প্রযুক্তির দিকে চোখ রাখলে দ্বিতীয় কারণটাই বেছে নেবেন অনেকে, প্রথম প্রসঙ্গ নিয়ে অনেকে মজা পেলেও বিতর্ক চলবে বহু দূর। তবে সব কিছু সরিয়ে রেখে বলাই যায় যে এই রান্নাঘরের অস্তিত্ব চোখে দেখা যায় না বলেই এই নাম। যে কারণে গোস্ট কিচেন, ভার্চুয়াল কিচেন, স্যাটেলাইট কিচেনের মতো আরও অনেক নাম জুড়ে গিয়েছে এই ব্যবসার সঙ্গে।
advertisement
আরও পড়ুন: রুপোর দাম বাড়ল, আর সোনা? আজকের দাম জেনে নিন বিনিয়োগ-কেনাকাটার আগে!
ক্লাউড কিচেন আদতে কী
যদি বলা যায় যে এও এক রেস্তোরাঁ, তাহলে খুব একটা ভুল হবে না। তফাত হচ্ছে এই যে রেস্তোরাঁ দিতে গেলে যেরকম একটা পৃথক জায়গার দরকার হয়, এখানে সে ঝক্কি নেই, বাড়ির হেঁশেল থেকেই চাইলে দিব্যি কাজ সামলে নেওয়া যায়। তবে, সবচেয়ে বড় তফাত হল এই যে এক্ষেত্রে রেস্তোরাঁর মতো বসে খাওয়ার বন্দোবস্ত থাকে না। অর্থাৎ, এই ব্যবসার পুরোটাই ভর দিয়ে থাকে অনলাইন অর্ডারে। গ্রাহক মেন্যু দেখে অর্ডার দিলেন, ক্লাউড কিচেনে রান্না হল, তার পর তা ডেলিভারি চলে গেল গ্রাহকের ঠিকানায়। স্বাদ ভাল লাগলে তিনিও খুশি, বিক্রি হল বলে ক্লাউড কিচেনের মালিক তো বটেই!
কাজেই, ওয়ার্ক ফ্রম হোমের জমানায় কেউ যদি এই কায়দায় কুক ফ্রম হোম করে উপার্জন করতে চান, অসুবিধার কিছু নেই। শুধু এর জন্য কী কী করতে হবে, সেই ধাপগুলো ভাল করে ঝালিয়ে নিলেই হল। সেগুলো কী, দেখে নেওয়া যাক এক এক করে।
আরও পড়ুন: Gold Silver Price: বিয়ের মরশুমের মধ্যেই দুঃসংবাদ! আরও বাড়ল সোনা-রুপোর দাম, কত হল?
লোকেশন
রেস্তোরাঁ দিতে গেলে যেরকম জনসমাগমের দিকে নজর রেখে একটা জায়গা বেছে নিতে হয়, এখানে ব্যাপারটা ঠিক সেরকম নয়। রান্নার লোকেশন তো এখানে নিজের বাড়িই! তাহলে এক্ষেত্রে লোকেশন বলতে বুঝে নিতে হবে বিক্রিবাটার জায়গা। অর্থাৎ এমন জায়গাকে উদ্দেশ্য করেই এই ক্লাউড কিচেন খুলতে হবে, যেখান থেকে অর্ডার আসার সম্ভাবনা বেশ ভাল মতোই থাকে, না হলে তো খাটুনিটাই মাটি! যে কোনও ব্যবসার এটাই মূল শর্ত- বাজার সমীক্ষা।
রান্নার ধরন
লোকেশন ঠিক করে নেওয়ার পরে আসে সিদ্ধান্তের এই দ্বিতীয় ধাপ- কেমন রান্না পরিবেশন করা হবে বা স্পষ্ট ভাবে বলে ক্যুইজিন ঠিক কী রকম হবে, চাইনিজ না মোগলাই না বাড়ির বাঙালি খাবার এই সব! কেন না, এটা ভেবে দেখা দরকার, যে জায়গায় বিক্রি করতে চাওয়া হচ্ছে, সেখানকার ভিড় কেমন খাবার বেশি পছন্দ করে, কেমন খাবার ঘন ঘন কিনে খেয়ে থাকে। এটা বুঝে নিলে বিক্রির ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিত থাকা যায়।
বিক্রি কীভাবে হবে
প্রথমেই এই ব্যাপারটা সহজে একবার বলা হয়েছে- ক্রেতা অর্ডার দেবেন অনলাইনে, তাঁর কাছে খাবার পৌঁছে যাবে। বেশ কথা! কিন্তু তিনি জানবেন কী করে যে তাঁর অর্ডারের অপেক্ষায় রয়েছে এক ক্লাউড কিচেন?
এক্ষেত্রে কাজে আসবে সুইগি, জোমাটোর মতো খাবার ডেলিভারি করার সংস্থা। তাদের সঙ্গে টাই আপ করতে হবে। সাধারণত এই ধরনের ফুড ডেলিভারি সংস্থাগুলো প্রতি অর্ডার পিছু দামের ১৮-৩০ শতাংশ টাকা নিয়ে থাকে। তাতেও অসুবিধা নেই, সেই হার জেনে নিয়ে, নিজের লাভ রেখে, ক্রেতার সঙ্গতির সঙ্গে মিলিয়ে খাবারের দাম ঠিক করলেই হল। এছাড়া নিজের আলাদা একটা ওয়েবসাইটও বানিয়ে নেওয়া যায়। অনেক সংস্থা বিনামূল্যে ওয়েবসাইট বানিয়ে দেয়, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই হল।
অনলাইন কিচেনের লাইসেন্স
ব্যবসা যেহেতু, লাইসেন্স তো একটা লাগবেই- তবে তার জন্য সাধারণত হাজার দশেক টাকার বেশি খরচ করার দরকার পড়ে না।
রান্নার সরঞ্জাম
এখানেও একটা মূলধন লগ্নির ব্যাপার আছে, এর পিছনে কিছু খরচ করতে হবে। বড় দেখে ফ্রিজ কিনতে হবে। মোটের ওপরে কী রান্না করা হবে, তার পিছনে এই ব্যবস্থাপনার খরচের ভার নির্ভর করে। ধরা যাক, কেউ পাস্তা-পিৎজা-স্যান্ডউইচ সরবরাহ করতে চান, এক্ষেত্রে আনুমানিক ২ লাখ টাকার সেট আপের দরকার পড়ে।
রান্নার সহকারীর বেতন
মাথায় রাখতে হবে এই ব্যাপারটাও- এক যদি না নিজেরই সেটা সামাল দেওয়ার মতো সামর্থ্য থাকে।
পাবলিসিটি
এর পিছনে খরচ বলতে ইন্টারনেটের পয়সা আর নিজের সময়- এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। নিজের ক্লাউড কিচেনকে জনপ্রিয় করে তুলতে হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তো জোরদার প্রোমোশন চালাতেই হবে, পোস্ট দিতে হবে প্রায় প্রতি ঘণ্টায়- তবেই তো সেটা সবার নজরে পড়বে।