TRENDING:

Janmashtami 2021: জানুন কৃষ্ণজন্মের গূঢ়় তাৎপর্য; নিশীথে কোন লগ্নে কী ভাবে উদযাপন করবেন শুভ জন্মদিন ?

Last Updated:

আমাদের পাপের গ্লানি পরিহার করার জন্যই কৃষ্ণের জন্ম, যুগে যুগে প্রতি বছরে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর উদযাপন তার সোল্লাস ঘোষণা!

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত।
advertisement

অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্॥

পরিত্রাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।

ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে॥

"যখনই ধর্মের গ্লানি হয়, অধর্মের অভ্যুত্থান ঘটে, তখনই হে ভারত, পাপীদের পরিত্রাণ এবং দুষ্কৃতীদের বিনাশ করে ধর্মসংস্থাপন করার জন্য আমি নিজের পরমাত্মাকে মায়া দ্বারা সৃজন করে যুগে যুগে অবতীর্ণ হই!"

মহাভারতের (Mahabharata) ভীষ্মপর্বের যে আঠেরোটি অধ্যায় স্বয়ং শ্রীভগবানের মুখনিঃসৃত, যা শ্রীমদভাগবতগীতা (Srimad Bhagavad Gita) নামে সুপরিচিত, তার চতুর্থ অধ্যায়ে এই প্রতিশ্রুতির পরিচয় পাওয়া যায়। বস্তুত গীতার এই শ্লোকদু'টিই কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর (Krishna Janmashtami) গূঢ় তাৎপর্য অবধাবন করার পক্ষে যথেষ্ট। আমাদের পাপের গ্লানি পরিহার করার জন্যই কৃষ্ণের জন্ম, যুগে যুগে প্রতি বছরে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর উদযাপন তার সোল্লাস ঘোষণা!

advertisement

কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর পুণ্যলগ্ন:

কৃষ্ণ স্বয়ং পূর্ণব্রহ্ম না কি অসাধারণ কূটবুদ্ধিসম্পন্ন এক বৃষ্ণিবংশীয় রাজকুমার- সে বিতর্ক আপাতত থাক! যদি তাঁকে বিষ্ণুর অবতার রূপেই স্বীকার করে নিতে হয়, তাহলে তিনি অংশাবতার না পূর্ণাবতার, সে বিচারও তোলা থাক শাস্ত্রের আওতায়। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম কৃষ্ণপ্রসঙ্গে যে বিশুদ্ধ ভক্তিবাদকে আশ্রয় করে, তার সঙ্গে ঐতিহাসিক হিসাব যোগ করলে দেখা যায় যে ৩২২৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ কৃষ্ণের জন্মসাল রূপে পরিগণিত হচ্ছে। তাঁর জন্মলগ্নে ছিল রোহিণী নক্ষত্র, তিথি ছিল অষ্টমী। এই সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তথ্য যোগ করে ঐতিহাসিক এবং জ্যোতির্শাস্ত্রবিদরা দাবি করছেন যে কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল ইংরেজি ক্যালেন্ডার মতে ১৮ অথবা ২১ অগাস্ট তারিখে। আশ্চর্যের বিষয় এই- চলতি বছরেও জন্মাষ্টমী তিথি পড়েছে অগাস্ট মাসেই, তবে মধ্যরাত্রির হিসাব অনুযায়ী তারিখ হবে ৩১ অগাস্ট, ২০২১।

advertisement

বলা হয়, কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন মধ্যরাত্রে। সেই জন্য জন্মাষ্টমীর উদযাপন হবে নিশীথপূজায়, চলতি বছরে ৩১ অগাস্ট রাত ১২টা ১৭ মিনিট থেকে রাত ১টা ০৩ মিনিট পর্যন্ত ৪৬ মিনিটব্যাপী সময়ই কৃষ্ণের আরাধনার জন্য প্রশস্ত। যেহেতু এই অষ্টমী তিথির পূজা ভগবানের শুভ জন্মদিন উদযাপন, সেই হেতু তা কৃষ্ণের বাললীলার একাধিক মাহাত্ম্যযুক্ত। এর মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় হল বালকৃষ্ণ (Bal Krishna) বা গোপালের ননী চুরি, যাকে কেন্দ্র করে দেশে দহি হান্ডির (Dahi Handi) আসর বসে। এই দহি হান্ডির উৎসব উদযাপিত হবে ৩১ অগাস্ট, মঙ্গলবার দিবাভাগে।

advertisement

কৃষ্ণ জন্মকথা:

পুরাণ এবং ইতিহাস মতে, মথুরার যুবরাজ কংসের ভগিনী দেবকীর সঙ্গে বিবাহ হয়েছিল বৃষ্ণিবংশীয় রাজা বসুদেবের। কংস নিজে রথ চালিয়ে দেবকী এবং বসুদেবকে পৌঁছে দিতে চলেছিলেন তাঁদের রাজ্যে। অকস্মাৎ দৈববাণী হয় কংসের উদ্দেশে- তিনি যাঁকে এত সমাদরে রথে বসিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, সেই দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তান-ই তাঁর মৃত্যুর কারণ হবে। একথা শুনে কংস তখনই হত্যা করতে উদ্যত হন দেবকীকে। এই সময়ে বসুদেব প্রতিশ্রুতি দেন যে তাঁরা প্রতি সন্তানকে জন্মের অব্যবহিত পরে তুলে দেবেন কংসের হাতে। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি, চোখে চোখে রাখার জন্য দেবকী এবং বসুদেবকে মথুরার কারাগারে নিক্ষেপ করেন কংস। পিতা উগ্রসেন এর বিরোধিতা করলে তাঁকেও কারাগারে পাঠিয়ে মথুরার সিংহাসনে অধিরোহণ করেন রাজা কংস।

