এর পরেই শোরগোল পড়ে যায় দেশজুড়ে। অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী, পল্লবী যোশি অভিনীত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ১৯৯০ সালে ভূস্বর্গে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিধন ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। মুক্তির পর থেকে এখনও পর্যন্ত এই ছবি ঘিরে নানা ধরনের বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর ফাইলসকে 'উদ্দেশ্যমূলক ছবি' তকমা ইফিতে, ইজরায়েলি পরিচালককে তোপ বিবেকের
advertisement
নাদাভের এই মন্তব্যের পর সুদীপ্ত সেন ট্যুইট করেছেন বিবৃতির ছবি, যেখানে লেখা, '৫৩তম আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়ার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে জুরি চেয়ারম্যান নাদাভ লাপিড 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' ছবিটি নিয়ে যা বলেছেন, তা একেবারেই তাঁর সম্পূর্ণ অভিমত। জুরি বোর্ড থেকে ফেস্টিভ্যাল ডিরেক্টর এবং ৪ জুরি সদস্য (ব্যক্তিগত কারণে পঞ্চম জনকে বেরিয়ে যেতে হয়েছে) একাধিক সাংবাদিক সম্মেলন করেছি। কিন্তু কেউ নিজস্ব পছন্দ অপছন্দ নিয়ে মন্তব্য করিনি। যা বলেছি, সবই সম্মিলিত অভিমত। জুরি হিসেবে ছবির প্রযুক্তিগত, নান্দনিক গুণমান এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বিচারের দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাদের। কোনও ছবির বিষয়ে কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করতে পারি না। যদি কেউ করে, তা সম্পূর্ণ ভাবে ব্যক্তিগত। জুরির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই।'
মঙ্গলবার সকাল থেকে ছবির শিল্পীরা একে একে ভর্ৎসনা শুরু করেন ইজরায়েলি পরিচালককে। ট্যুইটারে ইজরায়েলি পরিচালককে তোপ দাগেন বিবেক, 'সত্য বড়ই ভয়ঙ্কর, মানুষকে মিথ্যা বলাতে পারে'। তাঁর পোস্টের তলায় হ্যাশট্যাগ দিয়ে তিনি লেখেন, 'শৈল্পিক সচেতনতা'।
ছবির এক অভিনেতা দর্শন কুমার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ''প্রত্যেকেরই নিজস্ব পৃথক মতামত রয়েছে। কিন্তু এই সত্যটি কেউ অস্বীকার করতে পারে না যে, 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' এমন একটি ছবি যা কাশ্মীরি পন্ডিত সম্প্রদায়ের প্রকৃত দুর্দশার কথা তুলে ধরেছে। যাঁরা এখনও সন্ত্রাসবাদের নৃশংসতার বিরুদ্ধে ন্যায়ের জন্য লড়াই করে চলেছেন। এই ছবি অভব্য নয়, সত্যের উপর নির্ভর করে বানানো।'' অন্য দিকে অনুপম খের ট্যুইটে করেন, 'মিথ্যার উচ্চতা যতই বেশি হোক না কেন... সত্যের তুলনায় তা সবসময়ই ছোট।' তিনি বলেন, ''ঈশ্বর ওঁকে বুদ্ধি দিক। যাতে ভবিষ্যতে কখনও ব্যক্তিগত কারণে এই ধরনের মঞ্চকে ব্যবহার না করেন। এই মন্তব্যের আইনি জবাব দেব আমরা।''
৫৩তম আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়াতে পরিচালক ল্যাপিড বলেন, ''এই উৎসবে প্রদর্শিত পঞ্চদশতম ছবি 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' দেখে আহত এবং বিচলিত৷ আমাদের কাছে এই ছবি উদ্দেশ্যমূলক এবং অভব্য বলে মনে হয়েছে৷ এরকম ঐতিহ্যবাহী চলচ্চিত্র উৎসবের শৈল্পিক উৎকর্ষমূলক প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিভাগে প্রদর্শিত হওয়ার জন্য বেমানান৷ এখানে এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি আপনাদের সঙ্গে আমার অনুভূতি ভাগ করে নিতে সম্পূর্ণ স্বচ্ছন্দ৷ যে কোনও উৎসবের মূলমন্ত্রই হল প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনাও গ্রহণ করা, কারণ এটাই শিল্প ও জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয়৷''
আরও পড়ুন: সত্যটা অস্বীকার করতে পারবে না! কাশ্মীর ফাইলসের নিন্দার প্রতিবাদে সরব অনুপম-দর্শন
চলতি বছরেই মার্চ মাসে মুক্তি পায় অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী, পল্লবী যোশি অভিনীত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’৷ ১৯৯০ সালে ভূস্বর্গে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিধন ঘিরে আবর্তিত হয়েছে ছবির পটভূমি৷ সমালোচক ও দর্শকদের কাছে প্রশংসিত এই ছবি বক্সঅফিসে অত্যন্ত সফল৷ তবে কিছু দেশে এই ছবি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়৷ তখনও ছবির গায়ে লেগেছিল 'উদ্দেশ্যমূলক'-এর তকমা৷ প্রসঙ্গত চলতি বছর বলিউডের বাণিজ্যিক সফলতম ছবিগুলির মধ্যে অন্যতম ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’৷
ছবি প্রসঙ্গে ল্যাপিডের বক্তব্য ইতিমধ্যে নেটিজেনরা দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছেন। কেউ বাহবা দিচ্ছেন ল্যাপিডকে, কেউ বা সমালোচনায় বিদ্ধ করছেন।