সুন্দরবনকে পটভূমি করে, যেখানে বহুদিন ধরেই মানুষ, প্রকৃতি ও রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাত চলে আসছে, গল্প এগিয়ে চলে। ‘অদম্য’ এই যুবকের, বা এই যুবকদের চরিত্র-অন্বেষণ।ছবি দেখতে দেখতে আমরা নিজেদের প্রশ্ন করি, ছেলেটি চরমপন্থী নিশ্চয়ই, কিন্তু সে কি দুর্বৃত্ত? নাকি বিপ্লবী? রাতের কালো অন্ধকার দ্রুত এগিয়ে আসে, তবু আন্দোলনের স্পর্ধা ভাঙে না। নতুন ভোরে আবারও ভেরি বাজিয়ে নিজের উপস্থিতির জানান দেয় নতুন লড়াই।
advertisement
এই প্রথম অপর্ণা সেন কোনও ছবি নিবেদন করছেন। অদম্য দেখবার পর তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করি ছবিটা তিনি প্রেজেন্ট করবেন কিনা, তিনি সাগ্রহে রাজি হন। ছবির উপস্থাপনা তাঁকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
যখন আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব আমাদের ক্রমাগত ঠকিয়ে চলে, যখন কষ্টার্জিত গণতন্ত্রগুলোকে কৌশলে বদলে ফেলা হয় নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্রে, যখন গরিব আরও গরিব হয়, ধনীরা আরও ধনী, যখন আদিবাসীদের বিস্তীর্ণ জমি আর ঘন জঙ্গল মন্ত্রীদের ঘনিষ্ট পুঁজিবাদী বন্ধুদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নির্লজ্জভাবে, যখন ন্যায়ের খোঁজে সাধারণ মানুষের পক্ষে আইনি পথের আর সামর্থ্য থাকে না, তখনই উঠে আসে একদল তরুণ, যারা দারিদ্র, জাতপাত, সাম্প্রদায়িকতা, দুর্নীতি, ধর্মান্ধতা এবং শোষণের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি খুঁজতে চায়। তারা নিজেরাই নিজেদের হাতে সমাজের পচন পরিষ্কার করতে নেমে পড়ে। রাষ্ট্র তাদের জন্য তকমা প্রস্তুতই রেখেছে – ‘ওরা চরমপন্থী!’ কিন্তু ওরা চরমপন্থী নাকি বিপ্লবী, ওরা দেশদ্রোহী নাকি দেশপ্রেমিক — সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায় একমাত্র আমাদের, জনগণের।
আরিয়ুন বলেন,’অদম্য’ নিয়ে বলবার জন্য শব্দ আমার কাছে একেবারেই নেই। কারণ কোনও শব্দই এই ছবি নিয়ে আমার আবেগ ও ভালবাসাকে ব্যক্ত করতে পারবে না। এই ছবিতে আমার ঘাম, চোট, যন্ত্রণা ও রক্ত মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। ‘অদম্য’-র প্রতিটা অংশের ভিতরে ঢুকে আছি আমি। আর শুধু আমি নই, আমার বন্ধুদের – অর্ক, আর্য, শৌর্য, শুভম ও পুষ্পকদা – প্রত্যেকের পরিশ্রমের ফল এই ছবি। এরকম একটা মুখ্য চরিত্রে ডেবিউ করা সবার ভাগ্যে হয় না। আমি পেয়েছি। সারাজীবন এই চরিত্রটা আমার সঙ্গে থেকে যাবে, মস্তিষ্কে ও মননে। রঞ্জনদা তাঁর পঞ্চম ছবিতে আমার ওপর যে ভরসা রেখেছেন সেটাই আমাকে শক্তি দেয়।
