মাধবন কিন্তু পেরেছেন 'ডিকাপলড'(Decoupled) সিরিজে। বেজায় বিরক্তিকর একটা লোক। যখন তখন যা কিছু করে ফেলতে বা বলতে পারেন তিনি। এই যেমন এয়ারপোর্টের সিকিউরিটি চেকের সময় অনায়াসে কিছু বেফাস কথা বলতে পারেন দায়িত্বে থাকা অফিসারকে। এবং তার জন্য ফ্লাইটে ওঠা বন্ধ হয়ে গেলেও, নো টেনশন। বউকে বলতে পারেন, চলো ডিনারে যাই। সেখানে গিয়েও আবার ঘটিয়ে ফেলেন আর এক কাণ্ড। বিমান বন্দরে এয়ারহোস্টেজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারেন প্রেমে! প্রেয়ার রুমে ঢুকে ব্যায়াম করতে করতে হঠাৎ মন্ত্র পড়তে পারেন।
advertisement
এমন তাল কাটা মানুষ আমাদের আশে-পাশে দেখতে পাওয়া যায় না, এমন নয়। কিন্তু ভদ্রতার মুখোশ খুলে কেউ নিজের আসল রূপ সামনে আনতে চান না। আর ঠিক এই জায়গাতেই একেবারে অন্যরকম মাধবনের চরিত্রের বুনন(Decoupled)।
সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে মাধবন ও সুরভিন চাওলা অভিনীত সিরিজ 'ডিকাপলড'(Decoupled)। এই সিরিজ নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মন্তব্য শুরু হয়েছে। পছন্দ এবং অপছন্দ মিলিয়ে এই সিরিজ নিয়ে দর্শকের মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কিন্তু খতিয়ে দেখলে বোঝা যায় 'ডিকাপলড'-এ কিন্তু ভাল লাগার বিষয়টাই বেশি।
১২-১৪ বছর সংসার করার পর বেশিরভাগ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের প্রেমের আগুনটা কমে যায়। কিন্তু সমাজের ভয়ে আমরা এখনও তা মেনে নিই না। হ্যাপি কাপলের নাটক সারা জীবন করে যেতে হয় অনেককে। কিন্তু খুব সহজেই বিয়ে ভেঙে বন্ধু হয়ে সন্তানের দায়িত্ব কেন নিতে পারবেন না, দু'জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ। মাধবন ও সুরভিন ভালবেসে বিয়ে করেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তিক্ততা আসে এই সম্পর্কে। হ্যাঁ রোজকার ঝগরা হয় তো নেই। তবে দূরত্ব একটা আছেই। সেই দূরত্ব থেকেই বিয়ে ভাঙা। আর সম্পর্ক খারাপ না করে কী ভাবে বিবাহ বিচ্ছেদকে মধুর করে তোলা যায়, সে কথাই বলে 'ডিকাপলড"(Decoupled)!
মনু জোশেফের স্ক্রিপ্ট যথেষ্ট মজাদার। হার্দিক মেহতার পরিচালনায় বেশ জমেছে এই সিরিজ। না, একেবারে রাতারাতি বদলে দেওয়া টাইপ উত্তেজনা নেই এই সিরিজে(Decoupled)। জীবনেও কিন্তু হুট করে কিছু বদলে যায় না। সব কিছুই সময় নিয়ে বদলায়। এখানেও তাই। কঠিন বিষয়কে কমেডির ছলে তুলে ধরেছেন পরিচালক। ভাঙা বিয়ের সম্পর্কের থেকে বন্ধুত্ব অনেক বেশি মধুর। তাই নয় কি! এই সিরিজ কিন্তু সাবলীল। কিছু কিছু জায়গায় বেশ পরিণতও। যেমন মাধবনের স্ত্রী সুরভিন অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘনিষ্ট হতে গিয়েও পারছেন না। কোথাও গিয়ে আটকে যাচ্ছেন তিনি। ওদিকে এক অবস্থা মাধবনেরও। ভেবে দেখলে সাধারণ মানুষের জীবনেও কিন্তু এই ধরণের ঘটনা ঘটে। চট করে চাইলেই যৌনতা একটা বয়স এবং সম্পর্কের পর আসে না।
আরও পড়ুন: কাজ শুরু করলেন রিয়া চক্রবর্তী! অতীতকে ভুলে নতুন ফটোশ্যুটে মগ্ন নায়িকা
তবে ওই যে বদলে ফেলার ইচ্ছেটা যে অনেক বড়। বদলে ফেলেও ভাল থাকার গল্প বলে 'ডিকাপলড'(Decoupled)। অভিনয় নিয়ে কিছু বলার থাকে না, কারণ এখানে মাধবন আছেন। বাকিরাও বেশ ভাল। সুরভিনের বাবা-মায়ের জীবনের যৌনতা, সম্পর্কের টানা পোড়েন মাত্র কয়েকটি সংলাপে ফুটে উঠেছে দারুণভাবে। সকলে মনে মনে ভাবলেও কাজে পিছিয়ে যানল সেখানেই সফল 'ডিকাপলড'। লেখক চেতন ভগতকে খুব সতর্কভাবে ব্যবহার করেছেন পরিচালক। যা খুবই মজার। মীরও দারুণ অভিনয় করেছেন। তবে এই সিরিজ দেখার পর বিয়ে ভাঙতে ইচ্ছে হোক বা না হোক, মাধবনের মতো সোজা সাপটা হতে ইচ্ছে করবেই। না জেন্ডার বিশেষে নয়, ওই রকম হতে ছেলে-মেয়ে সকলেই একবার না একবার চাইতে বাধ্য। কারণ আমাদের মনের ভিতরে কিন্তু এমন একটা বেপরোয়া সত্ত্বা সম সময় ঘুমিয়ে থাকে। তাই কিছু না ভেবে চটপট 'ডিকাপলড' দেখুন আর জীবনকে উপভোগ করুন।