পুলিশের আরও দাবি, অভিযানে গিয়ে হাতেনাতে কয়েকজনকে পাকড়াও করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই মোট ১২ জনের হদিশ পান তদন্তকারী অফিসাররা। এরপরই তাদের গ্রেফতার করা হয়। ওই বেআইনি কল সেন্টার থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি ল্যাপটপ, একটি সিপিইউ, তিনটি হার্ড ডিস্ক, দুটি ওয়াইফাই রাউটার, অফিসের অ্যাটেইনডান্স রেজিস্ট্রার খাতা সহ একাধিক নথিপত্র। ওই ১২জন ছাড়াও আর কতজন যুক্ত রয়েছে এই চক্রের সঙ্গে খোঁজ চালাচ্ছে পুলিস। ধৃতদের অধিকাংশের বাড়ি তিলজলা, বেনিয়াপুকুর থানা এলাকায়। ধৃতদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
advertisement
কাদের সাথে প্রতারণা হত? জানা গিয়েছে যারা অনলাইন কেনাকাটা করেন, তাদের ফাঁদে ফেলা হত। অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে কেউ কোনও কিছু কেনার জন্য অর্ডার দিলে, তাদের তথ্য চুরি করে যোগাযোগ করত এই কল সেন্টারের কর্মীরা। এরপর কোনও গ্রাহক তার অর্ডার বাতিল করলে বা এক্সচেঞ্জ করতে চাইলে শুরু হত প্রতারণা। গ্রাহকদের প্রতারকরা জানাতেন আপনার কাছে একটি লিঙ্ক পাঠানো হবে, তাতে ফর্ম থাকবে। তা পূরণ করতে হবে। গ্রাহকরা এই লিঙ্কে ক্লিক করলেই গ্রাহকদের মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের সমস্ত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হত। এমন কি হ্যাক পর্যন্ত করা হত। সমাধানের পথ বলেও প্রতারণা করা হত। সফটওয়্যার সার্ভিস দেওয়া হবে বলে অন লাইনে লেনদেন করতে বলা হত৷ এভাবে টাকা প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যেত কিন্তু কাজ হত না…এই গ্রুপটির টার্গেট ছিল ইংল্যান্ড এবং আমেরিকার গ্রাহকরা৷
প্রসঙ্গত গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে এই রকম আরও একটি বেআইনি কল সেন্টারে অভিযান চালিয়ে ১৯জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সময় অভিযোগ ছিল কলকাতায় বসে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের সাথে প্রতারণা করা হয়। পুলিশের দাবি, এই বেআইনি কল সেন্টার গুলো মূলত কোনও নামি সংস্থার নাম ভাড়িয়ে বিভিন্ন গ্রাহকদের সহায়তা দেওয়ার নামে প্রতারণা করে থাকে। বিশেষ করে এই কল সেন্টারগুলি থেকে সফটওয়্যার সার্ভিস বা তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত সহায়তা দেওয়া হয়, এই বলেই বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষকে ফোন করে ফাঁদে ফেরার চক্রান্ত করা হয়। সহায়তা দেওয়া হবে, এই বলে গ্রাহকের থেকে অন লাইনে টাকা নিয়ে সহায়তা না দেওয়ার অভিযোগ থাকে এদের বিরুদ্ধে। এমন কি অনলাইনে টাকা নেওয়া সময় ব্যাঙ্কের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। সেই রকম পরিকল্পনা ছিল বলেই দাবি পুলিশের।
(Amit Sarkar)