ক্যারি লোপেজ অ্যালভারাডো নামে ২৮ বছর বয়সী ওই মহিলাকে গত ৮ জুন গ্রেফতার করে আইসিই। এর এক সপ্তাহ পরেই ছিল তাঁর প্রসবের দিনক্ষণ। লোপেজের অভিযোগ, নিজের পেটে যাতে আঘাত না লাগে, তার জন্য আড়াল করেছিলেন তিনি। সেই সময়ই আচমকা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
Telemundo 52-র কাছে তিনি দাবি করেন যে, ওরা আমাকে দুদিক থেকে ধরার চেষ্টা করছিল। কিন্তু পেটে থাকা সন্তানকে রক্ষা করার জন্য আমি নীচে পড়ে যাই। কারণ আমার মনে হচ্ছিল যে, ওরা আমায় আঘাত করবে। আমি ওদের বলেছিলাম যে, আমার ডিউ ডেট বা প্রসবের দিনক্ষণ ছিল আগামী ১৭ জুন। ওরা বলে, ঠিক আছে। আপনার বাচ্চা এখানেই জন্মাবে। কিন্তু আপনি তো মেক্সিকো থেকে এসেছেন, তাই তো? আর আমি বলেছিলাম, না। Telemundo 52-র কাছে স্প্যানিশ ভাষায় ক্যারি আরও বলেন যে, আমি তো এখানেই জন্মেছি। আমি লস অ্যাঞ্জেলসে জন্মেছি। হলিউড হাসপাতালে আমার জন্ম।
advertisement
এনবিসি লস অ্যাঞ্জেলসের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে, মুক্তি পাওয়ার পর ক্যারির পেটে তীব্র যন্ত্রণা হতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ক্যারি এবং তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের উপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
কিন্তু কী কারণে ছিল এই গ্রেফতারি?
এনবিসি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, আসলে একটি গাড়িতে চেপে যাচ্ছিলেন দুই শ্রমিক। এর মধ্যে একজন হলেন ক্যারির সঙ্গীও। তাঁদের কাছে কোনও নথিপত্র ছিল না বলে অভিযোগ। এদিকে বর্ডার প্যাট্রোল পোশাক পরিহিত কিছু মুখোশধারী ব্যক্তি সেই গাড়িটির পিছু ধাওয়া করেছিলেন। গাড়িটি একটি পার্কিং লটে গিয়ে থামে। সেখান থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। এদিকে ক্যারি এবং তাঁর আত্মীয়া গাড়িতে থাকা আরোহীদের প্রবেশের জন্য গেট খুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু এজেন্টরা যখন তাঁদের প্রপার্টিতে ঢোকার চেষ্টা করেন, তখন দরজা বন্ধ করে ক্যারিরা ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকারের কথা বলে গেট খুলতে চাননি। যদিও এজেন্টরা দাবি করেন যে, পার্কিং লট ব্যক্তিগত ছিল না। ফলে ক্যারি, তাঁর সঙ্গী, আত্মীয় এবং সহকর্মীকে গ্রেফতার করতে উদ্যত হন এজেন্টরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা এই গ্রেফতারির ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করেন। গর্ভবতী হওয়ার কারণে ক্যারিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দাবি তুলতে থাকেন তাঁরা। প্রচুর প্রতিবাদ সত্ত্বেও তাঁদের বলা হয়েছিল যে, অভিযানে বাধা দেওয়ার জন্য তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। ক্যারির দাবি, আমি বাধা দিইনি অথবা কিছুই করিনি। আমি মোকাবিলা করতে পারতাম না। কারণ আমি অন্তঃসত্ত্বা।
জনরোষ:
এই ঘটনায় চারিদিকে তীব্র নিন্দা শুরু হয়ে যায়। আইসিই অভিযান বাড়িয়ে এবং কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ নীতির মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন ইতিহাসে বৃহত্তম গণ-নির্বাসনের প্রচেষ্টা শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এনবিসি নিউজ-এর প্রতিবেদনে স্থানীয় অভিবাসন অধিকার প্রতিষ্ঠানের এক মুখপাত্র বলেন যে, এই ঘটনাটি মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে করা আচরণ এবং অভিবাসন প্রয়োগের সময় অনুসরণ করা প্রোটোকল সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।আইসিই-র একাধিক অভিযানের জেরে ট্রাম্পের এই অভিবাসন নীতির প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই নিউ ইয়র্ক সিটির পথে নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। তার মাঝে এই ঘটনা আবারও নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড় তুলে দিল।