সব্যসাচী জানিয়েছেন, দোকানে একটি মোবাইলের কভার কিনতে গিয়েছিলেন। বিক্রেতা একটি কভারের দাম চেয়েছিলেন ৪৫০ টাকা। ঐন্দ্রিলা (Aindrila Sharma) নাকি এমন দরদাম করেছেন যে বিক্রেতা দুটি মোবাইলের কভার ১৫০ টাকায় দিয়ে দিয়েছেন। এও সম্ভব? অবাক হয়েছেন নেটিজেনরাও। কীভাবে এমন দরদাম করলেন সেই গোটা ঘটনা মজার ছলে শেয়ার করেছেন সব্যসাচী।
সব্যসাচী (Sabyaschi Chowdhury) লিখছেন, "আমার মা বলে দরদাম করাটা একটা শিল্পের পর্যায় পরে, যে শিল্পে আমি একেবারেই সিদ্ধহস্ত নই। কলেজে পড়ার সময়ে ধর্মতলার ফুটপাথে টিশার্ট কিনতে যেতাম, আমায় দেখলেই ওরা দাম বাড়িয়ে দিতো। মা বলতো তুই একা যাস না, নিউমার্কেটে দরাদরি না করতে পারলে ওরা গলাকাটা দাম নেয়।"
advertisement
ঐন্দ্রিলাকে (Aindrila Sharma) মজা করে সব্যসাচী (Sabyaschi Chowdhury) বিগবস বলে ডাকেন। অভিনেতা লিখছেন, "অনেকদিন পর সেদিন ধর্মতলা গেছিলাম একটা কাজে, তবে একা যাইনি, সাথে বিগবস্ গিয়েছিলেন। মোবাইলের কভার দেখে ভাবলাম একটা কিনি, দাম জিজ্ঞাসা করায় ফক্কর ছোকরা দোকানদার জানালো সাড়ে চারশো টাকা। মিনমিন করে বলতে যাচ্ছিলাম, "চারশোতে হবে?", হঠাৎ বাঁদিকের পাঁজরের নিচে একটা কনুইয়ের গুঁতো খেয়ে ওঁক করে উঠে চুপ করে গেলাম। গম্ভীর গলায় উনি দোকানদারকে জানালেন "পঁচাত্তর দেব।" আমি মুহূর্তের মধ্যে পাঁজরের ব্যাথা ভুলে গেলাম, শুধু পঁচাত্তর শুনলাম নাকি, আগে একটা দুই-তিন বা নিদেনপক্ষে একটা এক অবধি নেই দেখছি। দোকানদার সোজা চাঁদ থেকে আছড়ে পড়লো মাটিতে, দুইবার বগল চুলকে বললো "অ্যাঁ"। মেঘমন্দ্র স্বর ফের জানালো "পঁচাত্তর দেব"।এইবার আমি ভুল শুনিনি। জীবনে নাচিনি আমি, তবু অবিকল মাইকেল জ্যাকসনের মুনওয়াক নকল করে সুরুৎ করে কয়েক পা ডাইনে সরে গেলাম। আমি আর চিনি না ভদ্রমহিলাকে, আমি তখন চৌরুঙ্গী হোটেলের ব্যালকনি দেখছি মন দিয়ে। ওদিকে তখন এক ভয়ঙ্কর তরোয়াল যুদ্ধ চলছে, মিনিট তিনেক ফেন্সিং চলার পর কানে এলো চিমড়ে দোকানদার বলছে, "ঠিক আছে, একশো দেবেন, ফাইনাল।"
তবে এখানেই শেষ নয় দরদামের। এর পরেও চমকে দিয়েছেন ঐন্দ্রিলা। সব্যসাচী লিখছেন, "কি আশ্চর্য, এমনও হয় নাকি, হাসিহাসি মুখে গুটিগুটি গিয়ে সবে পাশে দাঁড়িয়েছি, হঠাৎ উনি দোকানদারকে জানালেন "দুটো নেবো, দেড়শো দেব।" এবারে আর মুনওয়াক করার সময় পাইনি, স্যাট করে এবাউট টার্ন নিলাম, ছেলেবেলায় পিটি ক্লাসে এমনটা করতাম। আমারই বুকটা কেমন চিনচিন করছে, দোকানদারের না স্ট্রোক হয়ে যায়। মন দিয়ে ইডেনের আলো দেখছি, খেলা আছে বোধহয়। এদিকে পেছনে রাম-রাবণের যুদ্ধ হচ্ছে। কে যে কার গলা কাটছে বোঝা দায়। খানিক পরে, প্রায় মরিয়া হয়ে দোকানদার ডেকে উঠলো, "স্যার, আপনি দুটো নিয়ে যান, ১৮০ দেবেন"। স্যার তখন মূক ও বধির, মন দিয়ে কেসি দাসের লাল সাইনবোর্ড দেখছেন, পেছনে ঘোরার সাহস দেখাননি। আর ঘুরেই বা কি লাভ, ওয়ালেট হারিয়ে ফেলি, তাই সেটাও ওনার ব্যাগেই আছে। স্যার এখন ড্রাইভার মাত্র।"
আরও পড়ুন- 'হিজাব কোনও ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ নয়', হিজাব বিতর্কে মুখ খুললেন জাইরা ওয়াসিম
শেষ পর্যন্ত দুটি মোবাইল কভার ১৫০ টাকায় রীতিমতো আদায় করলেন টেলি অভিনেত্রী। সব্যসাচী মজার ছলে লিখছেন, "মিনিটখানেক পর, পিঠে টোকা পড়লো, অবশেষে ঘুরলাম। কান অবধি হেসে দুটো মোবাইল কভার নিয়ে উনি দাঁড়িয়ে, সগর্বে বললেন "দেড়শো ফাইনাল"। ফুচকাওয়ালা একটা স্টিলের বাটিতে তেঁতুল চটকে মাখে, দেখেছো কখনো, ঠিক ওরকম তেঁতুল চটকানো মুখ করে সিড়িঙ্গে দোকানদার জানালেন "আবার আসবেন স্যার"। পাগল না পেট খারাপ, আর আসি আমি, একা পেলে হয়তো সত্যিই গলা কুপিয়ে দেবে।"
এই পোস্টে ঐন্দ্রিলাও কমেন্ট করেছেন, "আবার যেতে হবে সময় নিয়ে।" পোস্টে হাসির রোল পড়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, দুবার ক্যানসার জয় করেছেন টেলি অভিনেত্রী। আর এই লড়াইয়ে তাঁর পাশে সব সময়ে ছিলেন সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলা কীভাবে সুস্থ হয়ে উঠছেন তা শেয়ার করতেন সব্যসাচীই। তাই এই দুজনের জুটিতে মুগ্ধ নেটিজেনও।