রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা আরবিআই গত বছরের জুন মাসে এই ধরনের এটিএম ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে ২১ টাকা করে চার্জ নেওয়ার ক্ষেত্রে সম্মতি দিয়েছে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সংখ্যার এটিএম ট্রানজাকশন শেষ হয়ে গেলে যে কোনও এটিএম ট্রানজাকশন করলেই ব্যাঙ্কের তরফে ২১ টাকা করে চার্জ করা হয়, যা ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, ভারতের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এটিএম ট্রানজাকশনের চার্জ এবং লিমিট বা সীমা।
advertisement
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই):
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা এসবিআই প্রতি মাসে গ্রাহকদের বিনামূল্যে ৫টি এটিএম ট্রানজাকশন করার সুবিধা দেয়। কিন্তু ৬টি মেট্রো শহরে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া নিজেদের গ্রাহকদের প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৩টি করে এটিএম ট্রানজাকশন করার সুবিধা দেয়। এই ৬টি মেট্রো শহরের তালিকায় রয়েছে - দিল্লি, কলকাতা, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদ। এই ৬টি শহর ছাড়া অন্যান্য শহরে প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৫টি করে এটিএম ট্রানজাকশনের সুবিধা পাওয়া যায়।
৩টি এটিএম ট্রানজাকশনের সীমা শেষ হয়ে গেলে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে নন-ফিনান্সিয়াল ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে এসবিআই-এর এটিএম কার্ডের জন্য ৫ টাকা এবং অন্যান্য ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ডের জন্য ৮ টাকা করে চার্জ করা হয়। এর সঙ্গে যোগ করা হয় জিএসটি রেটও। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গ্রাহকরা এবং অন্যান্য ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা এটিএম কার্ডের মাধ্যমে ১০ টাকা তুললে ২০ টাকা চার্জ করা হয়, এর সঙ্গে আবার যোগ হয় জিএসটি।
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি):
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক তাদের সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের জন্য ৬টি মেট্রো সিটিতে ৩টি এবং অন্যান্য শহরে প্রতিমাসে ৫টি করে ফ্রিতে এটিএম ট্রানজাকশনের সুবিধা দেয়। ফ্রি ট্রানজাকশন শেষ হয়ে গেলে টাকা তোলার জন্য প্রতি ট্রানজাকশনে ১০ টাকা করে চার্জ করা হয়। নন ফাইনান্সিয়াল ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে প্রতিটি ট্রানজাকশনের ৯ টাকা করে চার্জ করা হয়। কম টাকা থাকলে সেই ট্রানজাকশন বাতিল হয়ে গেলে ৫ টাকা করে চার্জ করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজাকশনের জন্য টাকা তোলার ক্ষেত্রে প্রতিটি ট্রানজাকশনে ১৫০ টাকা করে চার্জ করা হয়। নন ফাইনান্সিয়াল ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে ৩০ টাকা করে চার্জ করা হয়।
প্ল্যাটিনাম কার্ড হোল্ডারদের জন্য:
প্রতিদিনের টাকা তোলার লিমিট ৫০,০০০ টাকা।
এক বারে ২০ হাজার টাকার বেশি তোলা যাবে না।
Ecom/Pos লিমিট ১,২৫,০০০ টাকা
ক্লাসিক কার্ড হোল্ডারদের জন্য:
প্রতিদিনের টাকা তোলার লিমিট ২৫,০০০ টাকা।
এক বারে ২০ হাজার টাকার বেশি তোলা যাবে না।
Ecom/Pos লিমিট ৬০,০০০ টাকা
গোল্ড কার্ড হোল্ডারদের জন্য:
প্রতিদিনের টাকা তোলার লিমিট ৫০,০০০ টাকা।
এক বারে ২০ হাজার টাকার বেশি তোলা যাবে না।
Ecom/Pos লিমিট ১,২৫,০০০ টাকা
এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক:
এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্ট এবং স্যালারি অ্যাকাউন্টের গ্রাহকরা নির্দিষ্ট সংখ্যার এটিএম ট্রানজাকশন শেষ করে ফেললে প্রতিটি ট্রানজাকশনে ২১ টাকা করে চার্জ করা হয়, এর সঙ্গে যুক্ত হবে ট্যাক্স। এই ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের মেট্রো শহরে বিনামূল্যে ৩টি ট্রানজাকশন এবং অন্যান্য শহরে বিনামূল্যে ৫টি ট্রানজাকশনের সুবিধা দেওয়া হয়। নন-ফিনান্সিয়াল ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে প্রতিটি ট্রানজাকশনে ৮.৫০ টাকা করে চার্জ করা হয়। এর সঙ্গে যোগ করা হয় ট্যাক্স।
ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে টাকা তোলার জন্য প্রতিটি ট্রানজাকশনের ১২৫ টাকা করে চার্জ করা হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় ট্যাক্স। নন-ফিনান্সিয়াল ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে ২৫ টাকা এবং ট্যাক্স। এই ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড ব্যবহার করে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকার বেশি তোলা যায় না। এই ব্যাঙ্কের ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে প্রতিদিন ২৫ হাজার টাকার বেশি তোলা যায় না।।
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক:
এই ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের জন্য ৫টি করে বিনামূল্যে ট্রানজাকশনের সুবিধা দেওয়া হয় এবং ৬টি মেট্রো শহরে ৩টি করে বিনামূল্যে ট্রানজাকশনের সুবিধা দেওয়া হয়। এরপর টাকা তোলার জন্য প্রতিটি ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে ২১ টাকা করে চার্জ করা হয়। নন-ফিনান্সিয়াল ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে ৮.৫০ টাকা করে চার্জ করা হয়। নন হোম ব্রাঞ্চের ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা ট্রানজাকশনে ৫ টাকা এবং ২৫ হাজার টাকার উপর ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে ১৫০ টাকা করে চার্জ করা হয়।। প্রতিটি ট্রানজাকশনে টাকা তোলার লিমিট ২৫ হাজার টাকা। প্রতিদিন ৫০,০০০ টাকার বেশি তোলা যায় না।
অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক:
এই ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের মেট্রো সিটিতে ৩টি করে বিনামূল্যে ট্রানজাকশনের সুবিধা দেওয়া হয় এবং অন্যান্য শহরে ৪টি করে বিনামূল্যে ট্রানজাকশনের সুবিধা দেওয়া হয়।। এর পর টাকা তোলার জন্য প্রতিটি ট্রানজাকশনে ২১ টাকা করে চার্জ করা হয়। নন-ফিনান্সিয়াল ট্রানজাকশনের ক্ষেত্রে ১০ টাকা করে চার্জ করা হয়।। প্রতিদিন টাকা তোলার লিমিট ৪০ হাজার টাকা।