শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জট কাটাতে অবশেষে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচারস এডুকেশন অর্থাৎ NCTE -এর নিয়ম মেনে নিল সরকার ৷ এই লক্ষ্যে বিধানসভায় বৃহস্পতিবার একটি সংশোধনী বিল পাশ করা হয় ৷ এর ফলে প্রায় ১.৫ লক্ষ শিক্ষক নিয়োগ বাধা মুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷
NCTE -এর নিয়ম অনুযায়ী একই পদে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার বিভেদে বেতনে কোনও ফারাক রাখা যাবে না ৷ অর্থাৎ উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেও একই পদে কর্মরত শিক্ষকরা সমান বেতন পাবেন ৷ এতদিন এ রাজ্যে শিক্ষকেরা উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে বাড়তি বেতন পেতেন ৷ অর্থাৎ অনার্স গ্র্যাজুয়েট পাশ যোগ্যতার একজন শিক্ষকের তুলনায় একই পদে কর্মরত স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত একজন শিক্ষক কিঞ্চিৎ বাড়তি বেতন পেতেন ৷ এবার থেকে নয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত শিক্ষকেরা এই আইন অনুযায়ী সমান স্যালারি পাবেন ৷
advertisement
প্রথমে NCTE -এর এই নিয়মের বিরোধিতা করেছিল রাজ্য সরকার কিন্তু অবশেষে শিক্ষক নিয়োগে জট কাটাতে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচারস এডুকেশন গাইডলাইন মেনে অর্ডিন্যান্স আনে শিক্ষা দফতর ৷
বিধানসভায় পাশ নয়া বিল, ১.৫ লক্ষ শিক্ষক নিয়োগে বাধা কাটল
রাজ্যে বহুদিন ধরে বিভিন্ন মামলার জটে আটকে রয়েছে শিক্ষক নিয়োগ ৷ শিক্ষকের অভাবে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম ৷ মামলার জটে প্রাথমিক থেকে উচ্চ প্রাথমিক, নবম-দশম থেকে একাদশ-দ্বাদশ বিভাগে শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ক্রমশ বিলম্বিত হচ্ছে ৷ এর ফলে রাজ্যে ৭২ থেকে ৭৫ হাজার শিক্ষকের শূন্য পদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে ৷ অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগ না হলে শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়বে ৷ এই আশঙ্কায় সরকার আগেই NCTE-র নিয়ম মেনে শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য অর্ডিন্যান্স আনে ৷ বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতেই সেই সংশোধনী বিল আকারে পেশ করা হয় ৷ মামলার জট থেকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে মুক্ত করতে এই পদক্ষেপ জরুরি বলে বিধানসভায় জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷
যদিও বিরোধীরা এই সংশোধনের তীব্র বিরোধীতা করে বলে, এর ফলে যোগ্য শিক্ষক হারাবে রাজ্য সরকার ৷ উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন না পেলে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা শিক্ষকপদে আগ্রহী হবেন না ৷ ফলে শিক্ষাব্যবস্থার গুণমান ক্ষুণ্ন হবে কিন্তু বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও পরে ভোটাভুটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাশ হয়ে যায় এই বিল ৷ তবে নয়া নিযুক্ত শিক্ষকরাই এই সংশোধনীর সুবিধা পাবেন ৷ ইতিমধ্যেই যাঁরা কর্মরত তাঁদের উপর এই নিয়ম লাগু হবে না ৷