মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক পদাধিকারী মেজর জেনারেল হোসেন সালামি৷ সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মহম্মদ বাঘেরি এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান আলি শামখানি৷
এই তিন বর্তমান এবং প্রাক্তন সামরিক শীর্ষ কর্তার মৃত্যু ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট৷ এমন কি, ইজরায়েলের উপর প্রত্যাঘাতের ক্ষেত্রেও এই সেনাকর্তাদের মৃত্যু বড় প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে৷
advertisement
হোসেন সালামি
ইরানের রিভলিউশনারি গার্ড কর্পস-এর প্রধান হিসেবে মেজর জেনারেল হোসেন সালামি দেশের অন্যতম ক্ষমতাশালী সেনাকর্তা ছিলেন৷ দেশের সেনাবাহিনীর সবথেকে দক্ষ শাখার প্রধান হিসেবে সরাসরি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেইনির সঙ্গে যোগাযোগ থাকত তাঁর৷
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের রিভলিউশনারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসি-র অধীনে একাধিক মিলিশিয়া সংগঠনকে আর্থিক এবং সামরিক সাহায্য দেওয়া হয়৷ এই মিলিশিয়াগুলিকে ব্যবহার করেই ইরান মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকা সহ অন্যান্য দেশের সেনাবাহিনীকে নিশানা করে৷ ইয়েমেনের হুদিদেরও ইরানের আইআরজিসি সামরিক এবং আর্থিক সাহায্য করে বলেই মনে করা হয়৷ যে সাহায্য কাজে লাগিয়ে লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক পণ্যবহনকারী জাহাজগুলির উপরে হামলা চালায় হুদিরা, হামলা চালানো হয় ইজরায়েলেও৷
মহম্মদ বাঘেরি
অন্যদিকে ২০১৬ সাল থেকে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মহম্মদ বাঘেরি৷ মনে করা হয়, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীতে প্রায় ৫ লক্ষ সেনা রয়েছে৷ ২০১৯ সালে আয়াতোল্লাহ খামেইনি ঘনিষ্ঠ আরও ৯ জনের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ বাঘেরি সহ আয়াতোল্লাহ ঘনিষ্ঠ এই দশ জনের বিরুদ্ধে ইরানের মানুষের উপর অত্যাচার, সন্ত্রাসবাদে মদতের মতো অভিযোগ আনে আমেরিকা৷ গত এপ্রিল মাসেই সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইরান সফরে গিয়ে বাঘেরির সঙ্গে দেখা করেছিলেন৷ যা অত্যন্ত বিরল ঘটনা৷ এর পরের মাসেই রয়টার্স একটি প্রতিবেদনে দাবি করে, ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ এড়ানোর জন্য বাঘেরিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরামর্শ মতো পরমাণু চুক্তিতে রাজি হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন সৌদির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী৷
আলি শামখানি
আলি শামখানিও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেইনিই-র আর এক ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্তা৷ একদা শত্রু সৌদ আরবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্স্থাপনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তিনি৷ ২০১৩ সাল থেকে প্রায় এক যুগ ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা আধিকারিকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷ ইউরোপ এবং আমেরিকার কূটনৈতিক মহলেও পরিচিতি ছিল আয়াতোল্লা ঘনিষ্ঠ শামখানির৷
যদিও শুক্রবারই দ্রুত রিভলিউশনারি গার্ড এবং নতুন সেনাপ্রধানদের নিযুক্ত করে ফেলেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেইনি৷ ইরানের রিভলিউশনারি গার্ড কর্পস-এর প্রধান নিযুক্ত করা হয়েছে মহম্মদ পাকপৌরকে৷ অন্যদিকে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হয়েছেন আব্দোলরহিম মৌসাভি৷