তবে শুধুই উপস্থিত হবেন, তা কিন্তু নয়। ঠাকুরের সঙ্গে সশরীরে হাজির থাকবেন পুরোহিত, ঢাকি, ফল থেকে নৈবিদ্য সাজানোর জন্য পুজো কমিটির সদস্যদের তরফে দু-একজন। যে পাড়া থেকে ডাক পড়বে, সেই পাড়াতেই হই হই করে হবে বোধন, বরণ, কলাবউ স্নান, পুজো, অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যারতি, সন্ধিপুজো কিংবা বলি। বিসর্জনে নাচার জন্যও ডেকে নিতে পারেন ইচ্ছে হলে। শর্ত একটাই। সবেতেই মানতে হবে সামাজিক দূরত্ববিধি। মেনে চলতে হবে অতিমারী আইন।
advertisement
অনেক হল, এবার ব্যাপারটা খোলসা করা যাক। যোধপুর পার্ক শারদীয়া উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমন্ত রায় বলেন, "আমাদের পুজোর কনসেপ্ট এবারে একেবারে আলাদা। প্রতিবছর শহর থেকে শহরতলির মানুষ আমাদের মণ্ডপে ঠাকুর দেখতে আসেন। এবারে অতিমারীর জেরে অনেকেই ঘর থেকে বেরোতে ভয় পাবেন। তা ছাড়া প্রায় সব বাড়িতেই বাচ্চা এবং বয়স্করা রয়েছেন। সেক্ষেত্রে সংক্রামিত হওয়ার ভয় থেকেই যাবে। তাই আমরাই এবারে ঠাকুর নিয়ে পৌঁছে যাব তাদের বাড়ির দোরগোড়ায়।"
সুমন্ত বলেন, "আমাদের 'দুর্গা গাড়ি' নিয়ে আমরা যে সব পাড়ায় পুজো হয় না, সেই সব পাড়ায় পৌঁছনোর চেষ্টা করব। তবে অবশ্যই ট্র্যাফিক এবং অতিমারী আইন মেনে। পাশাপাশি আমাদের ফোন করে ডাকলে আমরা শহরের যে কোনও প্রান্তে পৌঁছে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকব। তাই ষষ্ঠীতে বোধণ পর্ব যদি হয় বরানগরে হয়, কলাবউ স্নানের জন্য হাওড়াতেও পৌঁছে যেতেই পারি, যদি কেউ সেই রীতি দেখার জন্য আমাদের আহবান জানায়। অষ্টমীর অঞ্জলি হতেই পারে ফুলবাগান কিংবা ইএম বাইপাস সংলগ্নও কোনও একটি পাড়ায়। আবার বিসর্জন হতে পারে পাটুলি কিংবা পোদ্দারনগরে।" তবে আমাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে, কোথাও যেন কোনওভাবে মানুষ সামাজিক দূরত্ব বিধি ভুলে না যান। ফলে কোথাও ভিড় জমে যাবে তা আমরা চাই না। মানুষ যাতে অতিমারীর কড়াল গ্রাস থেকে মুক্ত থাকেন, সেই জন্য আমরা মানুষের দরজায় পৌঁছে যাব।
পুজো কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, এই অভিনব ভাবনা যিনি রুপায়ণের দায়িত্বে থাকবেন তিনি শিল্পী বাপাই সেন। তাঁর পরিকল্পনাতেই সেজে উঠবে 'Durga On Wheels' অর্থাৎ যোধপুরপার্ক শারদীয়া উৎসব কমিটির 'দুর্গা গাড়ি'। অপেক্ষা আর মাত্র কয়েকদিনের। তাই কে বলতে পারে, ষষ্ঠীর সকালে হয়তো আপনার ঘুম ভাঙতেই পারে 'দুর্গা গাড়ি'র ঢাকের আওয়াজেই।