কানহাইয়া দেখে নিন বাংলা কতটা ‘আজাদ’
Last Updated:
জেএনইউ ছাত্র-সংসদের নেতা কানহাইয়া কুমার জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিপিএম-এর পক্ষ থেকে সীতারাম ইয়েচুরি ঘোষণা করেন, যে কানহাইয়া এরাজ্যে আসছেন বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের হয়ে প্রচারে ৷ সিপিএম মনে করছে, গত কয়েকদিন কানহাইয়া কুমার যা জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তাতে তাদের পার্টি লাভবান হতে পারে ৷ তবে কানহাইয়ার বাংলায় বামফ্রন্টের হয়ে প্রচার করার বিষয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, এতে নির্বাচনে কোনও প্রভাবই পড়বে না ৷ এখন প্রশ্ন কানহাইয়া নিজে যেখানে বলছেন তিনি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কোনও নেতা নন ৷ রাজনীতিতে পা বাড়াচতে চান না ৷ তাহলে তিনি সিপিএম-এর হয়ে হঠাৎ প্রচারেই বা আসবেন কেন ?
জেএনইউ ছাত্র-সংসদের নেতা কানহাইয়া কুমার জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিপিএম-এর পক্ষ থেকে সীতারাম ইয়েচুরি ঘোষণা করেন, যে কানহাইয়া এরাজ্যে আসছেন বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের হয়ে প্রচারে ৷ সিপিএম মনে করছে, গত কয়েকদিন কানহাইয়া কুমার যা জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তাতে তাদের পার্টি লাভবান হতে পারে ৷ তবে কানহাইয়ার বাংলায় বামফ্রন্টের হয়ে প্রচার করার বিষয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, এতে নির্বাচনে কোনও প্রভাবই পড়বে না ৷ এখন প্রশ্ন কানহাইয়া নিজে যেখানে বলছেন তিনি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কোনও নেতা নন ৷ রাজনীতিতে পা বাড়াতে চান না ৷ তাহলে তিনি সিপিএম-এর হয়ে হঠাৎ প্রচারেই বা আসবেন কেন ?
advertisement
অনাহার থেকে আজাদি: পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম রাজত্বে অনাহারে মৃত্যু বা চাষীর আত্মহত্যা করার ঘটনাও কিছু কম নয় ৷ পরিসংখ্যান বলছে শুধুমাত্র ২০০১ সালেই ১২৪৬ কৃষক আত্মহত্যা করেছেন এরাজ্যে ৷ সর্বহারাদের সরকার বা ভূমিহীন, কৃষকবন্ধু সরকার বলে যারা নিজেদের গর্ব করত, সেই বামপন্থীদের আমলেই কৃষক আত্মহত্যার পরিসংখ্যান দেখলে আঁতকে ওঠার মতোই অবস্থা হবে ৷ পশ্চিমবঙ্গ সেইসময় ওই ছয় রাজ্যের মধ্যে পড়ত যেখানে সবচেয়ে বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেছেন ৷ ২০০১ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যেই ৩৫৩৭ কৃষক আত্মহত্যা করেছিলেন ৷ শুধুমাত্র ২০০৭ সালেই সেই সংখ্যা ১১০২ ৷ কিন্তু যে বাম দল দেশের কৃষক বা গরীবদের নিয়ে বড় গলায় কথা বলে, তারা কখনই এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেনি ৷ এই আত্মহত্যা করা চাষীদের মধ্যে অধিংকাংশই ছিলেন টমেটো চাষী ৷ কারণ ফসল চাষ করে নূন্যতম মূল্যও তারা পায়নি ৷ চাষীরা লাভ তো দূরের কথা, এমনও হয়েছে যে ৫০ কেজি টম্যাটো মাত্র ২০ টাকায় বেঁচতে হয়েছে তাদের ৷ তাই এখানে প্রশ্ন উঠছে যে সীতারাম ইয়েচুরি কানহাইয়াকে ‘স্টার’ বানিয়ে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন প্রচারে নিয়ে আসছেন, তিনি কী কানহাইয়াকে বাম আমলের ৩৫ বছরের এই চাষী আত্মহত্যা বা রাজ্যে অনাহারে মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেছেন ? তবে রাজ্যে পরিবর্তনের পর কৃষিক্ষেত্রে অন্তত এই চিত্রটা অনেকটাই বদলেছে ৷ এক দশক আগেও আমলাশোলের মতো অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল এরাজ্যে ৷ বর্তমানে সে ছবি দেখা যায় না ৷ উপরোন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার খাদ্যসাথী প্রকল্পে (২টাকা কেজি দরে চাল) সাড়ে সাত কোটি মানুষকে খাদ্য সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে ৷ ফলে ‘ভুখা মরা’ বিষয়টা পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এখন অবান্তর ৷ এছাড়া রাজ্য সরকার যথেষ্ট কৃষকদরদী ভূমিকা নিয়েছে ৷ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি হলে বিগত তিন বছরে সরকারকে বিভিন্ন সময় কৃষকের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে ৷ পশ্চিমবঙ্গে চাল, সবজি, আলু প্রভৃতি কৃষিপণ্যের উৎপাদণ চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি ৷ যার জন্য চাষীরা অনেকসময় ন্যায্য দাম পান না ৷ ফসল উদ্বৃত্ত হলেও যে সমস্যা, এটা তারই একটা উদাহরণ ৷ এছাড়া চা বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়াটাও অনেক চা বাগান শ্রমিকদের আত্মহত্যার কারণ এরাজ্যে ৷ বাম আমলের শেষের দিকে হর্তালের কারণে বিভিন্ন চা বাগান একের পর এক বন্ধ হয়ে যায় এরাজ্যে ৷ এরপর বন্ধ চা বাগান খুলতে গিয়েও নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বর্তমান সরকারকে ৷ এরফলে বন্ধ চা বাগানগুলিকে আর পুনরায় খোলা সম্ভব হয়নি ৷ কর্মহীন হয়ে পড়া একাধিক শ্রমিকের দারিদ্র এবং অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ৷ তবে তৃণমূল সরকার আসার পরেও যে এরাজ্যে চাষী আত্মহত্যার ঘটনা একেবারে ঘটেনি তা নয় ৷ কারণ ঋণের বোঝা এবং ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়েও চাষীরা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ৷ আলু চাষীদের কথাই এক্ষেত্রে বলতে হবে ৷ কারণ উদ্বৃত্ত আলু ২০১৪-১৫ সালে ১২০ লক্ষ টন উৎপাদণের জন্য আলুর দাম প্রতি কেজি ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা কম পাচ্ছিলেন চাষীরা ৷ যার অর্থ চাষের জন্য নিজেদের খরচটাও তুলতে পারছিলেন না কৃষকরা ৷ এর জন্য প্রায় ১৭ আলু চাষীর মৃত্যু হয় গত বছর ৷ হুগলি জেলায় সবচেয়ে বেশি আলু চাষীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে ৷ মালদা, হাওড়া, বাঁকুড়া এবং জলপাইগুড়ি জেলাগুলোতেও সেই একই ছবি দেখা যায় ৷ সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ২০১৩-১৪ সালে যেখানে ৫০ কেজির এক প্যাকেট আলু বিক্রি করে কৃষকরা পেতেন ৩০০-৩৫০ টাকা ৷ সেখানে ২০১৪-১৫ সালে সেই টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪০-২০০ টাকা ৷
advertisement
টাটা-আম্বানি থেকে আজাদি : যে বামপন্থীরা কানহাইয়ার ‘আজাদি’ স্লোগানকে ধার করে আগামী বিধানসভা ভোটে লড়তে চাইছেন, তাদের জমানাতেই কতটা ‘আজাদি’ ছিল সেটাই প্রশ্নের ৷ কৃষকদের আজাদির আদর্শকে সামনে রেখে কানহাইয়ার লড়াই ৷ কিন্তু এ রাজ্যে ক্ষমতায় থাকাকালীন বামপন্থীরা কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন শিল্প ৷ যার জেরে জন্ম হয় সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসানের পিছনে ছিল এই দুই আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ৷ ২০০৭ সালে টাটার ন্যানো কারখানা তৈরির জন্য সিঙ্গুরের ৯৯৭ একর কৃষিজমি তৎকালীন বাম মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তুলে দেন রতন টাটার হাতে ৷ এর মধ্যে বেশ কিছু জমির মালিকরা ওই জমি দিতে আপত্তি জানান এবং ক্ষতিপূরণের টাকা নিতে অস্বীকার করেন ৷ শুরু হয় সিঙ্গুর আন্দোলন ৷ আন্দোলনের জেরে ন্যানো কারখানা পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুর থেকে সরিয়ে গুজরাটে নিয়ে যায় রতন টাটা ৷ ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এসে সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার আইন প্রণয়ন করেন কিন্তু আইনের ফাঁসে জমি অধিগ্রহণের