ওই ব্যবহারকারীর দাবি, এটা কোনও ধন-সম্পদ অর্জনের গল্প নয়। বরং এই গল্পটা ছিল অন্যরকম। আসলে হাল ছেড়ে দেওয়া সহজ হলেও চালিয়ে যাওয়াই ছিল এই গল্পের মূল উপজীব্য। তিনি লিখেছেন যে, ‘আমি কখনওই উজ্জ্বল ছাত্র ছিলাম না। আমি এমন ধরনের পড়ুয়া ছিলাম, যাকে দেখিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলতেন যে, ওর মতো হওয়া উচিত নয়। ১৯৯০ সালে ঝুমকা সিটি বরেলিতে তাঁর জন্ম। ছোটবেলা থেকে বরাবরই আমি দুর্দশার মধ্যে ছিলাম। ভাল ফল করতে পারতাম না। কোনও রকমে পরীক্ষায় পাশ করতাম। বারবার খালি মা-বাবাকে লিখে এটাই প্রতিশ্রুতি দিতাম যে, পরের বার ভাল ফল করব।’
advertisement
২০১৩ সালে নয়ডায় তিনি নিজের প্রথম চাকরিটি পান। মাসিক আয় ছিল মাত্র ৭০০০ টাকা। এরপরেই অবশ্য পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করার জন্য বেঙ্গালুরু চলে যান। একটা ভাল অবস্থানে আসার আগে ৪৫টি চাকরিতে জুটেছিল প্রত্যাখ্যান। তবে নিজের উন্নতির জন্য সমস্ত কৃতিত্ব তিনি দিয়েছেন এক সিনিয়র এইচআর-এর পরামর্শকেই। যিনি বলেছিলেন যে, ‘ভাড়ার মতো করেই অর্থ সঞ্চয় করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনও রকম আপোস করা যাবে না। সেই সঙ্গে ক্রেডিট কার্ড থেকে দূরে থাকতে হবে। ওঁরা আসলে ধার দেয় না। বরং জালে ফাঁসিয়ে নেয়।’
এই পরামর্শ পাওয়ার পরে ওই পোস্টদাতা খরচ হওয়া প্রত্যেকটা টাকার হিসাব রাখতেন। অপ্রয়োজনীয় ক্রেডিট কার্ড এড়িয়ে চলতেন। আর অত্যন্ত মিতব্যয়ী হয়ে জীবনযাপন করেছেন। ট্যাক্স সেভিং ফিক্সড ডিপোজিটে বিনিয়োগ করেছেন। এরপর এসআইপি এবং স্টকে বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকেছেন।
২০১৮ সালের মধ্যে তাঁর সঞ্চয় বা সেভিংস ৫ লক্ষ টাকায় পৌঁছে যায়। চাকরি পরিবর্তনের পরে জয়েনিং বোনাস এবং রিলোকেশন অ্যালাওয়েন্স হিসেবে পান ২ লক্ষ টাকা। এদিকে নয়ডায় ৫৫ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা দামের নিজের প্রথম ফ্ল্যাটটি কেনার জন্য ৭ লক্ষ টাকা দিয়ে তাঁকে সাহায্য করেন তাঁর বাবা। ওই পোস্টদাতার বক্তব্য, ‘আমরা সম্মত হয়েছিলাম যে, যদি আমি শোধ করতে ব্যর্থ হই, তাহলে ফ্ল্যাট বিক্রি করে দেওয়া হবে। বেলআউটের কোনও জায়গাই নেই।’এরপর বারোর বদলে ১৪টি মাসিক কিস্তি পরিশোধ করেন ওই ব্যক্তি। লোনের বোঝা কমাতে বোনাসটা ব্যবহার করেছিলেন তিনি।
২০২৩ সালে বিয়ে করেন ওই ব্যক্তি। এরপর তাঁর স্ত্রী যখন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন, তখন বেঙ্গালুরুতে একটি সম্পত্তি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন ওই দম্পতি। এর জন্য আরও ৪০ লক্ষ টাকা লোন নিতে হয় তাঁদের। এর পাশাপাশি সেই সময় ১০ লক্ষ টাকার কার লোনও নিয়েছিলেন তাঁরা। সব মিলিয়ে ১ কোটি টাকা লোন নিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর বক্তব্য, ‘নিয়ম ও কৌশল মেনে আমি ৭৫-৮০ শতাংশ তত দিনে শোধ করে ফেলেছিলাম। আমি আজই সেগুলি ক্লোজ করে দিতে পারতাম। কিন্তু ট্যাক্স বেনিফিটের জন্য সেটা রেখে দিয়েছি।’
রেডিট ব্যবহারকারী সব শেষে বলেন যে, ‘আজ ৩৫ বছর বয়সে আমি ঋণমুক্ত। রয়েছে ২টি অ্যাপার্টমেন্ট, সুখী বৈবাহিক জীবন। আর রয়েছে একটা সন্তান, যে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে জানবে, ওর বাবা কোনও দিন হাল ছাড়েনি।’ ওই ব্যক্তির এহেন স্ট্রাগলের প্রশংসাই করেছেন নেটিজেনরা।