#মুম্বই: বৃহস্পতিবার প্রথমে ব্যাট করে রাজস্থান যখন স্কোরবোর্ডে ১৭৭ রান তুলল, তখনই মনে হয়েছিল এই রান তাড়া বাঁচাতে পারবে না। শক্তিশালী আরসিবি ব্যাটিং লাইন আপ বড় কিছু ভুল না করলে এই রান সহজেই তাড়া করে জিতে যাওয়ার কথা ছিল। ওপেন করতে নেমে বিরাট কোহলি এবং দেবদত্ত পারিকাল স্বপ্নের ব্যাটিং করলেন। বিশেষ করে দেবদত্ত। গতবার প্রথমবার আইপিএলে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। এবার বিজয় হাজারে ট্রফিতে চারটি শতরান করেন। প্রথম তিনটি ম্যাচে বড় রান না পেলেও, তাঁর ওপর আস্থা রেখেছিলেন বিরাট কোহলি। সেই আস্থার মর্যাদা দিলেন কর্নাটকের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
advertisement
প্রথমে দেখেশুনে শুরু করে তারপর চতুর্থ গিয়ারে নিয়ে গেলেন রান তোলার গতি। সবদিকে শট খেললেন অনায়াসে। কয়েকটি বিশাল ছক্কা হাঁকালেন। অন্যদিকে অভিজ্ঞ বিরাট কোহলি তাড়াহুড়ো করলেন না। বেশিরভাগ স্ট্রাইক ছেড়ে দিলেন দেবদত্তকে। তার মধ্যেই আইপিএলের ইতিহাসে ৬০০০ রান করে নতুন রেকর্ড তৈরি করলেন। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে এই নজির স্থাপন করলেন তিনি।রাজস্থানের ১৬.২৫ কোটির মরিস এদিন পুরোপুরি ব্যর্থ। ব্যাটে কিছু করতে পারলেন না। বোলিংয়ে প্রচুর রান দিলেন।
সাকারিয়া, মোস্তাফিজুর, রিয়ান পরাগ আরসিবি ব্যাটিং লাইনআপকে নড়াতে পারলেন না। এক কথায় বলতে গেলে ছেলেখেলা করে খেলাটা নিজেদের পকেটে পুরে নিল লাল জার্সিধারীরা। এই নিয়ে চলতি আইপিএলে চার ম্যাচে চারটি জয় তুলে নিল আরসিবি। অতীতে তিনবার ফাইনাল খেললেও একবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারেনি তাঁরা। এবার পারবে কিনা সময় বলবে। অনেক পথ চলা বাকি। সবে টুর্নামেন্টের প্রথমদিক। কিন্তু এবার বিরাট কোহলির দলকে অন্যরকম মনে হচ্ছে।
আজকের দাপুটে জয়ের পর দলের আত্মবিশ্বাস নিঃসন্দেহে অনেকটা বেড়ে যাবে। টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিরাট। অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা রাখলেন মহম্মদ সিরাজ, জেমিসন, ওয়াশিংটন সুন্দররা। সিরাজ বোল্ড করলেন বাটলারকে। ৮ রান করে ফিরে গেলেন বাটলার। এরপর ডেভিড মিলারকে এল বি করলেন সিরাজ দুরন্ত ইয়র্কার বলে। সিরাজ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে লাল বলে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ভারতীয় ফাস্ট বোলিংকে। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেট অন্য চ্যালেঞ্জ। সিরাজ দেখিয়ে দিলেন টি টোয়েন্টিতেও তিনি দলকে ভরসা দিতে পারেন।
মনন ভরা ৭ করে ফিরে গেলেন খারাপ শট খেলে। উইকেট পেলেন জেমিসন। মনে হয়েছিল অধিনায়ক সঞ্জু আজ বড় ইনিংস খেলবেন। শুরুটা খারাপ করেননি। দুটি বাউন্ডারি এবং একটি ওভার বাউন্ডারি মারলেন। পরের বলেই ফিরে গেলেন ম্যাক্সওয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এই আইপিএল সঞ্জুর কাছে বড় সুযোগ নিজেকে প্রমাণ করার। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে অনবদ্য শতরান করেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকে একেবারেই ধারাবাহিক নন। দেশের মাটিতে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হলে দলে জায়গা পেতে গেলে তা নারান করতে হবে কেরলের ব্যাটসম্যানকে। না হলে বাড়িতে বসেই খেলা দেখতে হবে। সঞ্জু যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন, তত ভাল। দলের অধিনায়ক হিসেবে বাড়তি দায়িত্ব দেখাতে হবে তাঁকে।
শিবম ৪৬ করে ফিরে গেলেন রিচার্ডসনের বলে ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাচ দিয়ে। রাজস্থানের হয়ে এদিন সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি। পাঁচটি বাউন্ডারি এবং দুটি ওভার বাউন্ডারি মারলেন। ধুঁকতে থাকা দলকে কিছুটা অক্সিজেন দিলেন। বোঝা যাচ্ছে এবার দলের ভারসাম্য আগের থেকে অনেক বেড়েছে আরসিবির। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং জেমিসন দলের শক্তি বাড়িয়েছেন। আজ ওপেনিং করতে নেমে দেবদত্ত রান পেয়ে যাওয়ায় বিরাট কোহলির চিন্তা কিছুটা কমবে। ভারত অধিনায়ক অবশেষে আইপিএলের অভিশাপ কাটাতে পারেন কিনা উত্তর দেবে সময়।দেবদত্তর শতরান নিঃসন্দেহে আজকের ম্যাচের গেম চেঞ্জার।
