চমৎকার গল্প বলার ধরন, দেখার চোখ এবং লিঙ্গ রাজনীতি, নারীবাদ, প্রেম ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত আলোচনার জন্য তিনি যেমন সমালোচিত, তেমনি আলোচিতও ছিলেন। ভারতীয় চলচ্চিত্রে নব্বই দশকের সবচেয়ে নিখুঁত চলচ্চিত্র নির্মাতা ধরে নেওয়া হয় তাঁকে। জীবদ্দশায় ২০ বছরে তৈরি করেছেন ২০টি চলচ্চিত্র। যার মধ্যে ১২টি চলচ্চিত্রের জন্য পেয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়াও বিভিন্ন নামি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সুনাম কুড়িয়েছে তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো।
advertisement
সঙ্গীতা দত্ত’র সঙ্গে ঋতুপর্ণের বন্ধুত্ব ছিল অনেক বছরের। দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে সঙ্গীতা বলেন— ‘তিনি আমার অনেক পুরনো বন্ধু। আমরা একসঙ্গে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। তিনি ইতিহাসের ও আমি সাহিত্যের শিক্ষার্থী ছিলাম। কলেজের পর অনেকদিন আমাদের দেখা নেই।’
দুজনের অবশ্য এরপরে দেখা হয় লন্ডনেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঋতুপর্ণের প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পর সঙ্গীতা তাঁকে লন্ডনে আসার আমন্ত্রণ জানান। ঋতুপর্ণের ‘বাড়িওয়ালি’ এবং ‘উৎসব’-এর প্রদর্শনীও কিন্তু হয় লন্ডনেই। সমসাময়িক তাঁর আরও কিছু দুর্দান্ত চলচ্চিত্র রয়েছে।
বেশ কিছুটা সময় বিরতি দিয়ে সঙ্গীতা ঋতুপর্ণের সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ শুরু করেন। ২০০৩ সালে পরপর তিনটি সিনেমার কাজ শুরু করেন বাড়িওয়ালি চলচ্চিত্রে এ নির্মাতা। সঙ্গীতা বলেন— ‘‘ঋতুপর্ণ শুধুমাত্র একজন ভাল নির্মাতাই নন, তিনি বেশ ভাল গল্প, কবিতাও লিখতে জানতেন। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে তাঁকে নিয়ে আমি একটি বই লিখেছিলাম। তথ্যচিত্রটি সেটিকে অনুসরণ করেই তৈরি। এটা অবশ্য কোনও আত্মজীবনী ধরনের কিছু নয়। এখানে তাঁর সম্পর্কে স্তুতিবাক্য পাঠ করা হয়নি, কিন্তু তিনি যা, তাই তুলে ধরা হয়েছে।’’
ঋতুপর্ণ ঘোষকে নিয়ে তৈরি এ তথ্যচিত্রটির ইতি টানা হয়েছে ৯০ মিনিটে। তাঁর কাজ, স্টাইল এ সব বিশ্লেষণ করেছেন তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন এমন অনেক তারকা। যাদের মধ্যে রয়েছেন শর্মিলা ঠাকুর, অপর্ণা সেন, নন্দিতা দাস, প্রসেনজিত্ চ্যাটার্জি, অর্জুন রামপাল, কঙ্কনা সেন শর্মার মতো অভিনেতারা। এছাড়াও নির্মাতা কৌশিক গাঙ্গুলির আরেকটি প্রেমের গল্প চলচ্চিত্রে একজন তৃতীয় লিঙ্গের নির্মাতা হিসেবে অভিনয় করেছিলেন ঋতুপর্ণ।