রেকর্ড ভাঙল ‘কুলি’
ইতিমধ্যেই অ্যাডভান্স বুকিং রেকর্ড করেছে ‘কুলি’। সেই কারণে এটাই প্রথম তামিল ফিল্ম হতে চলেছে, যা উত্তর আমেরিকায় প্রিমিয়ার প্রি-সেলের নিরিখে ২ মিলিয়ন ডলার পার করে গিয়েছে। আর এমনিতে রজনীকান্তের ছবি মুক্তি মানেই তো উৎসব! এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। এই ছবির জন্য কিছু ভারতীয় সংস্থা তো ডে-অফ ঘোষণা করেছে। শুধু তা-ই নয়, তামিল কর্মীদের জন্য পেইড হলিডেও ঘোষণা করেছে সিঙ্গাপুরের একটি ফার্মও।
advertisement
কিছু রিপোর্টে দাবি, চেন্নাইয়ে টিকিটের কালোবাজারি হচ্ছে। এর দাম উঠেছে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত। অন্য একটি রিপোর্টে বলা হচ্ছে যে, ‘কুলি’ ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য রাজস্ব পেয়ে গিয়েছে। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার আগেই এর ৩৭৫ কোটি টাকার বাজেটের ৬৬ শতাংশেরও বেশি রিকভার করে ফেলেছে ছবিটি।
কর্নাটক এবং কেরলে ঘোষণা হয়েছে যে, সকালের শো ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়ে যাবে। তবে তামিলনাড়ুতে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে প্রথম স্ক্রিনিং শুরু হবে সকাল ৯টা থেকেই। BookMyShow-এর পরিসংখ্যান বলছে, এই ফিল্মের জন্য দশ লক্ষ ইন্টারেস্ট রেকর্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রায় ১১ লক্ষ ব্যবহারকারী ওয়ার ২ ছবির জন্য ইন্টারেস্ট প্রদর্শন করেছেন। ১২ অগাস্টের হিসাব বলছে যে, অয়ন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবিটির ৪.১ কোটি টাকার অ্যাডভান্স সেল হয়েছে। তবে সেই সংখ্যা আরও বাড়ছে।
তবে ‘ওয়ার’ ছবির প্রথম দিনের আয় (৫১ কোটি টাকা) অথবা শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ ছবির প্রথম দিনের আয় (৫৫ কোটি টাকা)-এর থেকে ‘ওয়ার ২’ বেশি আয় করতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার। শুধু তা-ই নয়, ওয়াইআরএফ স্পাই ইউনিভার্সের হায়েস্ট ওপেনার হতে পারে কি না এই ছবিটি, সেটাই দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন সকলে। কিন্তু ট্রেড গুরুরা কী পূর্বাভাস দিচ্ছেন? ট্রেড বিশেষজ্ঞ অতুল মোহনের মতে, হায়দরাবাদ এবং বেঙ্গালুরু হল এক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এখানেই আসন্ন ছবি দু’টির বক্স অফিসের তীব্র লড়াই দেখা যাবে।
হায়দরাবাদের চিত্র:
ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন যে, ‘বেঙ্গালুরুতে তামিল-ভাষী রজনী-ভক্তও রয়েছেন, আবার হিন্দি ভাষাভাষীর মানুষও রয়েছেন। এটি একটি নিরপেক্ষ কেন্দ্র। কোন ধরনের ট্রেন্ড চলছে, সেদিকে নজর থাকবে আমাদের। হায়দরাবাদে রয়েছে রজনীকান্ত, নাগার্জুন এবং জুনিয়র এনটিআর-এর বড়সড় ফ্যান-বেস। এই শহরগুলি আবার রজনীকান্ত এবং জুনিয়র এনটিআর-এর বাড়ি। বেঙ্গালুরুতে যদিও ‘কুলি’ এবং ‘ওয়ার ২’ স্ক্রিন কাউন্ট খুবই কম। আর এখনও পর্যন্ত অ্যাডভান্স বুকিংও খুবই সীমিত।’
