গত ৬ জানুয়ারি জয়পুরে শুরু হয়েছে ‘ইরফান থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল’। যা চলবে আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই ফেস্টিভ্যাল উদ্বোধন করতে জয়পুর পৌঁছেছিলেন সুতপা। সেখানেই তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় প্রয়াত অভিনেতার গুণের বিষয়ে। সুতপা জানান যে, ইরফান এমন একজন মানুষ, যিনি কারও প্রতি কোনও ক্ষোভ পুষে রাখতেন না। ইরফান-পত্নীর কথায়, “যাঁদের সঙ্গে উনি কাজ করেছেন, তাঁদের নামে উনি কখনও খারাপ কথা বলতেন না। আর কোনও কিছুর বিষয়েই তাঁর অভিযোগ ছিল না।”
advertisement
বই পড়ার প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল ইরফানের। তিনি কমপ্লিট ওয়ার্কস অফ বিবেকানন্দ-এর ১২টি খণ্ড শেষ করে ফেলেছিলেন। শেষ দিকে বন্ধুদের থেকে অভিনেতা সেটি উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন। জীবনের উদ্দেশ্য এবং সেই উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে কি না, সেই বিষয়ে গভীর আগ্রহ ছিল তাঁর।
এখানেই শেষ নয়, অভিনেতার আধ্যাত্মিকতার প্রতি অনুরাগের কথাও তুলে ধরলেন তিনি। সুতপা জানান, মহেশ ভাটের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন ইরফান। আর মহেশ ভাটের সূত্রেই তাঁর আলাপ হয়েছিল জে কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গে। আবার অন্যান্য বন্ধুদের মাধ্যমে অভিনেতার আলাপ হয়েছিল ওশোর সঙ্গে। আসলে ইরফানের বিশ্বাস ছিল, যাঁরা আধ্যাত্মিক, তাঁদের সকলের মধ্যেই একই রকম একটা বিষয় থাকে।
দাম্পত্য জীবনে নিজেদের স্ট্রাগলের জল্পনার বিষয়টা নাকচ করে দিয়ে সুতপা বলেন যে, “আমাদের কখনওই স্ট্রাগল করতে হয়নি। একটা বাইক থেকে আমাদের যাত্রা শুরু করেছিল। এরপর আমরা আপগ্রেড করে ল্যান্ড ক্রুজার নিয়েছিলেন। তবে বাইক নিয়ে আমরা প্রচুর আনন্দ করেছি। আসলে আমার অফিস ছিল মুম্বইয়ের লোয়ার পারেলে। ফলে সেখানে যাওয়ার সময় বাইক রাইড ছিল ভারি উপভোগ্য। একসঙ্গে কোয়ালিটি টাইম কাটাতে ভালবাসতাম, বই পড়তাম এবং একসঙ্গে কবিতাও শুনতাম।”
সুতপা বলেন যে, “দারিদ্র্য কোনও স্ট্রাগল নয়। স্ট্রাগলটা আসলে আমাদের মনে।” স্মৃতির সরণি বেয়ে তিনি জানান যে, ইরফানের গল্প বলার একটা অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল। যা মানুষের মন ছুঁয়ে যেত। অভিনেতা ‘পান সিং তোমর’ ছবি খুবই উপভোগ করেছিলেন। প্রসঙ্গত নিউরোএন্ডোক্রিন টিউমারের সঙ্গে দীর্ঘ ২ বছরের লড়াইয়ের পরে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে প্রয়াত হন ইরফান খান।