সেই মামলা সুপ্রিম কোর্টে আজও ঝুলে রয়েছে ৷ কৃষকদের জমি নিয়ে শিল্প স্থাপনের দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ২০০৭ সালে ৷ নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব গড়ার বরাত পেয়েছিলেন সালেম গোষ্ঠী ৷ এই প্রজেক্টের জন্য ১০ হাজার একর সরকার জমি অধিগ্রহণ করতে চাইলে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে সংঘাত বাঁধে পুলিশ বাহিনীর ৷ পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় ১৪ জন গ্রামবাসীর ৷ সরকারের বিরুদ্ধে ধিক্কারে ফেটে পড়ে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ ও বিরোধীরা ৷ নন্দীগ্রাম আন্দোলনের জেরে অসম্পূর্ণ রয়ে যায় কেমিক্যাল হাব প্রজেক্ট ৷ বাম আমলে ট্রেড ইউনিয়নের হরতালের জেরে একের পর এক চা-বাগান এবং জুটমিলের কাজ বন্ধ হয়ে যায় ৷ ট্রেড ইউনিয়নের হরতালে জেরবার হয়ে বাটা কোম্পানি নিজেদের হেডকোয়ার্টার এ রাজ্য থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় ৷ এর মধ্যে হিন্দমোটর, জেসপ,ডানলপ কারখানা তৃণমূল আমলে বন্ধ হয়ে যায় ৷ সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন যে, জেসপ ও ডানলপ কারখানা সরকার অধিগ্রহণ করবে এবং কারখানার কাজ অবিলম্বে শুরু হবে ৷ তৃণমূল আমলে মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গে ডানকান গোষ্ঠীর বন্ধ চা-বাগান সমস্যার এখনও সমাধান করা যায়নি ৷ ১৯৯১ থেকে ২০০৬-এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ৩২,৩৩৮.৯৫ হাজার কোটি টাকা লগ্নিতে ১,৩৯১ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিট স্থাপন করা হয় ৷ যার জন্য ২.০৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয় ৷
advertisement
শোষণ থেকে আজাদি: বাম আমলের ৩৪ বছর পশ্চিমবঙ্গের মহিলারা দেহ ব্যবসায় যেতে বাধ্য হতেন ৷ যার প্রধান কারণই ছিল দারিদ্রতা ৷ তাহলে এই দারিদ্রতার জন্য দায়ী কে ? ২০১১-র পরিসংখ্যানই বলছে এরাজ্যে স্বাক্ষরতার হার উত্তরপ্রদেশ-বিহারের নীচে ছিল ৷ বাংলায় বর্তমানে ৭১.১৬ শতাংশ মহিলা স্বাক্ষর ৷ মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে উত্তরপ্রদেশের পর দ্বিতীয় নম্বরেই ৷ ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড বিউরো (NCRB)-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধুমাত্র ২০১৪ সালেই বাংলায় ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে ৯৩৩৫টি ৷ যার মধ্যে ১৬৫৬টি হল ধর্ষণের মামলা ৷ বাম আমলে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা শুনলে আঁতকে ওঠার মতোই ৷ স্টেট ক্রাইম রেকর্ড বিউরোর হিসাব অনুযায়ী ২০০৭ সালে এরাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল ১৭৫৪৬টি ৷ সেই সংখ্যা পরের বছর ২০০৮-এ বেড়ে হয় ২২, ৬৭৪ ৷ NCRB-র হিসাবে ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের উপর হিংসার ঘটনা ২৯,১৩৩টি ৷ ২০১৩-এ সেটা বেড়ে হয় ৩০, ৯৪২ ৷ যার মধ্যে শুধু কলকাতাতেই ২৩৯৯ ৷ ২০১২ সালে কলকাতায় মহিলাদের উপর হিংসার ঘটনা ঘটেছিল ২০৭৩টি ৷
advertisement
সামন্ততন্ত্র থেকে ‘আজাদি’ : ১৯৭৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর পঞ্চায়েতীরাজ ও ভূমিসংস্কারের উপর জোর দেয় তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার ৷ মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী জমিদার ও সরকার অধিগৃহীত জমি ১০ লাখ ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিলিয়ে দেন ৷ এই পাট্টা বিলির পর বর্গাদারদের হাত থেকে জমির মালিকানা গিয়ে পৌঁছায় ভূমিকৃষক ও ক্ষেতমজুরদের হাতে ৷ বলা হয়, এর ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে সমতা আসে এবং সাময়িকভাবে কৃষকদের অবস্থার উন্নতি ঘটে ৷ কিন্তু পরবর্তীকালে বামফ্রন্টের দলতন্ত্র নীতির কারণে সেই পুঁজির কোনও বিকাশ হয়নি ৷ দীর্ঘ সময় ধরে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা জ্যোতি বসু কোনও বিকল্প বিজনেস মডেলের খোঁজ না দিতে পারায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন কোনও পুঁজির লগ্নি হয়নি ৷ দলতন্ত্রের ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে তীব্র অসামঞ্জস্য তৈরি হয় ৷ এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর, পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাওবাদীর মতো বেশ কিছু রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির জন্ম হয় ৷ যারা নিজেদের অঞ্চলে সমান্তরাল প্রশাসনিক ব্যবস্থা তৈরি করে ৷ যে ব্যবস্থার মূলই ছিল ‘অস্ত্র যার, মুলুক তাঁর’ ৷ অন্যদিকে, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রবিরোধী এই দলগুলিকে দমন করে এবং সমান্তরাল প্রশাসনিক ব্যবস্থাগুলিকে ভেঙে ওই অঞ্চলগুলিকে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগী হয় ৷ এই সমস্ত সমস্যা সত্ত্বেও কৃষির ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি করেছে রাজ্য ৷ গত দু’দশকে রাজ্যের ফসল উৎপাদন ক্ষমতা ১৩১ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬২ শতাংশ ৷ তৈলবীজ উৎপাদনে গত এক দশকে পশ্চিমবঙ্গ উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে ৷আগের দশকে প্রতি বছর ০.২৪ লক্ষ টন চৈলবীজ উৎপাদিত হত ৷ এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.৫৫ লক্ষ টনে ৷ গোটা দেশের মধ্যে ধান উৎপাদনে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ ৷ সারা দেশের মোট ধান উৎপাদনের ৩ শতাংশ চাষ হয় পশ্চিমবঙ্গে ৷ খাদ্যশস্য উৎপাদনেও পশ্চিমবঙ্গের স্থান প্রথম সারিতে ৷ দেশের ৬০ শতাংশ পাট চাষ হয় এই রাজ্যেই ৷
advertisement
জাতিবাদ থেকে আজাদি: সেনসাস রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের পর পশ্চিমবঙ্গেই সর্বাধিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বাস ৷ পশ্চিমবঙ্গে বসবসকারী তপশিলী জাতি ও তপশিলী উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত বাসিন্দাদের সংখ্যা ২১৪ লক্ষ ৷ উত্তরপ্রদেশে থাকেন ৪১৩ লাখ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ৷ ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে ২০১২ সালে ৮৫ টি জাতিভিত্তিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে ৷ ১৯৭৭-২০১১ সালের মধ্যে সেভাবে দেখতে গেলে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা প্রায় নেই ৷ এমনকী, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে গোটা দেশে যখন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উত্তপ্ত তখনও পশ্চিমবঙ্গ শান্তি বজায় সক্ষম হয়েছিল ৷ এরাজ্যে বামফ্রন্টরা বরাবরই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং মুসলিমদের দাবীকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন ৷ তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর বামফ্রন্টের পদক্ষেপ অনুসরণ করেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নানা সুবিধা দিয়ে এসেছেন ৷ তবে এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মাঝেই কামতাপুরি, গোর্খাদের মতো কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করেন ৷ তৃণমূল জমানায়, শেষ ৫ বছরে ক্যানিং ও কালিয়াচক ছাড়া আর কোনও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটেনি ৷