প্রথম পরিকল্পনায় রয়েছেন দীনেশ কার্তিক। এমনিতে অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান এবং কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম আগ্রাসী মানসিকতায় বিশ্বাসী। দীনেশ কার্তিক অভিজ্ঞতায় ত্রিপাঠীর থেকে অনেক এগিয়ে। ইনিংস তৈরি করতে পারেন। প্রথমদিকে সেট হতে একটু সময় নেন ঠিকই, কিন্তু তারপর বড় শট খেলতে পারেন দক্ষতার সঙ্গে। বৃহস্পতিবার দীর্ঘক্ষন অনুশীলন চলল কেকেআরের। অধিনায়ক, কোচ, কার্তিক, রাসেল এবং প্যাট কামিন্সদের মত সিনিয়র ক্রিকেটারদের নিজেদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা করতে দেখা গেল।
advertisement
রবিবার বিরাট কোহলির আরসিবির বিরুদ্ধে খেলতে হবে নাইট রাইডার্সকে। দুটো ম্যাচ জিতে এই মুহূর্তে আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে রয়েছে বিরাট বাহিনীর। বল হাতে রাসেল সফল হলেও ব্যাট হাতে ক্যারিবিয়ান তারকা একেবারেই ফ্লপ। নেটে ব্যাটিংয়ের ওপর আলাদা জোর দিতে দেখা গেল রাসেলকে। দলে তাঁর প্রয়োজনীয়তা ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশি। কিন্তু দুটো ম্যাচ হয়ে গেল। রাসেলের ব্যাট ঝড় তোলা দূরের কথা, দশের গণ্ডি পার করতে ব্যর্থ। রাসেল নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর কেকেআর সমর্থক আর চাইছেন না ক্যারিবিয়ান তারকাকে।
তিনি নিজে অবশ্য আশাবাদী তাড়াতাড়ি বড় রান করতে পারবেন। কার্তিককে তিনে নামানো হলে দলের বাকিদের ওপর চাপ কমানো সম্ভব মনে করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এই ধরণের উইকেটে টেকনিক্যালি শক্তিশালী ব্যাটসম্যানের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সেদিক থেকে কার্তিক বাকিদের থেকে কিছুটা এগিয়ে।টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে নাইট রাইডার্স অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান বলেছিলেন দলের অন্যতম শক্তিশালী জায়গা মিডল অর্ডার। তিনি নিজে, শাকিব, রাসেল, কার্তিকদের মত ক্রিকেটার থাকার ফলে বিপক্ষ দল এমন শক্তিশালী মিডল অর্ডারের বিরুদ্ধে স্বাচ্ছন্দ বোধ করবে না জানিয়েছিলেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
সানরাইজার্স ম্যাচে জিতে শুরু করলেও নীতিশ রানা এবং রাহুল ত্রিপাঠী ছাড়া কেউ রান পাননি। দ্বিতীয় ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের বিরুদ্ধে সেই একই ছবি। রানা এবং কিছুটা গিল ছাড়া ব্যর্থ বাকিরা। রাহুল ত্রিপাঠী (৫), মর্গ্যান (৭), শাকিব (৯), রাসেল (৯) ডাহা ফ্লপ এঁরা প্রত্যেকে। কার্তিক ৮ রানে অপরাজিত থাকলেও, নিজের ঘরের মাঠে এমন ব্যাটিং প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।পাশাপাশি অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান মেনে নিয়েছেন মিডল অর্ডার ব্যর্থ হওয়ায় নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা যে জায়গা থেকে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে হেরেছে কেকেআর, সেটা রীতিমত অসম্ভব ব্যাপার।
তিরিশ বলে একত্রিশ রান প্রয়োজন। হাতে ছয় উইকেট। এই ম্যাচ কেউ হারতে পারে ভাবাই যায় না। রাসেল বল হাতে সফল হলেও ব্যাট হাতে একেবারেই ছন্দে নেই। অনেকেই মনে করছেন তিনি এখন অতীতের ছায়ামাত্র। স্পিন বা পেস, কোনওটাই খেলতে পারছেন না। দেখে মনে হচ্ছে জলের মাছকে টেনে ডাঙায় তোলা হয়েছে। শাকিব বল হাতে কিছুটা সার্ভিস দিলেও, ব্যাট হাতে দুটো ম্যাচে ফ্লপ। দুবারই অফের বল লেগে ঘুরিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন। অধিনায়ক মর্গ্যান নিজেও বিনা কারণে অতি আক্রমনাত্মক হতে গিয়ে ভুল শট খেলে উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন।
ইংলিশ অধিনায়ক মেনে নিচ্ছেন নিজেদের হাতে থাকা ম্যাচ এভাবে হারতে হওয়া সত্যি হতাশার। অনুশীলনে আগামী তিন দিন কাটাছেঁড়া চলবে ভুল শট খেলার। কিছু জায়গায় ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করা হতে পারে। তবে এত তাড়াতাড়ি দলের ক্রিকেটারদের ওপর ভরসা হারাতে রাজি নন অধিনায়ক। সবে টুর্নামেন্ট শুরু। তাছাড়া চেন্নাইয়ের মাঠে দ্বিতীয় ইনিংসে সানরাইজার্সও হেরেছে।
তবে অন্য দলের হারা বা জেতা গুরুত্বপূর্ণ নয় জানিয়েছেন ইয়ন মর্গ্যান। আসল হল তাঁরা নিজেরা কী করছেন। ইংলিশ অধিনায়ক মনে করেন প্রথমদিকে ভুলভ্রান্তি হয়ে গেলে একদিকে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার সময় পাওয়া যায়। একটা জয় হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দেবে নিশ্চিত মর্গ্যান।
