, সহকারী পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়, রাজ্য বিজেপির সম্পাদক সংগঠন অমিতাভ চক্রবর্তী, রাজ্য বিজেপি যুগ্ম সম্পাদক সংগঠনকে সতীশ ধন্দ।
advertisement
বিজেপি সূত্রে খবর, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের ‘লাভক্ষতি’কে মাপকাঠি গণ্য করে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি না, এই বৈঠকে তা-ই স্থির করতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।নতুন সভাপতির সাথের কিছু সময় আলাদা বৈঠক করেন ভুপেন্দ্র যাদব। পরে বিজেপির সল্টলেক অফিসে নয় বৈঠকে বসেন। রাজ্য সভাপতি, বিরোধী দলনেতা, সাধারণ সম্পাদক সংগঠন-সহ কেন্দ্রীয় নেতারা। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং বুথের সংগঠন নিয়ে আলোচনা হয়।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর শাসক দলের কতটা প্রভাব এই নিয়েও কথা হয়েছে। পুরনো-নতুন লড়াই বন্ধ করতে বলেছেন ভুপেন্দ্র যাদব। যারা বসে আছে , তাদের সক্রিয় করতে বলেছেন তিনি। পাশাপাশি বুথ কমিটি কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাকি বুথে কবে কমিটি হবে তাও জানতে চান বলে সূত্রের খবর। অক্টোবরের শেষ থেকেই লাগাতার কর্মসূচি। জেলায় জেলায় বড় কর্মসূচি। ঘোষণা হবে শীঘ্রই। বিজেপির সূত্রের দাবি, সে কারণেই বৈঠকে ছিলেন সুনীল। ভূপেন্দ্র-বিপ্লব জুটি নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য এলেও সামগ্রিক অভিভাবকত্ব তাঁর হাতেই থাকছে। তাই বনসলকে বাদ দিয়ে কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাবে না বলেই মনে করছে বিজেপির একটি সূত্র। সে কথা মাথায় রেখে বনসল নির্বাচন সংক্রান্ত প্রথম বৈঠকেই উপস্থিত থাকলেন।
বিজেপির একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া যাতে ঝুলে না থাকে, কোন পথে এগোতে হবে, সে বিষয়ে নির্বাচন প্রভারীরা যাতে প্রথম দিন থেকেই স্পষ্ট ধারণা পেয়ে যেতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বনসল নিজেও বৈঠকে ছিলেন। বিজেপি সূত্রের খবর, দায়িত্ব পাওয়ার পরে শুক্রবার প্রথম রাজ্যে এসে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য, পরিসংখ্যান জানতে চেয়েছেন ভূপেন্দ্র এবং বিপ্লব।
রাজ্যের কোন এলাকায় বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি কেমন রয়েছে, কোথায় পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব, গত কয়েকটি নির্বাচনে কোন এলাকায় কেমন ফল, যে এলাকায় বিজেপি হেরেছে, সেখানে কোনগুলিতে একটু চেষ্টা করলেই অন্য রকম ফল সম্ভব— পরিসংখ্যান-সহ সে সব তথ্য নির্বাচন প্রভারীরা সংগ্রহ করেছেন বলে খবর। বনসলের নেতৃত্বে এ রাজ্যে বিজেপির সংগঠন ঢেলে সাজার কাজ চলেছে। আপাতত সেই কাজ শুধুমাত্র নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে করা যায় কি না, তা নিয়েও আলেচনা হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের দাবি। সংগঠন ঢেলে সাজতে গিয়ে অনেক সময়ে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষোভ-অভিমান তৈরি হয়। এ রাজ্যের বিজেপিতে সেই প্রবণতা আরও বেশি। তাই আপাতত সাংগঠনিক রদবদল বা দায়দায়িত্ব বণ্টন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্বাচনী লাভক্ষতি সবচেয়ে বড় মাপকাঠি হিসাবে বিবেচিত হবে কি না, সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত এই বৈঠকেই নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করছে বিজেপির একটি সূত্র।