‘ছোরি ২’ আসলে ভূতের গল্প। কিন্তু এই ছবির ভূত আসলে প্যারানর্ম্যাল সত্তা। আর সেগুলি হল সামাজিক রীতি, পুরুষতান্ত্রিক পচন ধরা রীতি-নীতি এবং যুগ যুগ ধরে চলে আসা হিংসা-দ্বেষ। ছবির শুরুতে দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য। একটি ছোট্ট মেয়ে লণ্ঠন নিয়ে আখের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। মা-কে খুঁজছে সে। তাঁর স্বরও কেঁপে উঠছে। এরপর সে দেখতে পায়, একই রকম দেখতে কিছু ফ্যাকাশে মুখ তাকে বলছে, “মা ডাকছে।”
advertisement
আরও পড়ুন-ভয়ঙ্কর দুঃসময় আসছে…! দেবগুরু বৃহস্পতির দুরন্ত চালে কাঁপবে ত্রিভুবন! ৬ রাশির জীবন ‘নরক’, চরম আর্থিক সঙ্কট, দুর্ঘটনার বিরাট সম্ভাবনা!
পরিচালক বিশাল ফুরিয়া এই ছবির গল্প দারুণ ভাবে একেবারে গথিক কায়দায় বুনেছেন। সামাজিক-রাজনৈতিক মোড়কে প্রতি স্তরে যেন লুকিয়ে রয়েছে সাইকোলজিক্যাল টেরর। ছবির স্ক্রিনপ্লে বা চিত্রনাট্যও অসামান্য। এক সময় যেন মনে হবে, দম আটকে আসছে। ট্যুইস্টের সঙ্গে যেন সত্যের একটা আশ্চর্য মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছে। বাস্তব এবং ইলিউশনের মধ্যে যে সূক্ষ্ম রেখাটা রয়েছে, সেটিকে যেন হ্যালুসিনেটরি ভিজ্যুয়ালের মাধ্যমে একপ্রকার ঝাপসা করে দেওয়া হয়েছে।
আবার দৃশ্যের দিক থেকে ‘ছোরি ২‘ সত্যিই অসাধারণ। অনশূল চৌবের সিনেম্যাটোগ্রাফিও অসাধারণ। টর্চের আলো, চাঁদের আলো এবং আলো-আঁধারিকে দারুণ ভাবে ব্যবহার করে প্রত্যেকটি দৃশ্যে যেন প্রাণ ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। অন্যদিকে দৃশ্যগুলিকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে অদ্রিজা গুপ্তা এবং রব ডেলা ফরচুনার সঙ্গীত। যা ‘দ্য কনজ্যুরিং’ এবং ‘ইনসাইডাস’-এর কথা মনে করিয়ে দেবে।
অভিনয়ের দিক থেকে সাক্ষী চরিত্রে অনবদ্য নুসরত ভারুচা। মাতৃত্বের স্নেহ থেকে যোদ্ধা হয়ে ওঠার যে পরিবর্তন, তা অসাধারণ সৌন্দর্য ও দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। দাসী মা হিসেবে সোহা আলি খানও অসাধারণ। শুধু তাঁর গলার স্বরই শিরদাঁড়া দিয়ে হিমশীতল স্রোত নামাবে। তবে এত ইতিবাচকতা সত্ত্বেও কিছু ত্রুটি রয়েছে এই ছবিতে। গৌণ চরিত্রগুলিকে খুবই কম গুরুত্বের সঙ্গে দেখানো হয়েছে। এর পাশাপাশি ছবির গতি, বিশেষ করে শেষ দিকটা নিয়ে একটা সমস্যা আছে। আর মনে হচ্ছিল, ছবিটি যেন তাড়াহুড়ো করে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।