#কলকাতা: "মা" শব্দকে আরও উচ্চ মাত্রায় পৌঁছে দিলেন তিনি। বাংলায় "মা" ডাক শোনার জন্য তাঁর সাতসাগর পাড়ি দেওয়া। তিনি শহরে এলেন, নাড়ির টান অনুভব করলেন, আবার ফিরেও গেলেন আপন দেশে। ফ্রান্সে। মা-এর পরিচয় উদ্ধার করে। মামা'র আদর খেয়ে। হ্যাঁ, অ্যাঞ্জেলা'র কথা বলছি।
নিউজ ১৮ বাংলার পাঠকদের কাছে নতুন নয় অ্যাঞ্জেলা। আমরাই প্রথম সামনে এনেছিলাম অ্যাঞ্জেলা'র কল্পনার জগৎ। যদিও কল্পনাকে যখন বাস্তবের মাটিতে টেনে নামালেন তিনি তখন একটু দেরি হয়ে গেছে। আাসলে, ৭বছর আগেই ইহজগৎ ত্যাগ করেছেন অ্যাঞ্জেলা'র মা লিলি সিংহ।
advertisement
৪২ বছর আগে কুমারী মা লিলি সিংহ অ্যাঞ্জেলা'র জন্ম দেন। কলকাতার মাদার হাউস হয় অ্যাঞ্জেলা'র অস্থায়ী ঠিকানা। ৭ মাস বয়সে ফরাসী দম্পতি দত্তক নেয় ফুটফুটে অ্যাঞ্জেলাকে। মানিকতলার বেসরকারী জে এন রায় হাসপাতাল নামটা প্রথম ফরাসি বাবা মায়ের মুখে শুনে অ্যাঞ্জেলা। সোশ্যাল সাইটে হাসপাতালের নাম জেনে যোগাযোগ শুরু। এরপর সটান কলকাতায় চলে আসা। কলকাতা সব লিলি সিংহ-এর খোঁজ শুরু করে দেওয়া। অবশেষে মাদার হাউস এর সৌজন্যে, অ্যাঞ্জেলা জানতে পারেন তাঁর মায়ের বাড়ি বেকবাগানে। সাত বছর আগে প্রয়াত হয়েছেন তিনি।
মামা স্যামুয়েল সিংহ। বিশেষ শর্তে মামার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে অ্যাঞ্জেলা। ৪২ বছর পর রক্তের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া। তাই বা কম কি! মানিকতলা বেসরকারি হাসপাতালে কর্ণধার সজল ঘোষের কথায়," আমাদের হাসপাতালে অ্যাঞ্জেলা'র জন্ম। তাঁর ৪২তম জন্মদিন পালন হাসপাতালেই। তাঁর রক্তের সম্পর্ক খুঁজে দিতে পেরে আমরাও অভিভূত।" সপ্তাহ দুয়েক শহরে কাটিয়ে ৯ ডিসেম্বর ফ্রান্সের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন অ্যাঞ্জেলা। এই কদিনে অনেকটা বাঙালি বাঙালি অনুভব করেছেন নিজেকে। জমিয়ে খেয়েছেন বাঙালি খানা। বাঙালি মাছের ঝোল। কলকাতার রসগোল্লা। ফিরে যাওয়ার আগে জানিয়ে গেলেন, " মা'-এর কোনো বিকল্প হয় না। কখনো কোনদিন কাউকে যেন অনাথ না হতে হয়।"
কুমারী মা লিলি সিংহ পরে বিয়ে করেন। তাঁর একটি সন্তান রয়েছে। কর্মসূত্রে তিনি বাইরে থাকেন। মায়ের ডাক হয়তো শোনা হয়নি অ্যাঞ্জেলার। তবে সব "মা" দের তিনি উচ্চতার শিখরে পৌঁছে দিয়ে গেলেন। অজান্তে অনাথ হওয়া আটকাতে বার্তাও দিয়ে গেলেন। ভাল থেকো অ্যাঞ্জেলা। তোমার পেশাদার ফটোগ্রাফি'র হাত ফ্রেমবন্দি করে রাখুক শত শত জীবনযুদ্ধ জয়ের ছবি।