রাজ্যের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান। এই জেলায় প্রচুর ধান উৎপন্ন হয়। এই জেলার কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে ধান চাষই হল মূল ভরকেন্দ্র। এই চাষকে আরও লাভজনক ও বৈজ্ঞানিক করে তুলতে পূর্ব বর্ধমান জেলার দক্ষিণ দামোদর এলাকার খণ্ডঘোষ থানার কৈয়ড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় গোপীনাথপুর গ্রামে নজর কাড়া উদ্যোগ নিয়েছেন এক চাষি।
advertisement
প্রায় পঞ্চাশ বিঘা জমিতে তিনি সফলভাবে চাষ করছেন হাইব্রিড ধান। এই ধানচাষে বিশেষ পদ্ধতিতে দু ধরণের ধানগাছের মধ্যে পরাগরেণুর সঙ্করায়নের মাধ্যমে হাইব্রিড ফসল উৎপন্ন হয়। দড়ি বা লাঠির মাধ্যমে নাড়াচাড়া করে ছড়ানো হয় পরাগরেণু। কৃষকদের মতে, এই পদ্ধতির জন্য প্রয়োজন উর্বর মাটি, পর্যাপ্ত সূর্যালোক, উন্নত সেচ ও জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের সঠিক নিয়ন্ত্রণ।
কৃষি বিশেষজ্ঞ সুশান্ত চন্দ্র কর্মকার জানিয়েছেন, এই হাইব্রিড ধানচাষ এফ ওয়ান (ফাউন্ডেশন ফার্স্ট) এবং এফ টু (ফাউন্ডেশন সেকেন্ড) ধাপে হয়ে থাকে। প্রথম ধাপে বীজ উৎপাদিত হয়, আর দ্বিতীয় ধাপে সেই ফসল খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বড়ো গোপীনাথপুর গ্রামের ধান চাষি সন্দীপ মণ্ডল জানান, ” ৫০ বিঘা জমিতে এই ধানের চাষ করেছি। প্রথমে এক ধরনের ধান লাগানো হয়, তারপর অন্য ধান। এরপর প্রথম রোওয়া ধান কেটে নেওয়া হয়। পরে কাটা হবে অন্য ধান। এইভাবে হাইব্রিড ধান তৈরি হচ্ছে। এতে বীজ উৎপাদন হয় এবং এই ধান ভবিষ্যতে খাবার হিসেবেও ব্যবহার হয়। আগেও করেছি, এবারও করছি। ভালো ফলনও পাচ্ছি। সরকার আরও সহযোগিতা করলে এই চাষ বাড়তে পারে।”
কৃষকরা বলছেন, এই উদ্যোগ নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের ধানচাষে। এই পদ্ধতি ভবিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তার দিশা দেখাতে পারে। পাশাপাশি আর্থ সামাজিক উন্নয়নও ঘটাতে পারে।