advertisement

বলা হয়, দেবকী এবং বসুদেবের প্রথম ছয় সন্তানকে পাথরে আছড়ে হত্যা করেছিলেন কংস। সপ্তম গর্ভের সন্তানকে দেবতারা সঙ্কর্ষিত করেন দেবকীর গর্ভ থেকে বসুদেবের অপর পত্নী রোহিণীর গর্ভে, যিনি সেই সময়ে কংসের ভয়ে গোকুলে নন্দগোপের গৃহে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে রোহিণীর গর্ভে জন্ম নেন সেই সঙ্কর্ষিত সন্তান, এই কারণে তাঁর নাম হয় সঙ্কর্ষণ। ঋষি গর্গ তাঁর সুন্দর চেহারার জন্য নাম রাখেন রাম, দৈহিক বলের জন্য তাঁর পরিচিতি হয় বলরাম নামে।

এর পরের বছরে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে মধ্যরাত্রে দেবকীর অষ্টম গর্ভ সার্থক হয়, জন্ম নেন বসুদেবের অষ্টম সন্তান। জন্মের পরেই যমুনা পার করে বসুদেব তাঁকে গোকুলে নন্দগোপের গৃহে রেখে আসেন কংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। ওই এক তিথিতে নন্দগোপের স্ত্রী যশোদা এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন, তাঁকে বসুদেব নিয়ে আসেন মথুরার কারাগারে, তুলে দেন কংসের হাতে!

গোকুলে গোপগৃহে বসুদেবের সেই সন্তান বড় হয়ে উঠতে থাকে, ঋষি গর্গ গায়ের রঙ কালো বলে তাঁর নাম রাখেন কৃষ্ণ (Krishna)। বলা হয়, শৈশব থেকেই অত্যধিক চঞ্চল এই শিশুর দৌরাত্ম্যে অস্থির ছিল গোকুল, মাখন এবং ননী চুরি ছিল তার নিত্যকর্ম! কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ভগবানের এই বাললীলার উদ্দেশেই নিবেদিত!

কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উদযাপনের রীতি:

১. যে ভাবে উপবাসে এবং সংযমে একাদশী (Ekadashi) তিথির ব্রত উদযাপন করা হয়, কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর ব্রতও সেই ভাবে পালন করতে হবে। রোহিণী নক্ষত্র যে সময় থেকে অষ্টমী তিথিতে অবস্থান করছে, সেই সময় থেকে উপবাস শুরু করতে হবে, অষ্টমী তিথি অতিক্রান্ত হলে তবে খাদ্যগ্রহণ করা যাবে। এক্ষেত্রে সোমবার ৩০ অগাস্ট, ২০২১ তারিখ সকাল থেকেই শুরু হবে উপবাস, চলবে ৩১ অগাস্ট, ২০২১ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত।

২. একাদশীর মতো কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীতেও দানাশস্য গ্রহণ করা যাবে না। নির্জলা উপবাসে অসমর্থ হলে ফলাহার প্রযোজ্য।

৩. সকাল বেলা স্নান সেরে নিয়ে শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে শুরু করতে হবে উপবাস। এই সময়ে বালকৃষ্ণের বিগ্রহ বা ছবিতে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে 'ওম নমঃ ভগবতে বাসুদেবায়' মন্ত্র জপ করতে হবে, যতবার সামর্থ্য হয়!

৪. শিশুদের যেমন দোলনায় শুইয়ে রাখা হয়, সেই রীতি মেনে বালগোপালকেও ফুলের বা কাঠের বা ধাতুর দোলনায় স্থাপন করেন অনেকে। দোলনা জোগাড় করতে না পারলে নতুন বস্ত্রে অন্তত সাজাতে হয় বালগোপালকে; ফুল, সোনা, রূপা- যাঁর যেমন সামর্থ্য, অলঙ্কারে তাঁকে সাজানো হয়।

৫. বলা হয়, বালগোপালকে দিতে হয় ৫২ পদের ভোগ। তা বাড়িতে তৈরি করা সম্ভব না হলে সাদা মাখন এবং মিছরির ভোগ অবশ্যই দিতে হয়।

৬. মধ্যরাতের পূজা শেষে পরের দিন সকালে সেই ভোগ গ্রহণ করে উপবাস ভঙ্গ করতে হয়।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুরীর রথ এবার রঘুনাথপুরে, থিমে মন কাড়ছে আপার বেনিয়াসোলের দুর্গাপুজো মণ্ডপ
আরও দেখুন

৭. উপবাস ভঙ্গেই কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর উদযাপন শেষ হয়ে যায় না। যেহেতু ননী চুরি গোপালের বাললীলার অন্যতম জনপ্রিয় আখ্যান, সেই অনুষঙ্গে পরের দিন সকালে আয়োজিত হয় দহি হান্ডির উৎসব। দহি হান্ডিতে শ্রীভগবানকে পূজা দিয়ে একমাত্র তার পরেই শেষ হয় কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর পুণ্য উদযাপন!

বাংলা খবর/ খবর/জ্যোতিষকাহন/
Janmashtami 2021: জানুন কৃষ্ণজন্মের গূঢ়় তাৎপর্য; নিশীথে কোন লগ্নে কী ভাবে উদযাপন করবেন শুভ জন্মদিন ?
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল