গত কয়েক বছর ধরে কালনা মহকুমা জুড়ে একের পর এক মহিলাকে চেন দিয়ে পেঁচিয়ে লোহার রড মাথায় মেরে খুন করা হচ্ছিল। একই কায়দায় একের পর খুনের ঘটনায় মহকুমা জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। কিনারা করতে না পেরে চিন্তিত হয়ে পড়ে পুলিশও। গত বছর 30 মে কালনা থানার সিঙ্গের কোনে বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায় এক দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে বাড়িতে একলা পেয়ে মারধর ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগে কামরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বেশ কয়েকদিন পর বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়। ওই নাবালিকা বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকতো। মা পরিচারিকার কাজ করতেন। সেদিন দুপুরে ওই ছাত্রীর একলা থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে বাড়িতে ঢুকেছিল অভিযুক্ত। বিকেলে বাড়ি ফিরে মেয়েকে রক্তাক্ত ও অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান মা। আশংকা জনক অবস্থায় তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
advertisement
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা মহকুমা ও তার আশপাশ এলাকায় সিরিয়াল কিলিংয়ে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর কামরুজ্জামান সিঙ্গের কোনের ঘটনায় যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করে। কামরুজ্জামান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই ছাত্রী একলা আছে বুঝে বাড়িতে ঢুকে পড়ে সে। এরপর ওই ছাত্রীর উপর ধর্ষণ ও নির্যাতনের পাশাপাশি তার মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে সে। শ্বাসরোধ করে খূনেরও চেষ্টা হয়। ওই ছাত্রী অচৈতন্য হয়ে পড়লে বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে অভিযুক্ত চম্পট দেয়। এরপর ওই ছাত্রীর মৃত্যু হলে অন্যান্য অভিযোগের সঙ্গে কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে খুনের মামলাও যুক্ত হয়। সিঙ্গের কোনের ঘটনায় মোট পাঁচটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সবকটিতেই সে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে,'সিরিয়াল কিলার' চেন ম্যান কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এখন তেরোটি মামলা চলছে। একটি ছাড়া বাকি সব মামলার ট্রায়াল চলছে। কালনা মহকুমা এলাকায় নয়টি, মেমারি থানা এলাকায় দুটি, হুগলি জেলার বলাগড় থানা এলাকায় দুটি মামলা রয়েছে । ২০১৩ সালে সে মন্তেশ্বরে প্রথম খুন করে বলে অভিযোগ। সর্বশেষ ঘটনাটি সে ঘটায় কালনার সিঙ্গের কোনে।
Saradindu Ghosh