

গতকালই জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp)-এর নয়া প্রাইভেসি পলিসি পরিবর্তনের আবেদন জানিয়ে ও একাধিক প্রশ্ন নিয়ে সংস্থার কর্ণধারকে চিঠি পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। এবার সেই চিঠির জবাব দিল হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। তারা জানাল, প্রাইভেসি পলিসিতে যে পরিবর্তনের প্রস্তাব তারা করেছিল অর্থাৎ ফেসবুক (Facebook)-এর সঙ্গে তথ্য শেয়ার করা, সেই প্রস্তাব নিয়ে আর এগোনো হচ্ছে না। এবং এই নিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে, উত্তর দিতে তারা তৈরি।


কিছু দিন আগে জানা যায়, প্রাইভেসি পলিসিতে পরিবর্তন করতে চলেছে হোয়াটসঅ্যাপ। তাদের তরফে জানানো হয়, আগামীদিনে অ্যাপটির আপডেটেড ভার্সন ব্যবহার করতে গেলে প্রত্যেককে 'agree and accept' অপশনে ক্লিক করতে হবে। এই agree অপশনের লিস্টেই প্রাইভেসি সংক্রান্ত পরিবর্তিত তথ্য দেওয়া থাকবে। এই অপশনটির অ্যাক্সেপ্ট বোতামে ক্লিক না করলে অ্যাপটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাবে। এবং এই আপডেটেড ভার্সন ব্যবহার করলে ব্যবহারকারীর তথ্য সংস্থার অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে শেয়ার করা হতে পারে, বিশেষ করে এই সংস্থারই অন্য প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের সঙ্গে। বিষয়টি জানার পর থেকেই হইচই পড়ে যায় সব মহলে। বহু মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার করা বন্ধ করে দেয়।


জানা যায়, এই প্রাইভেসি সংক্রান্ত বিষয়টির উপরে শুরু থেকেই নজর রেখেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল সরাসরি বিষয়টি নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠায় তারা। সেখানে আবেদন করা হয়, ভারতীয় ব্যবহারকারীদের তথ্য গোপনীয়তাকে সম্মান জানিয়ে তাদের তথ্য যেন সুরক্ষিত রাখা হয়।


দেশের মানুষের তথ্য সুরক্ষার স্বার্থে সরকারের তরফে চিঠিটি পাঠানোর পাশাপাশি বেশ কিছু তথ্য চেয়ে একটি প্রশ্নমালাও পাঠানো হয়। সেখানে সংস্থার ডেটা শেয়ারিং প্রোটোকল ও বিজনেস প্র্যাক্টিস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি ভারতীয়দের কী ধরনের তথ্য সংস্থা কোন কাজে কোন পরিষেবার জন্য কার সঙ্গে শেয়ার করছে, তাও জানতে চায় কেন্দ্র।


যার উত্তরে আজ হোয়াটসঅ্যাপের মুখপাত্র জানিয়েছেন, আমরা আবারও বলতে চাই যে আপডেট হতে চলেছে, তাতে আমরা ফেসবুকের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করতে পারব না। আমাদের লক্ষ্য স্বচ্ছতা বজায় রাখা ও নতুন নতুন অপশন নিয়ে আসা যাতে ব্যবসার ক্ষেত্রে মানুষ সাহায্য় পায়।


মুখপাত্র উত্তরে আরও জানান, হোয়াটসঅ্যাপ সকলের মেসেজ সুরক্ষিত রাখবে ও এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন বজায় থাকবে। ফলে না হোয়াটসঅ্যাপ না ফেসবুক, কেউই এই মেসেজ দেখতে পাবে না। সকলের কাছে যে ভুল তথ্য গিয়েছে, তার উপরে আমরা কাজ করছি। এবং এই নিয়ে যে কোনও ধরনের উত্তর দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত।


প্রসঙ্গত, হোয়াটসঅ্যাপের তরফে কিছু দিন আগে জানানো হয় ব্যবহারকারীর তথ্য তাদের অধীনস্থ যেকোনও সংস্থা এমনকি ফেসবুক (Facebook)-এও শেয়ার হতে পারে। এর পাশাপাশি সব সময়ে ব্যবহারকারীর লোকেশন ডেটাও ট্র্যাক করতে পারবে অ্যাপটি। তার পরই ঘটে বিপত্তি। এই অতি জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ ছেড়ে বের হতে শুরু করে মানুষজন। এমনকি বর্তমানে ভারতের মতো দেশে মাত্র ১৮ শতাংশ মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার করতে রাজি।


এই পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের তথ্য সুরক্ষার স্বার্থে সরকারের তরফে গতকাল হোয়াটসঅ্যাপের কর্ণধার ক্যাথকার্টকে একটি চিঠিটি পাঠানো হয়। পাশাপাশি বেশ কিছু তথ্য চেয়ে একটি প্রশ্নমালাও পাঠানো হয়। খবর মোতাবেকে, এটা শুধু ভারতের সঙ্গেই হচ্ছে কি না তাও জানতে চাওয়া হয়। সরকারের তরফে বলা হয়, ভারতীয়দের ক্ষেত্রে সিকিওরিটি পলিসি, ইনফরমেশন সিকিওরিটি পলিসি, সাইবার-সিকিওরিটি পলিসি, প্রাইভেসি পলিসি ও এনক্রিপশন পলিসিতে সংস্থার পলিসি ও বাকি দেশের ক্ষেত্রে তাদের পলিসিতে কতটা পার্থক্য রয়েছে, তা স্পষ্ট করতে হবে।