কলকাতা: গোয়ায় পা রাখার পর থেকেই BJP-কে একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গোয়ায় জনসাধারণের উদ্দেশ্যে তৃণমূল নেত্রী বার্তা দিয়েছেন, ''আমি এখানে মুখ্যমন্ত্রী আসিনি। কিন্তু দিল্লির দাদাগিরি এখানে চলতে পারে না।'' রাজনৈতিক মহল বলছে, রাজ্য ছেড়ে জাতীয় স্তরে সাম্রাজ্য বিস্তার করতে চাইছে তৃণমূল, আর সেই কারণেই তৃণমূল অধিনায়িকার সৈকতরাজ্য-সফর। মুখে তৃণমূলের এই অভিযানকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে না চাইলেও এবার এ রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমণ শানাতে অন্য পথ নিল বঙ্গ বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন গোয়ায় ঝড় তুলেছেন, তখন শুক্রবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়া হ্যাশট্যাগ অস্ত্রে শান দিতে শুরু কর রাজ্য BJP।
advertisement
টিকা বণ্টনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ভিত্তিহীন' অভিযোগ, স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুর্নীতি, কাটমানি সহ একাধিক ইস্যু নিয়ে টুইটারে সোচ্চার হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। হ্যাশট্যাগের নাম দেওয়া হয়েছে 'মমতার মিথ্যাচার'। সকাল ১১ টা থেকে এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন বিজেপির সাংসদ, বিধায়ক থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা সকলেই।
BJP-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ বিষয়ে নিউজ 18 বাংলা ডিজিটাল-কে এ প্রসঙ্গে বলেন, ''রাজ্যের মানুষকে প্রলোভিত করে ভাঁওতাবাজি মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মূলত এই নিয়েই আমরা নিরন্তর বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের প্রচার করছেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক করছেন, কিন্তু সেই স্কিমেই রাজ্যের কাছে বকেয়া ৬৪ কোটি টাকা আদায়ে একটি হাসপাতাল আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।'' সুকান্তর সংযোজন, ''গোয়াতে বাংলা থেকে যাওয়া অনেক পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়াতে গিয়ে বাংলার কর্মসংস্থান নিয়ে প্রচার করছেন, তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঁওতাবাজি করে কতদিন চালাবেন। আর এইসব মিথ্যাচার নিয়েই আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচার চালাব।''
গোয়াতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পা রাখার আগেই অবশ্য গোয়া বিজেপি রাজ্য সভাপতি সদানন্দ তানাবাড়ে বলে দিয়েছিলেন, ''মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) গোয়া এসে অফিস করে বাংলা চালালেও গোয়ার ভোটে প্রভাব পড়বে না। ভোটের পর গোয়ায় তৃণমূলের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। ভাড়াটে লোক দিয়ে গোয়ায় ভোট হয় না।'' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হোর্ডিং ছেঁড়া নিয়ে সদানন্দের বক্তব্য ছিল, ''শুরুটা ওরা করেছিল, মোদির মাথায় মমতার পা রেখে টুইট করে। বিজেপি কর্মীরা হোডিং ছেড়েনি। গোয়ার সাধারণ মানুষ করেছেন এমনটা। দিদি গোয়ায় আসুন, দেখুন, থাকুন। আর গোয়া থেকে কিছুটা গণতন্ত্র শিখে গিয়ে বাংলায় প্রয়োগ করুন।''
বস্তুত গোয়ায় পা রেখেই একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিকে দলে এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাফিসা আলির পর এদিন মমতার হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন লিয়েন্ডার পেজও। এই পরিস্থিতিতে বঙ্গ বিজেপি-র পক্ষ থেকে এবার পাল্টা 'মমতার মিথ্যাচার' হ্যাশট্যাগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাল্টা প্রচার শুরু হল।
