গণেশের প্রতিমা: অনেকে বাড়িতেই ধুমধামের সঙ্গে গণেশ পুজো হয়। বাজার থেকে কেনা হয় প্রতিমা। এই প্রতিমা কেনার সময়েই কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে। প্রতিমার ভঙ্গি কেমন হবে, রঙ, শুঁড়ের আকার এসব কিছু পছন্দ করার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। সেগুলো মেনে চললেই তুষ্ট হবেন গণপতি। সেগুলো কী?
· বাড়ির পুজোয় বসা অবস্থায় গণেশ প্রতিমাই আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ভঙ্গির প্রতিমাকে ললিতাসন বলা হয়।
advertisement
· বসা গণেশ শান্ত এবং সংগঠিত আচরণের প্রতিনিধিত্ব করে। এই প্রতিমা বাড়িতে শান্তি নিয়ে আসে বলে মনে করা হয়।
· হেলান দেওয়া গণেশ বিলাসিতা, আরাম এবং সম্পদের প্রতীক। জীবনে এগুলো চাইলে হেলান দেওয়া ভঙ্গিতে গণপতির প্রতিমা কেনা উচিত।
আরও পড়ুন : কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক সুকন্যা! সরকারি তথ্যেই অনুব্রত কন্যার নামে ১২০ কাঠা জমি
প্রতিমার রঙ কেমন হওয়া উচিত:
· এক্ষেত্রে সাদা রঙকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। বলা হয়, যাঁরা জীবনে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি চান তাঁদের সাদা গণেশের প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করা উচিত। সাদা গণেশের ছবি থাকলেও সমান ফল পাওয়া যাবে।
·যাঁরা জীবনে বড় হতে চান তাঁদের বাড়িতে সিঁদুর রঙের গণেশ আনতে হবে।
গণেশের শুঁড়:
· নিশ্চিত করতে হবে বসা গণেশের মূর্তির শুঁড় যেন বামদিকে থাকে। এটা সুখ এবং সাফল্যের প্রতীক।
· যে গণেশ প্রতিমার শুঁড় ডানদিকে থাকে তাঁকে খুশি করা কঠিন। কারণ এটা সূর্যের শক্তিকে প্রতিনিধিত্ব করে। এই প্রতিমা পুজোর সময় কঠিন ধর্মীয় আচার পালন করতে হয়।
মাথায় রাখতে হবে: যে প্রতিমায় গণেশের সঙ্গে ইঁদুর এবং মোদক নেই সেই প্রতিমা পুজো করা উচিত নয়। ইঁদুর ভগবান গণেশের বাহন। এবং সর্বব্যাপিতার প্রতীক। অন্য দিকে, মোদক হল, গণেশের প্রিয় মিষ্টি যা তাঁকে তুষ্ট করতে নৈবেদ্য হিসেবে ভক্তরা অর্পণ করেন।
আরও পড়ুন : ভাত খাওয়ার পরই এত ঘুম পায় কেন? 'ভাত-ঘুমের' পিছনে আসল বৈজ্ঞানিক কারণ শুনলে চমকে যাবেন!
প্রতিমা রাখার পদ্ধতি:
· পশ্চিম, উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে ভগবান গণেশের মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য উপযুক্ত। প্রতিমার মুখ যেন এইদিকে থাকে।
· উত্তর দিকে প্রতিমার মুখ করা সবথেকে শুভ। কারণ এদিকেই ভগবান শিব অধিষ্ঠান করেন। এটা ঘরে সুখ নিয়ে আসে।
· এছাড়াও নিশ্চিত করতে হবে, গণপতির প্রতিমার পিছন দিক যেন বাড়ির প্রধান প্রবেশদ্বারের দিকে মুখ করে থাকে।
প্রতিটি রাশিচক্রের মন্ত্র: ভগবান গণেশের আশীর্বাদ পেতে রাশি অনুযায়ী এই মন্ত্রগুলি ১০৮ বার জপ করতে হবে।
· মেষ – ওম বিঘ্নেশ্বরায় নমঃ
· বৃষ - ওম শিবপুত্রায় নমঃ
· মিথুন - ওম লম্বোদরায় নমঃ
· কর্কট - ওম গৌরীপুত্রায় নমঃ
· সিংহ - ওম ভক্তবাসায়ে নমঃ
· কন্যা - ওম লম্বোদরায় নমঃ
· তুলা - ওম স্বর্বকল্যাণহেতবে নমঃ
· বৃশ্চিক - ওম একদন্তায় নমঃ
· ধনু - ওম উমাসুতায় নমঃ
· মকর - ওম বিঘ্নহরায় নমঃ
· কুম্ভ - ওম সুখহর্তা নমঃ
· মীন - ওম পার্বতীপুত্রায় নমঃ
রাশি অনুযায়ী কোন ভোগ অর্পণ করতে হবে: প্রত্যেকের ১০৮টি দূর্বা অর্পণ করে তৎসহ ভোগ নিবেদন করা উচিত। রাশি অনুযায়ী যে ভোগ নিবেদন করলে কাঙ্ক্ষিত ফল মিলবে সেগুলো হল –
· মেষ - ডালিম বা শুকনো খেজুর এবং লাল গোলাপ দিয়ে তৈরি লাড্ডু।
· বৃষ – ঘি এবং মিছরির ভোগ।
· মিথুন – মুগ ডালের লাড্ডু।
· কর্কট - চালের পায়েস এবং সাদা গোলাপ।
· সিংহ রাশি- শুকনো খেজুর, গুড় ও চাঁপা ফুল।
· কন্যারাশি - মুগ ডালের লাড্ডু এবং কিশমিশ।
· তুলা - কলা, সাদা ফুল এবং সুগন্ধি।
· বৃশ্চিক - ডালিম বা শুকনো খেজুর এবং লাল গোলাপ দিয়ে তৈরি লাড্ডু।
· ধনু - হলুদ রঙের মিষ্টি এবং কলা।
· মকর - তিলের লাড্ডু।
· কুম্ভ- খোয়া ও সিঁদুরের সঙ্গে জুঁই তেল মেশানো।
· মীন - বেসন লাড্ডু এবং বাদাম।