১) কেমন ছিল শেরশাহ ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা?
উত্তর-এই ধরণের ছবি বারবার আসে না৷ সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে শেরশাহ৷ কিংবদন্তীদের গল্প উঠে আসবে ছবিতে৷ যা অভিনেতা হিসেবে আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করেছে৷ তার উপর ধর্মা প্রোডাকশেনর ছবি৷ এমন বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে৷ সব মিলিয়ে খুবই ভাগ্যবান মনে হয়েছে নিজেকে৷ আরও একটা বিষয়, বলিউডে কাজ করে অভিনেতা হিসেবে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস কয়েকগুন বেড়েছে৷ মনে হচ্ছে এরপর আরও ভাল কাজ করতে পারব, আরও ভাল কাজ আসবে৷ আর শেহশাহ ছবিতে অভিনয় করে ভারতীয় সেনা বাহিনীর উপর শ্রদ্ধা আরও বেড়েছে৷ তাঁরা কীভাবে দেশের সুরক্ষার জন্য কাজ করছে, সেই উপলব্ধিও হয়েছে৷ মানে এই ছবিতে অভিনয় করে অভিনেতা হিসেবে এক ধরণের অভিজ্ঞতা হয়েছে এবং দেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবেও এক অন্য অভিজ্ঞতা হয়েছে৷ সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে আমার অভিজ্ঞতার ঝুলি পূর্ণ৷
advertisement
২)এত বড় মাপের ছবি, এবং গল্পও তেমন, ছবি মুক্তির আগে কী মনে হচ্ছে?
উত্তর- সত্যি বলতে খুব গর্বিত এই ছবিতে কাজ করে৷ কারণ এখানে আমি এক বীর সেনার চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছি৷ এটা খুব বড় ব্যাপার৷ কলকাতার ছেলে হয়ে মুম্বইতে কাজ করা এবং তাও এত বড় প্রোজেক্টে কাজ করা খুবই ভাগ্যের ব্যাপার৷ আমি খুব খুশি৷ তবে কিছুটা নার্ভাস তো বটেই৷ সকেলর কাজ কেমন লাগবে, সেটা ভেবে৷ তবে এটা বলতে পারি যে আমাদের পরিচালক বিষ্ণু বর্ধন খুব যত্ন নিয়ে কাজটা করেছেন৷ তাঁর থেকে অনেক কিছু শিখেছি৷ অভিনেতা হিসেবে সমৃদ্ধ হয়েছি৷ আর বারবার বলব, সেনার প্রতি শ্রদ্ধা কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছে৷
৩)দেশের জন্য কাজ করলে গর্ব তো হয়৷ অলিম্পিক্সের মঞ্চ দেখলাম আমরা৷ সেভাবে দেশাত্মবোধক ছবির শ্যুটেও কি আলাদা কোনও আবেগ কাজ করে?
উত্তর- অবশ্যই৷ যখন কোনও কিংবদন্তীর চরিত্রে অভিনয় করি, তখন তো একটা অন্য অভিজ্ঞতা, অন্য আবেগ৷ খুবই গর্বের বিষয়৷ এমন ছবি করলে দেশপ্রেমের আবেগটা যেন টগবগ করে শরীরে! আর সব থেকে বড় পাওনা হল সেনার ইউনিফর্ম পরা৷ এটা একটা আলাদাই আবেগ, বলে বোঝানো যাবে না৷ আমি খুবই গর্বিত এই ছবিতে অভিনয় করে৷
আমি লেফ্টন্যান্ট জেনারেল ওয়াই কে যোশীর চরিত্রে অভিনয় করেছি৷ যিনি বর্তমানে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ নর্দান কমান্ড (General Officer Commanding-in-Chief Northern Command) হিসেবে নিযুক্ত৷ লেহ-তে গিয়ে তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে৷ এটা ছবির ওয়ার্কশপের মধ্যেই ছিল৷ তাঁর থেকে কার্গিল যুদ্ধের অনেক কথা শুনেছি, বোঝার চেষ্টা করেছি তাঁর চরিত্র৷ এভাবেই নিজেকে এই ছবি এবং এই চরিত্রের জন্য তৈরি করেছি৷ ছবিটি তো আসলে ক্যাপ্টেন বিক্রম বার্তাকে নিয়ে এবং সেখানেই কার্গিল যুদ্ধের প্রেক্ষাপট৷
৪) আপনার একটা আলাদা ব্যাপার রয়েছে৷ সাদা-কালো চুল, চোখে একটা অদ্ভুত চাহনি...মেয়েরা কী বলে?
