এদিকে ওই সংস্থা জানিয়েছে যে, অভিনেতার দেহে বিশেষ করে তাঁর মুখে এবং চোখের তলায় শারীরিক আঘাতের দাগ রয়েছে। যা মামলার জটিলতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সংস্থার কাছে অভিনেত্রী জানান যে, দুবাই যাওয়ার অনেক আগেই তাঁর শরীরে এই আঘাত লেগেছিল। আদালত প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছে।
রানিয়া রাওয়ের আইনজীবী শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং আদালতকে অনুরোধ করেন যে, হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর আইনজীবীর উপস্থিতিতে আরও তদন্তের অনুমতি দেওয়া হোক। এর বিরোধিতা করেছেন অর্থ মন্ত্রকের সিনিয়র স্থায়ী পরামর্শদাতা। গত সোমবার রাতে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সিনিয়র আইপিএস অফিসার রামচন্দ্র রাওয়ের সৎ কন্যা রানিয়াকে। ১৪.২ কেজি ওজনের সোনার বার পাচারের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। যার মূল্য ১৪.৫৬ কোটি টাকা। দুবাই থেকে এমিরেটসের উড়ানে ফিরেছিলেন তিনি।
advertisement
আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন রানিয়া:
ডিআরআই আদালতে জানিয়েছে যে, অভিযুক্ত তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। মাঝেমাঝেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছেন। শুক্রবার কোর্টে পেশ করার পর বিচারকের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন অভিনেত্রী। ডিআরআই-এর অভিযোগ, শরীরের সঙ্গে ক্রেপ ব্যান্ডেজ ও টিস্যুর মাধ্যমে সোনার বারগুলিকে পেঁচিয়েই তা পাচার করতেন অভিযুক্ত।
তদন্তের লক্ষ্য হল, গোটা সিন্ডিকেটকে খুঁজে বার করা। আপাতত ৩ দিনের জন্য রানিয়াকে ডিআরআই হেফাজতে রিম্যান্ড করা হয়েছে। হেফাজতে থাকাকালীন সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর আইনজীবী দেখা করতে পারবেন। তবে পরিবার কিংবা অন্যান্যদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি নেই অভিযুক্তের।
প্রথম বয়ানে এজেন্সির কাছে কী বললেন রানিয়া?
ডিআরআই-কে দেওয়া প্রথম তিনটি বয়ানে রানিয়া যা বলেন, তা হাতে এসেছে CNN-News18-এর। দেখে নেওয়া যাক তার সংক্ষিপ্ত রূপই।
ডিআরআই: আপনার কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা সোনার বিষয়ে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩.৩.২০২৫/ ৪.৩.২০২৫ তারিখের মহাজারটি অনুগ্রহ করে পড়ুন এবং মন্তব্য করুন।
রানিয়া: আমি ওই দিন বিমানবন্দরে জারি করা মহাজারটি পড়েছি। আর সেটা যে আমি দেখেছি, তার প্রমাণ রেখে আমি তারিখ দিয়ে স্বাক্ষর করেছি। এতে লেখা কন্টেন্টের সঙ্গে আমি সম্মত হয়েছি। আমি পুনরায় বলছি যে, মহাজার কার্যধারার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম এবং স্বীকার করছি যে, আমার কাছ থেকে ১৭টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়েছে। এই বিচার যতটা সম্ভব গোপন রাখা যায়, সেটাই অনুরোধ করব।
ডিআরআই: সাম্প্রতিক অতীতে বিদেশের কোন কোন জায়গায় এবং সেই সব জায়গায় কত বার গিয়েছেন, সেটা বলুন।
রানিয়া: আমি ইউরোপ, আমেরিকা এবং পশ্চিম এশিয়া বিশেষ করে দুবাই এবং সৌদি আরব গিয়েছি। আমি বলতে চাই যে, যেহেতু আমি যথেষ্ট বিশ্রাম পাচ্ছি না, তাই আমি ক্লান্ত।
ডিআরআই: আর কিছু কি বলতে চান?
রানিয়া: আমার আর কিছু বলার নেই। আমি আবারও বলছি যে, আমি চলমান তদন্তে সহযোগিতা করব এবং যখনই ডাকা হবে, তখনই আপনাদের সামনে হাজির হব। বয়ান রেকর্ডের সময় কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করা হয়নি। আমাকে সময়ে সময়ে খাবার ও পানীয় দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমার খিদে পায়নি, তাই খাইনি। শুধু জল খেয়েছি। কোনও বলপ্রয়োগ, হুমকি কিংবা প্রলোভন ছাড়াই স্বেচ্ছায় এবং আমার স্বাভাবিক মানসিক অবস্থায় আমি এই বিবৃতিটি দিয়েছি। এই বিবৃতির বিষয়বস্তু পড়া হয়েছে এবং বিষয়বস্তু আমার দ্বারা প্রদত্ত সাক্ষ্য অনুসারে।