তিনি আরও জানান যে, ‘প্রত্যাশা অনুযায়ী, তামিলনাড়ু আর কেরল হতে চলেছে ‘কুলি’-র জন্য বড়সড় বাজার।’ অন্যদিকে চেন্নাইয়ের ট্রেড বিশেষজ্ঞ রমেশ বালা অতুল মোহনের সঙ্গে একমত। তিনি জানান যে, দক্ষিণী বলয়ে শুধুমাত্র অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানাতেই ভাল সুযোগ রয়েছে ‘ওয়ার ২’ ছবির। বালার কথায়, তেলুগু-ভাষী রাজ্যে এবং উত্তর ভারতীয় বলয়েই ‘ওয়ার ২’ বেশ ওজনদার বলে প্রমাণিত হতে পারে। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে দক্ষিণী বলয়ে এর স্ক্রিন কাউন্ট খুবই কম।
বালা আরও বলেন যে, ‘অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানা হল জুনিয়র এনটিআর-এর হোম-গ্রাউন্ড। কিন্তু অন্যদিকে কুলি ছবিতে রয়েছেন নাগার্জুনও। এই অঞ্চলে রজনীকান্তের ভক্ত-সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তাঁর ছবির ট্র্যাক রেকর্ড কিন্তু এদিকে বেশ ভাল। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ‘রোবট’ এবং ‘২.০’-র কথা। এগুলি হল সিনে-পাগল রাজ্য। কখনও কখনও যা ঘটে, সেটা হল – জুনিয়র এনটিআরের প্রতিযোগী এবং অল্লু অর্জুন, রামচরণ, মহেশ বাবু এবং পবন কল্যাণের মতো সমসাময়িক অভিনেতাদের ভক্তরা অন্য ছবিটির জন্য আগ্রহী হতে শুরু করতে পারে। সেটাই এক্ষেত্রেও ঘটতে পারে।’
মাল্টিস্টারার ছবি:
বালার মতে, ‘কুলি’ হল মাল্টিস্টারার ছবি। আর বেশিরভাগ তারকাই দক্ষিণী রাজ্যের। সারা দেশে জনপ্রিয় রজনীকান্ত, আবার হিন্দি বলয়ে বিখ্যাত আমির খান। অন্যদিকে লোকেশ কনাগারাজ-অনিরুদ্ধ রবিচন্দর দুর্দান্ত জুটি। ফলে আলাদা করে বলে দিতে হয় না কুলি ছবির তারকাদের কথা। ফলে পাঁচ জন তারকার জন্য পাঁচ গুণ বেশি ভক্ত ছুটে যাবেন প্রেক্ষাগৃহে।
‘ওয়ার ২’ নিয়ে হইচই কি কম?
অতুল মোহনের দাবি, ‘ওয়ার ২ নিয়ে সেরকম হইচই শোনা যাচ্ছে না। হৃতিক এবং টাইগার-কে নিয়ে ‘ওয়ার’ ছবিতে যতটা উন্মাদনা ছিল, সেই একই রকম উন্মাদনা আমি ‘ওয়ার ২’-এর ক্ষেত্রে দেখিনি। ট্রেলারের জন্য মিলেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মিউজিকও সেরকম জনপ্রিয়তা পায়নি।” তিনি আরও বলেন যে, “ওই ছবির ভিএফএক্স-এর বিষয়ে ট্রোল করছেন ভক্তরা। কিন্তু একটা ছবির তিন মিনিটের একটা ট্রেলার দেখে সবটা বোঝা সম্ভব নয়। প্যাকেজিং ভাল। তবে ওয়ার অথবা ওয়াইআরএফ-এর স্পাই ইউনিভার্সের অন্যান্য ছবি ‘পাঠান’ অথবা ‘টাইগার ৩’-এর তুলনায় এই ছবির উন্মাদনা অত্যন্ত কম। কিন্তু উত্তর ভারতে খুব কম স্ক্রিনেই ‘কুলি’ ছবির হিন্দি ডাব করা ভার্সন চালানো হবে। এখন কী হয়, সেটাই দেখার।’