উত্তর- (খুব হেসে) শুধু মেয়েরা নয়, ছেলেরাও বলে৷ আমার চেহারাটা একেবার আলাদা, অনন্য৷ আমায় তো অনেকে বলেন সিলভার ফক্স বা জর্জ ক্লুনি অব ইন্ডিয়া৷ এসব কমেন্টের থেকে আর বড় কী পাওনা৷ একটা জিনিস মনে হয় যে, আমি এই চেহারার মাধ্যমে একটা পরিবর্তন আনতে পেরেছি৷ কারণ, না হলে সাদা-কালো চুল মানেই বৃদ্ধের চরিত্র করতে হবে, এটা ধারণা ছিল৷ এখন ছবির গল্প পাল্টাচ্ছে, গল্প বলার ধরণও, তাই আমি কাজও পাচ্ছি৷ কোনও বাবার চরিত্র নয় যদিও...অনেকে ভেবেছিলেন আমি এই চেহারা নিয়ে হয়ত কাজ পাব না৷ তবে আমার আত্মবিশ্বাস আমায় এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে৷ কলকাতার এই ছেলে এমন কাজ করুক যাতে কলকাতার নাম আরও উজ্জ্বল হয়...
৫) কিছুদিন আগেই তো জন্মদিন পালন করলেন, বয়সটা বলে দিন কত হল?
উত্তর- আমি ৪৩৷ বাড়ি এসেছি, জন্মদিন কাটাতে সকলের সঙ্গে৷ আর তার সঙ্গেই পরিবারের সবাই মিলে শেরশাহ দেখব বলে৷
৬) মডেলিং থেকে ছবিতে কাজ৷ টলিউড-বলিউড৷ সময়টা কেমন? যদিও করোনা কাজে অনেকটা বাধা দিয়েছে৷
উত্তর- বেশ ভাল সময় কাটছে৷ আরিয়া ২-র শ্যুটিং শেষ করলাম৷ অক্টোবর মুক্তি পাবে৷ আরও একটি হাবিব ফায়জালের ছবি দোস প্রাইসি ঠাকুর গার্সের কাজ শেষ হয়েছে৷ এর সঙ্গেই পাঞ্চ বিটের কাজ হল৷ কাজ ভাল হচ্ছে৷ তবে শেরশাহের পর একটু বেছে কাজ করছি৷ ওটিটির জন্য অনেক কাজ আসছে৷ এই সময়টা এমন যে নিজের মধ্যে যোগ্যতা থাকলে ভাল কাজ ঠিক পাওয়া যাবে৷
৭) খুব ঘুরে বেড়ান আপনি, ছবি আসে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ভাল লাগে খুব? মনকে শান্তি দেয়? অভিনেতা হিসেবে আরও সমৃদ্ধ করে?
উত্তর- দুটোই৷ কারণ অভিনেতা হিসেবে কাজের মধ্যে অনেক অভিজ্ঞতা হয়৷ তারপর নিজের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটালে খুব শান্তি লাগে৷ এবং ঘুরতে গেলে প্রচুর মানুষের সঙ্গে দেখা হয়, তাদের থেকে অনেক কিছু শেখা যায়৷ অভিনেতা হিসেবে সেটা আমায় আরও উন্নত করে৷
৮)আর প্রেম?
উত্তর- ভাল চলছে, স্টেডি গার্লফ্রেন্ড রয়েছে, ভালবাসা ইজ ওন!