বাংলাদেশে বুধবারের হিংসায় নিহতদের মধ্যে রয়েছে ২৫ বছর বয়সি দীপ্ত সাহা এবং ১৮ বছর বয়সি রমজান কাজি। দুজনকেই গুলিবিদ্ধ করা হয় এবং হাসপাতালে আনার সময় চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। আহত আরও নয়জন চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার জন্য সরাসরি আওয়ামি লিগকে দায়ী করেছেন মুহবম্মদ ইউনূস৷ তিনি বলেন, ‘‘তরুণ নাগরিকদের তাদের বিপ্লবী আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উদযাপনের জন্য শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে বাধা দেওয়া তাদের মৌলিক অধিকারের লজ্জাজনক লঙ্ঘন।’’
advertisement
আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান জানান, গতকালের সংঘাতের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় তাঁর থানায় মোট ১৪ জন আটক আছেন। গতকাল রাত তিনটার দিকে যৌথ বাহিনী তাঁদের থানায় হস্তান্তর করে। আপাতত শহরের পরিবেশ শান্ত আছে।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, ‘‘এই জঘন্য কাজ – নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামি লিগের ছাত্রলিগের সদস্য এবং আওয়ামি লিগের কর্মী ধরনের জঘন্য হামলা সহ্য করা হবে না। যেই দোষী হোক না কেন তাকে শীঘ্রই শাস্তি দেওয়া হবে। অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের সম্পূর্ণ জবাবদিহি করতে হবে। বাংলাদেশের কোনও নাগরিকের বিরুদ্ধে এই ধরনের সহিংসতার কোনও স্থান নেই৷’’
বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ চলাকালীন এই সংঘর্ষের ঘটনা শুরু হয়৷ ‘জাতীয় নির্মাণের জন্য জুলাই মার্চ’ কর্মসূচির আওতায় এই সমাবেশটি আয়োজন করা হয়েছিল৷ নাম দেওয়া হয়েছিল ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’। সেই সমাবেশস্থলেই এই হামলার ঘটনাটি ঘটে দুপুর ১:৩০ টার দিকে। এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা তখন পর্যন্ত সেখানে পৌঁছাননি। অভিযোগ, তখনই গোপালগঞ্জের নগরপালিকা পার্ক এলাকার সই সমাবেশ মঞ্চে এই হামলা চালানো হয়। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানিয়েছেন যে হামলাকারীরা মঞ্চের সাউন্ড সিস্টেম, মাইক এবং চেয়ার ভাঙচুর করে৷ দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করে এবং ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে।
এরপরেই সেই পোড়া মঞ্চ থেকেই বক্তৃতা করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম৷ বলেন, ‘‘পুলিশ যদি আমাদের ন্যায়বিচার দিতে না পারে, তাহলে আমরা নিজেরাই ‘গোপালগঞ্জকে মুজিববাদ থেকে মুক্ত করব।’’ শুধু তাই নয়, দলের নেতা হাসনাত আবদুল্লাহও প্রকাশ্যে ‘মুজিবের অবশিষ্ট প্রতীকগুলি মুছে ফেলার’ ঘোষণা করেন৷
অভিযোগ, এনসিপির ‘গোপালগঞ্জে মার্চ’ কর্মসূচি চলাকালীন, কেবল সমাবেশস্থলই নয়, প্রশাসনিক কর্মীদেরও টার্গেট করা হয়েছিল। বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার উলপুর গ্রামে নিষিদ্ধ ছাত্রলিগের কর্মীরা একটি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়, বিবিসি জানিয়েছে, গোপালগঞ্জ সদর থানার ইনচার্জ মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন। এর পর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুল হাসান এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসা ম্যাজিস্ট্রেটের একটি দলের উপরও বাউলতলী ইউনিয়নের কাংসুর বাসস্ট্যান্ডে হামলা চালানো হয়।