তরুণ মজুমদারকে স্বাধীনভাবে ছবি বানাতে প্রথম উৎসাহিত করেছিলেন খোদ 'মহানায়ক' উত্তম কুমার। তার আগে পর্যন্ত সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন তরুণবাবু। শোনা যায়, রাজগীরে হরিদাস ভট্টাচার্য পরিচালিত 'রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত'-র শ্যুটিং চলাকালীন তরুণ মজুমদারকে উত্তম কুমার বলেছিলেন, 'যদি কোনও দিন মনে হয় স্বাধীন ভাবে কোনও ছবি করবেন, কথা দিচ্ছি, আমি পাশে থাকব-- অবশ্য যদি আপনার চিত্রনাট্যে মানিয়ে যায়।' উত্তম কুমারের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েই 'চাওয়া পাওয়া' বানিয়ে ফেলেন তরুণ মজুমদার। আবার এই তরুণ মজুমদারই যখন ১৯৬৩-তে 'পলাতক' ১৯৬৩ বানিয়েছিলেন, তখন চিত্রনাট্য উত্তম কুমারের পছন্দ হয়ে যাওয়ার পরও 'মহানায়ক'-কে না বলেছিলেন পরিচালক। কারণটা হল তিনি অনুপ কুমারকে ভেবেই চিত্রনাট্য লিখেছিলেন।
advertisement
আরও পড়ুন: মৃত্যুর ৪১ বছর পার, বাঙালি আজও একই ভাবে মজে মহানায়ক উত্তম কুমারে
জানা যায়, 'পলাতক'-এর প্রযোজক, আগে গিয়ে চিত্রনাট্য উত্তম কুমারকে শুনিয়ে দেন। মহানায়কের সেই চিত্রনাট্য ভীষণ পছন্দ হয় এবং তিনি 'পলাতক' করতে রাজিও হয়ে যান। প্রযোজক একথা তরুণ মজুমদারকে জানালে, তিনি স্পষ্ট বলেন, উত্তম নন, অনুপকে কুমারকে মাথায় রেখেই গল্প লিখেছেন। এরপর প্রযোজক বেঁকে বসলে তরুণ মজুমদার সরাসরি উত্তম কুমারের সঙ্গে কথা বলতে যান। মেকআপ রুমে থাকা মহানায়ককে তরুণবাবু 'পলাতক'-এর কথা বলতেই উত্তম কুমার বলেন, তাঁর চরিত্রটা ভীষণ পছন্দ হয়েছে। বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে পরিচালক জানিয়ে দেন, তিনি চরিত্রটা আসলে অনুপ কুমারকে ভেবেই লিখেছেন।
আরও পড়ুন: নিওন সবুজ পোশাকে নোরা ফতেহি, নায়িকাকে দেখে চোখে ধাঁধাঁ ভক্তদের
আর তরুণ বাবুর মুখ থেকে একথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন উত্তম কুমার। পরে বলেন, 'এটা নিয়ে আপনাকে আর ভাবতে হবে না, আমি অনুপের কথা সকলকে বলে দিচ্ছি।' পরবর্তীকালে কী হয়েছিল, সেকথা আর কারোর অজানা নয়। ১৯৬৩-তে অনুপ কুমারকে নিয়েই 'পলাতক' বানান তরুণবাবু। ছবিটি বাঙালির অন্যতম প্রিয় ছবি ও অনুপ কুমারের অন্যতম সেরা অভিনয়।