দাদার কীর্তি তখন সবে মুক্তি পেয়েছে।হই হই করে চলছে সব হলে।এক সাংবাদিকের সঙ্গে একদিন নন্দিনীর বাড়িতে হাজির তাপস পাল।সাংবাদিক বন্ধুই সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল। নন্দিনীকে দেখা মাত্রই প্রেমে পরে যান তাপস পাল। প্রেম পর্ব চলে বেশ কিছুদিন তারপরে বিবাহ। নন্দিনী সারাজীবনে সব রকম ভাবে সাপোর্ট দিয়ে গিয়েছেন স্বামীকে। তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে আরো যেন তাকে একটু বেশি আগলে রাখার প্রবণতা ছিল নন্দিনীর। প্রথমবার সাংসদ হওয়ার সময়ও নন্দিনী ও কন্যা সোহিনী ছিল তার সঙ্গে। সংসদে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পরে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তাপস পাল। সৌগত রায় সেইসময় ছিলেন তাপসের সঙ্গে।এতটাই অসুস্থ বোধ করেন তাপস যে তড়ি ঘড়ি খবর পাঠানো হয়ে নন্দিনীকে। অর্থাৎ তাপস পালের স্নায়ুর সমস্যা তাকে ভুগিয়েছে থেকে থেকে। তবে শুধু কি শারিরীক সমস্যায় একমাত্র কারণ তাঁর অকালপ্রয়ানের জন্য? না বিষয়টা একেবারেই তা নয়। যারা তাকে সত্যি মানুষ হিসেবে ভালোবাসতেন তারা বলছেন এর জন্য অনেকটাই দায়ী তার মানসিক অবসাদ। বেশ কয়েকটি বিষয় নিঃশেষ করে দিয়েছিল অভিনেতাকে।
advertisement
সত্যি কি নেতা হওয়ার দরকার ছিল? অভিনেতা কি যথেষ্ট ছিলনা? এই সবই তাপস উপলব্ধি করেছিলেন ঠিকই তবে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। যে সময় উপলব্ধি হল তখন অনেক দেরি। "আমি চন্দননগরের মাল " সাহেবের কি এইটা না বললেই হচ্ছিল না।তার পরে হাজারবার ক্ষমাও তো চেয়েছেন। কিন্তু কে শুনবে সেই কথা।সবার চোখে তখন শুধু ঘৃণা।জীবনের সব অ্যাচিভমেন্ট যেন এক লহমায় শেষ। এতেও কি হচ্ছিল না? আরও কিছু দরকার ছিল ? রোজভ্যালি কাণ্ডে দীর্ঘদিন হাজতবাস জীবিত মানুষটাকে মেরে ফেলেছিল পুরোপুরি। ঘরে ফেরার কত চেষ্টা।কতবার জেল হাসপাতাল। কে তখন খবর নিয়েছিল তাঁর? কেউ নেয়নি।নাম মাত্র নমোঃ নমোঃ করে দায়িত্ব সেরেছিল। সেই সময় সেই নন্দিনীকেই একমাত্র কাছে পেয়েছিলেন তাপস। হাজতবাস শেষেও তো সোশ্যাল ট্যাবু। কেউ পুছতনা। ছবিতে কাজ করাতো দূর অস্ত। অবশ্য এখন তো উনি আর বেঁচে নেই তাই তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো খুব সহজ হবে পরিচিতদের কাছে। রবীন্দ্র সদন থেকে কেওড়া তলা হয়ে ধোঁয়ায় বিলীন হয়ে যাবে দাদার সব কীর্তি।
SREEPARNA DASGUPTA