বাঁশবাগানে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র! খোলা আকাশের নীচে পড়াশোনা-রান্না, পাশেই ঘুরে বেড়ায় মুরগি-ছাগল
- Published by:Sneha Paul
- hyperlocal
- Reported by:Bonoarilal Chowdhury
Last Updated:
Anganwadi Centre: বাঁশবাগানের পাশেই খোলা জায়গায় প্রসূতি মা ও শিশুদের জন্য রান্না হয়। বৃষ্টি এলে পাঠদান একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়
<strong>পূর্ব বর্ধমান, বনোয়ারীলাল চৌধুরীঃ</strong> শৈশবের প্রথম পাঠ হওয়ার কথা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। সেখানে শিশুদের অ, আ, ক, খ শেখানোর কথা। অথচ বাস্তব চিত্র একেবারেই অন্যরকম। পূর্বস্থলীর কালেখাঁতলার রায়পাড়ার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চলছে খোলা আকাশের নীচেই পাঠদান। চার বছর ধরে শিশুদের শিক্ষা থেকে শুরু করে রান্নাবান্না সবই হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে। ফলে বর্ষার দিনে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কাজ ও শিশুদের পড়াশোনা কার্যত থমকে যায়।
advertisement
কালেখাঁতলা-১ পঞ্চায়েতের প্রধান পঙ্কজ দে জানান, এলাকায় অধিকাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেরই নিজস্ব ভবন নেই। কোথাও ক্লাবে, কোথাও আবার ভাড়া ঘরে চলছে কেন্দ্র। রায়পাড়ার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিরও একসময় চালাঘর ছিল। কিন্তু সেটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে, যাতে দ্রুত কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন তৈরি হয়। (ছবি ও তথ্যঃ বনোয়ারীলাল চৌধুরী)
advertisement
স্থানীয় সূত্রে খবর, পূর্বস্থলী-২ ব্লকের কালেখাঁতলা-১ পঞ্চায়েতের রায়পাড়ার ২০৭ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কোনও ভবন নেই। বাঁশবাগানের পাশেই খোলা জায়গায় প্রসূতি মা ও শিশুদের জন্য রান্না হয়। বৃষ্টি এলে পাঠদান একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। তবে খাবার পরিবেশন কোনওভাবে চলতে থাকে। কিন্তু সেই রান্না হয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। পাশে ছাগল, মুরগি ঘুরে বেড়ায়। অনেকের মনে হয় যেন পিকনিক চলছে, অথচ বাস্তবে চলছে শিশুদের শিক্ষা ও পুষ্টির লড়াই। (ছবি ও তথ্যঃ বনোয়ারীলাল চৌধুরী)
advertisement
স্থানীয় বাসিন্দা আলো রায় ও ফুলকুমারি রায় জানান, 'আমাদের উপায় নেই। খোলা আকাশের নীচে রান্নাবান্না হয়। সেই খাবারই আমাদের শিশুদের খেতে দিতে হয়। কিন্তু বৃষ্টি হলে খুব সমস্যায় পড়তে হয়'। অভিভাবকদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, যেখানে শিশুদের পুষ্টির জন্য রান্না হচ্ছে, সেই জায়গা যদি সুরক্ষিত না হয়, তাহলে কীভাবে চলবে? (ছবি ও তথ্যঃ বনোয়ারীলাল চৌধুরী)
advertisement
অভিভাবকরা আরও প্রশ্ন তুলেছেন, পড়াশোনা যদি শেষ পর্যন্ত বাড়িতেই করাতে হয়, তাহলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কী প্রয়োজন? তাঁরা দাবি তুলেছেন, অবিলম্বে প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাথায় যেন পাকা ছাদ গড়ে ওঠে। তবেই শিশুরা নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষা ও পুষ্টি পাবে। রায়পাড়ার ২০৭ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী অনিতা মুর্মু জানিয়েছেন, প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে শিগগিরই সেখানে একটি স্থায়ী ভবন তৈরি হবে। (ছবি ও তথ্যঃ বনোয়ারীলাল চৌধুরী)
advertisement
এই সমস্যা শুধু পূর্বস্থলী পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। কাটোয়াতেও একই ছবি। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, কাটোয়া-১ ব্লকে ২৮৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। এর মধ্যে মাত্র ৬৭টির নিজস্ব ভবন রয়েছে। বাকি ২২১টি কেন্দ্র কারও বাড়ির উঠোনে, কারও গোয়ালঘরে চলছে। মূল সমস্যা হচ্ছে জমি। জমি না থাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য স্থায়ী ভবন গড়ে ওঠেনি। অথচ এখানে প্রতিদিন অসংখ্য শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা ও পুষ্টির দায়িত্ব সামলাতে হয়। (ছবি ও তথ্যঃ বনোয়ারীলাল চৌধুরী)