পর্ষদের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বড় ও নামী স্কুলের পড়ুয়ারা নবম শ্রেণিতে প্রত্যাশিত ফল করতে না পারলে সেই স্কুলে তাঁদের পাশ করানো হয় না। মাধ্যমিকে ভাল ফল বজায় রাখতে এই স্কুলগুলি কড়া নীতি অনুসরণ করে। ফলে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের একটি বছর নষ্ট করতে চান না এবং অপেক্ষাকৃত ছোট বা কম পরিচিত স্কুলে ভর্তি করিয়ে সেখান থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসানোর চেষ্টা করেন। এই প্রবণতাই পর্ষদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
advertisement
প্রত্যেক বিধানসভায় ১১টা করে শুনানি কেন্দ্র, SIR-এ ডাক পেলে কী কী করা হবে? ৩২ লক্ষ ভোটারকে নোটিস
স্ত্রীর নামে পোস্টঅফিসে ১ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোসিট করলে ২ বছরে কত টাকা মিলবে?
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নবম শ্রেণিতে পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাওয়ার পর অনেক সময় স্কুল বদলি নেওয়া হলেও সেই তথ্য যথাসময়ে পর্ষদকে জানানো হয় না। তার ফলেই অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছে যায় আগের স্কুলে, তৈরি হয় বিভ্রান্তি ও প্রশাসনিক জটিলতা। এই সমস্যা বন্ধ করতেই এবার বদলি নিয়মে কড়াকড়ি করা হচ্ছে।
নতুন নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, যে সব পড়ুয়া তিন বছর বা তার বেশি সময় পড়াশোনা বন্ধ রেখে ফের পড়াশোনা শুরু করতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রেও বিশেষ নিয়ম মানতে হবে। কেন তিন বছর বা তার বেশি সময় পড়াশোনা বন্ধ ছিল, তার লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে পর্ষদকে। পাশাপাশি কোন শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন, তার প্রাসঙ্গিক নথিও জমা দিতে হবে।
তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষকমহলের একাংশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, অনেক স্কুলেই পড়ুয়ার সংখ্যা এমনিতেই কম। সেই স্কুলগুলি এতদিন মেধার সঙ্গে কিছুটা আপোস করলেও অন্য স্কুল থেকে পড়ুয়া ভর্তি নিয়ে মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রসংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ পেত। এখন সর্বাধিক ১০ জনে সীমা বেঁধে দেওয়ায় সেই স্কুলগুলি সমস্যায় পড়তে পারে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া সংখ্যা অত্যন্ত কম—এমন স্কুলের সংখ্যাও নেহাত কম নয়।
পড়ুয়াদের দিক থেকেও অসুবিধা হতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। কলকাতার পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধানশিক্ষক বাসবকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে, এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত পর্ষদ ও সরকারের। তাঁর আশঙ্কা, নতুন নিয়মে পড়ুয়াদের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হতে পারে।
